বসন্তের বৃষ্টিতে অচল ঢাকা!
- ০৫ মার্চ ২০১৯, ০০:০০
শুরু হয়েছে বসন্ত। এখনো বিদায় বার্তা দেয়নি শীত। এরই মাঝে হঠাৎ মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হয়েছে রাজধানী ঢাকায়। হঠাৎ বৃষ্টির কারণে ভোগান্তিতে পড়েন নগরবাসী। অবাক করার বিষয় হলোÑ শুকনো মওসুমে ধুলায় আচ্ছন্ন থাকে রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক, আর বৃষ্টিতে তৈরি হয় থিকথিকে কাদা। ঢাকা শহরে বর্ষাকালটা মানুষের জন্য যতটা না আশীর্বাদ, তার চেয়ে বেশি অভিশাপ। এক-দুই ঘণ্টার বৃষ্টিতে তলিয়ে যায় রাস্তাঘাট, তৈরি হয় যানজট, ঘটে দুর্ঘটনা। যদিও বর্ষা শুরুর আগেই এবার ভোগান্তিতে পড়ছেন নগরবাসী।
গত মঙ্গলবারের বৃষ্টির পর রাজধানীর ধলপুর, কাজলারপাড়, যাত্রাবাড়ী, পোস্তগোলা ও দনিয়ার সড়কগুলোর অবস্থা ছিল শোচনীয়। সকালের বৃষ্টিতে ধলপুরের সুতিখালপাড়, খালেকুজ্জামান সড়ক, নারকেলবাগান সড়কসহ মিষ্টির গলি কাদাপানিতে একাকার হয়ে যায়। কাজলার পাড় এলাকায় সব সড়কেই ছিল কাদায় ভরা। বিকেল-সন্ধ্যায় আরেক দফা ঝুম বৃষ্টিতে বেশির ভাগ সড়কই পানিতে ডুবে যায়।
সরেজমিন দেখা যায়, কাদাপানির কারণে বিপাকে পড়েন পথচারীরা। পোস্তগোলা সড়কের অবস্থা ছিল নাজুক। কাদা জমে যাওয়ায় সড়কের এক পাশ থেকে অন্য পাশে যেতে পারছিলেন না পথচারীরা। যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তা থেকে ডেমরার দিকের সড়কের দশাও ছিল একই। ডেমরাগামী একজন বলেন, কাদাপানির কারণে কাছের যাত্রীরাও হেঁটে যেতে পারছে না। তাই পথচারীদের বাধ্য হয়ে রিকশা, লেগুনা কিংবা বাসে উঠতে হচ্ছে।
কাজলারপাড়ের একজন বাসিন্দা বলেন, শীতের সময় ধুলার কারণে মুখে মাস্ক পরে নাক চেপে হাঁটতাম। আর এখন কাদাপানি থেকে বাঁচার জন্য পা টিপে টিপে হাঁটতে হচ্ছে। কারণ, একটু বেখেয়াল হয়ে জোরে হাঁটলেই প্যান্টে কাদা লেগে যায়।
ধলপুরের বাসিন্দা মুজিবুল হক বলেন, বৃষ্টির কারণে রাস্তাজুড়ে জায়গায় জায়গায় পানি জমে থাকে। আর কাদার যন্ত্রণা তো আছেই। এখনই এ অবস্থা, সামনের বর্ষা মওসুমে কী হবে আল্লাহই জানেন। কাদাপানির কারণে সড়কজুড়ে রিকশার আধিপত্য ছিল বেশ। সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী এলাকায় যাত্রীসহ রিকশার চাপ বেশি দেখা যায়।
অসময়ের বৃষ্টিতে ঢাকার যানজট আরো ভয়াবহ রূপ নিয়েছিল গত বুধবার। মাত্র ৩৩ মিলিমিটার বৃষ্টিতেই যানজটসহ নানা ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে নগরবাসীকে। মেট্রোরেলের কাজ চলায় দুর্ভোগ বেড়েছে বলে জানিয়েছেন ট্রাফিক পুলিশ। বৃষ্টি ও মেট্রোরেলের নির্মাণকাজের কারণে পল্লবী, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, বিজয় সরণি, ফার্মগেট, কাওরান বাজার, বাংলামোটর, শাহবাগ, প্রেস ক্লাব ও পল্টন এলাকায় তীব্র যানজট দেখা দেয়। নিউমার্কেট, পান্থপথ, সাতমসজিদ রোড, মোহাম্মদপুর ও মিরপুর রোডেও যানজট তীব্র ছিল। অনেককে বৃষ্টিতে ভিজে হেঁটেই গন্তব্যে পৌঁছাতে দেখা যায়।
সকাল থেকেই বৃষ্টিপাত শুরু হয়। অফিস সময় শুরু হতেই সড়কে তীব্র যানজট দেখা দেয়। বিকেল থেকে ঝড়ো বাতাস ও বৃষ্টিতে নগরবাসীর দুর্ভোগের মাত্রা আরো বাড়ে। বাংলামোটর মোড়ে দায়িত্বরত এক ট্রাফিক সার্জেন্ট জানান, মেট্রোরেলের কাজ চলায় সড়কের প্রশস্ততা এমনিতেই অর্ধেকে নেমে এসেছে। তার ওপর চলছে ওয়াসা, ডেসা, বিদ্যুৎ বিভাগ, সিটি করপোরেশনসহ বিভিন্ন সংস্থার খোঁড়াখুঁড়ি। এর ফলে রাস্তায় ছিল তীব্র যানজট।