গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি, পরিবহন, মজুদ ও ব্যবহারে সচেতনতার অভাব
- মামুন আল করিম
- ১২ মার্চ ২০১৯, ০০:০০
সম্প্রতিক বেশ কয়েকটি অগ্নিকাণ্ডের পেছনে গ্যাস সিলিন্ডারের দায় রয়েছে বলে অভিযোগ উঠলেও অনেক আলোচনা-সমালোচনা হলেও গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি, পরিবহন, মজুদ ও ব্যবহারে সচেতনতার অভাব ও বিধিমালার তোয়াক্কা না করার অভিযোগ রয়েছে। ব্যবসায়ী থেকে ব্যবহারকারীদের বেশির ভাগই জানে না সিলিন্ডার ব্যবহারের নিয়ম ও সংরক্ষণের উপায়। গতকাল রাজধানী ঘুরে দেখা গেছে, গ্যাস সিলিন্ডার প্রস্তুতকারক কোম্পানির মূল ডিলাররা সরকারি বিধি মেনে মজুদ, পরিবহন ও সরবরাহ করলেও খুচরা ব্যবসায়ীদের অনেকেই এসব বিষয় মানছেন না।
ঢাকার বেশির ভাগ এলাকায় সিলিন্ডার বিক্রির দোকানগুলো গড়ে উঠেছে আবাসিক ভবনের নিচে। আবাসিক ভবনের নিচেই তারা গ্যাস সিলিন্ডার মজুদ করছেন। এ ছাড়া, ফুটপাথ ও রাস্তার ওপরেও দোকানিরা গ্যাস সিলিন্ডার সাজিয়ে রাখছেন। বিভিন্ন খাবারের হোটেল ও চায়ের দোকানে দেখা যায়, চুলার একেবারে কাছাকাছি রেখে গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার করা হচ্ছে। কেউ কেউ গ্যাস সিলিন্ডার মাটিতে শুইয়ে রেখে ঝুঁকিপূর্ণভাবে ব্যবহার করছেন। যদিও এলপিজি সিলিন্ডার ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে বলা আছেÑ এলপিজি সিলিন্ডার খাড়াভাবে রেখে ব্যবহার করুন। কখনো উপুর বা কাত করে ব্যবহার করবেন না। গ্যাস সিলিন্ডার বিধিমালা ১৯৯১ তে বলা হয়েছে ‘গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রয়ের জন্য কমপক্ষে পাকা ফ্লোরসহ আধাপাকা ঘরসহ ফায়ার সার্ভিসের অগ্নিনির্বাপণ সক্ষমতা সংক্রান্ত লাইসেন্স ও ছাড়পত্রসহ অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র এক্সস্টিংগুইশারসহ মজবুত এবং ঝুঁকিমুক্ত সংরক্ষণাগার থাকতে হবে।
সিলিন্ডার আমদানির বিষয়ে বিধিতে আছে লাইসেন্স ছাড়া সিলিন্ডার আমদানি নিষিদ্ধ। কোনো ব্যক্তি বিনা লাইসেন্সে গ্যাসপূর্ণ বা খালি সিলিন্ডার আমদানি করতে পারবেন না।
সিলিন্ডার পরিবহনের বিষয়ে বিধিমালার চতুর্থ পরিচ্ছেদে বলা আছেÑ গ্যাসপূর্ণ সিলিন্ডার কোনো দ্বিচক্রযানে পরিবহন করা যাবে না। কোনো যানে সিলিন্ডার পরিবহনের ক্ষেত্রে সিলিন্ডারের কোনো অংশ ওই যানের বাইরে থাকা চলবে না। সিলিন্ডারে গ্যাস ভর্তি ও গ্যাসপূর্ণ সিলিন্ডার মজুদ রাখার বিষয়ে বলা আছে, লাইসেন্স ব্যতীত সিলিন্ডারে গ্যাস ভর্তি ও সংরক্ষণ নিষিদ্ধ।
ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) আলী আহম্মদ খান বলেন, ‘গ্যাস সিলিন্ডার একটা আতঙ্কের বিষয়। বর্তমানে এর চাহিদা অনেক এবং ভোক্তা পর্যায়ে অনেক বেশি মাত্রায় তা পৌঁছে গেছে। কিন্তু সিলিন্ডারের যথাযথ ব্যবহার ও দেখভাল করা হয় না। আমাদের দেশে নিম্নমানের সিলিন্ডার ব্যবহার করা হচ্ছে। সেই সাথে সিলিন্ডারের রেগুলেটরগুলো নিম্নমানের। ফ্যাক্টরি লেভেলে সিলিন্ডার পরিদর্শন করা হলেও সেকেন্ডারি লেভেলে পরিদর্শন করা হয় না। অনেক সময় সিলিন্ডারের লিকেজ থেকে আগুন লেগে বড় দুর্ঘটনা ঘটে যায়।