২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

পুরান ঢাকাতেই থাকছে প্লাস্টিক কারখানা

-

এক বালতি করে পানি ও বালু এবং অগ্নিনির্বাপণে ব্যবহৃত গ্যাস সিলিন্ডার রাখা শর্তে পুরান ঢাকাতেই প্লাস্টিকসামগ্রী তৈরির কারখানা ও গুদাম রাখার সিদ্ধান্ত দিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। গত রোববার বিকেলে পুরান ঢাকার চকবাজার ‘বাংলাদেশ প্লাস্টিক ব্যবসায়ী সমিতি’র সাথে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময় সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। পুরান ঢাকায় প্লাস্টিক কারখানা, কেমিক্যাল গুদাম ও দাহ্য পদার্থের গুদাম নিয়ে করণীয় ঠিক করতে ব্যবসায়ীরা এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করেন।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসএসসি) মেয়র সাঈদ হোসেন খোকন মতবিনিময় সভায় বলেন, এই শহরে পড়ে থাকা প্লাস্টিক বস্তু আপনারা সংগ্রহ করে রিসাইক্লিং করে তা দিয়ে বিভিন্ন সামগ্রী প্রস্তুত করেন। তা না হলে এসব প্লাস্টিক বস্তু স্যুয়ারেজ লাইনে জমে আমার স্যুয়ারেজ লাইন বন্ধ হয়ে যেত। আপনাদের এই কাজটি পরিবেশের জন্য ভালো। এ ছাড়া দেশের অর্থনীতিতে আপনাদের ভূমিকা রয়েছে। আমি সবই জানি। আপনাদের অনেকেরই অল্প পুঁজির ব্যবসা। এই আয় দিয়ে আপনাদের পরিবার পরিচালিত হয়। তবে আমাদের জানমালের নিরাপত্তার কথা ভাবতে হবে, ব্যবসায়ীদের কথাও ভাবতে হবে।
মুক্ত আলোচনায় প্লাস্টিক ব্যবসায়ীরা দাবি করেন, প্লাস্টিক কারখানার জন্য প্লাস্টিক পল্লী, একটি গ্রহণযোগ্য নীতিমালা, সব কারখানা মালিক, শ্রমিকদের জন্য ফায়ার ফাইটিং প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা, প্লাস্টিক কারখানা স্থানান্তর করতে হলে ধীরে ধীরে করতে হবে।
এ সময় একাধিক ব্যবসায়ী মত দেন, তারা প্রত্যেক কারখানা, গোডাউন ও দোকানে এক বালতি পানি, এক বালতি বালু রাখলে নিজেরাই আগুন নেভাতে পারবেন। কারণ পুরান ঢাকায় প্রায় ৩৫ হাজার দোকান, কারখানা রয়েছে। এ সময় তারা অগ্নিনির্বাপণের জন্য কার্বন-ডাই-অক্সাইড ভর্তি গ্যাস সিলিন্ডার রাখার কথাও বলেন।
বাংলাদেশ প্লাস্টিক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো: জসীম উদ্দিন বলেন, ‘প্লাস্টিক কারখানার ব্যবসায়ীদেরও বাঁচাতে হবে, এলাকার মানুষকেও বাঁচাতে হবে। একটা সুষ্ঠু সমাধান করতে হবে।’
মেয়র সাঈদ খোকন মতবিনিময়ে গৃহীত সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে বলেন, ‘পুরান ঢাকায় থাকা অতিদাহ্য পদার্থের গোডাউনের বিরুদ্ধে টাস্কফোর্স কাজ করবে। প্লাস্টিক কারখানা দোকানে বালু, পানি রাখতে হবে। যেসব প্লাস্টিক কারখানার বিদ্যুৎ, পানি ও গ্যাসের লাইন বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে সেগুলোর সংযোগ দিতে বলা হয়েছে। মেয়র সাঈদ খোকন আরো বলেন, বিস্ফোরক পরিদফতর পরীক্ষা করে দেখেছে প্লাস্টিক, প্লাস্টিকের দানা অতিদাহ্য নয়, খুব বিপজ্জনক নয়। তাই প্লাস্টিক কারখানা চলতে পারে। এসব কারখানা চলবে।
চুড়িহাট্টাতে অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের পরিবারকে ৫০ হাজার করে টাকা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। পুরান ঢাকার সব ব্যবসায়ী মিলে এজন্য একটি তহবিল গঠন করেছেন। শিগগিরই এই তহবিল থেকে নিহতদের পরিবারের কাছে অর্থ তুলে দেয়া হবে বলেও জানান মেয়র সাঈদ খোকন। পুরান ঢাকায় যেসব গোডাউন ও প্লাস্টিক কারখানার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছিল, সেগুলো আবার চালু হয়েছে।

 


আরো সংবাদ



premium cement