নতুনরূপে গুলিস্তান পার্ক
- আহমেদ ইফতেখার
- ২৯ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০
ঢেলে সাজানো হচ্ছে গুলিস্তানে বঙ্গভবনের পশ্চিমে অবস্থিত রাজধানীর গুলিস্তান পার্ক। পার্কটির সংস্কারে খরচ হবে আট কোটি টাকা। ইতোমধ্যে সংস্কারের ৬০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। সুপারিশের ভিত্তিতে পার্কে দেয়াল থাকছে না। হাঁটার পথ, বসার জায়গা, শৌচাগার তৈরি হবে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) সূত্র এ কথা জানিয়েছে, এই পার্কেও সংস্কারকাজে সম্পৃক্ত করা হয়েছে এলাকাবাসী, স্থানীয় ব্যবসায়ী ও জনপ্রতিনিধিদের।
গতকাল দেখা যায়, পার্কের ভেতরের পুকুরটির চারদিক বাঁধাইয়ের কাজ চলছে। বিভিন্ন দিকে ঘাটলা তৈরি হচ্ছে। আগে যে হাঁটার পথ ছিল, সেগুলো ভেঙে নতুন করে মাটি খোঁড়া হচ্ছে। কোথাও কোথাও ইটবালু ফেলা হয়েছে। ব্যায়ামাগার নির্মাণের কাজ প্রায় শেষ।
জানা গেছে, পার্কের ভেতরে ব্যাংকের বুথ থাকবে। আগে সারা বছর পুকুরে পানি থাকত না। এখন যাতে সারা বছর পুকুরে পানি থাকে, সে ব্যবস্থা করা হবে। লাগানো হবে নতুন গাছ। হাঁটার পথ আগের চেয়ে অনেক চওড়া করা হবে, যাতে অনেকে একসাথে হাঁটতে পারে। দেয়ালবিহীন পার্কের সৌন্দর্য বাইরে থেকেও উপভোগ করা যাবে।
গুলিস্তান পার্কের আয়তন ছিল ৩৭ দশমিক ৯ বিঘা। এখন আছে ২৯ বিঘার মতো। যানবাহন ও পথচারীদের চলাচলের সুবিধার কথা বলে ১৯৯৫-৯৬ সালে পার্কের অনেক গাছ কেটে দু’টি সংযোগ সড়ক তৈরি করা হয়। বর্তমানে বেশির ভাগ সময় এই সড়কে বাস দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। রোববার দুপুরেও সেখানে ইলিশ পরিবহনসহ একাধিক পরিবহনের অনেক বাস দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। এসব বাসের কারণে এলাকায় নিয়মিত যানজট লেগে থাকে।
১৯৯৭ সালে পার্কের প্রায় সাড়ে পাঁচ ফুট জায়গা নিয়ে পাঁচ কোটি ৩৫ লাখ টাকায় ‘মহানগর নাট্যমঞ্চ’ নির্মাণ করা হয়। ২০০১ সালে একটি নাট্য উৎসবের আয়োজন করা হলেও এই মঞ্চে বেশির ভাগ সময়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের অনুষ্ঠানই শুধু হয়। রোববারও সরকারি দলের একটি অঙ্গ সংগঠনের অনুষ্ঠান হতে দেখা যায়। নাট্যমঞ্চের পেছনে পার্কের জায়গায় বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রণ কক্ষ নির্মাণ করা হয়।
পার্ক সংস্কার প্রকল্পের সাথে জড়িত ডিএসসিসি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, শুরু থেকেই পার্কটি সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। তবে ভবঘুরেদের আড্ডা, মাদকাসক্তদের আসর বা যেকোনো অসামাজিক কাজ এখানে যাতে চলতে না পারে, সে ব্যবস্থাও নেয়া হবে।
স্থপতি ও নগরবিশেষজ্ঞ মোবাশ্বের হোসেন বলেন, যখনই কোনো উদ্যান বা পার্ক দেয়াল দিয়ে ঘেরাও দিয়ে রাখা হয়, ভেতরে নানা রকম অপরাধ দানা বাঁধে। যখনই উন্মুক্ত করে দেয়া হয়, তখন সবকিছু নজরদারিতে থাকে। রাজধানীর বিভিন্ন পার্কের মতো এই পার্কটিকেও সেভাবে সংস্কার করার সুপারিশ করেছেন তারা। নগর বিশেষজ্ঞদের সুপারিশের ভিত্তিতে গুলিস্তান পার্কে দেয়াল রাখা হচ্ছে না।