শুরুতেই জমজমাট বাণিজ্যমেলা
- মাহমুদুল হাসান
- ১৫ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০
প্রতি বছর ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা শুরু হয় নতুন বছরের প্রথম দিনে। এবার জাতীয় নির্বাচনের কারণে মেলা শুরু হয় ৯ জানুয়ারি। প্রতি বছরের মতো মাসব্যাপী এ মেলা নগরবাসীর জীবনে নিয়ে এসেছে ভিন্ন মাত্রা। বিনোদনের পাশাপাশি নানা পণ্যের পরিচিতি ও কেনাকাটার সুযোগ পাচ্ছেন ক্রেতা-দর্শনার্থীরা। গত শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনে মেলায় দর্শনার্থীদের ব্যাপক ভিড় দেখা যায়।
সকাল থেকেই মেলায় আসতে শুরু করেন দর্শনার্থীরা। বেলা বাড়ার সাথে ভিড়ও বাড়তে থাকে। বিকেল থেকেই মেলার মাঠে ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড় দেখা যায়। মেলায় আসা দর্শনার্থীদের অনেকেই জানান, মেলার শেষ দিকের ভিড় এড়াতে শুরুতেই এসেছেন। আবার অনেকে কয়েকবার আসার পরিকল্পনা করেছেন।
গত শুক্র ও শনিবার মেলা প্রাঙ্গণে দেখা যায়, স্টল ও প্যাভিলিয়নে ছুটছেন ক্রেতা ও দর্শনার্থীরা। নিজেদের পছন্দের পণ্য কিনছেন নানা বয়সী মানুষ। দেশ-বিদেশের নানা পণ্যের সমাহার আর ‘অফারে’র মধ্য থেকে নিজেদের পছন্দের পণ্যটি কিনতে ব্যস্ত ছিলেন তারা। দেশী কোম্পানির বেশির ভাগ ব্র্যান্ডের পণ্যের স্টল ও প্যাভিলিয়ন থাকায় বেশ যাচাই-বাছাই করে খোলা পরিবেশে পণ্য কিনেছেন। ছুটির দিন হওয়ায় বেশির ভাগ মানুষকেই মেলায় আসতে দেখা গেছে পরিবার-পরিজন নিয়ে। মাসব্যাপী এ মেলার শুরুতেই ক্রেতা-দর্শনার্থীর উপস্থিতিতে সন্তোষ প্রকাশ করে মেলায় অংশ নেয়া প্রতিষ্ঠানগুলো।
এবার মেলার শুরুতেই কেনাকাটা বেশ জমে উঠেছে। মেলার গেটে কিছু সময় লক্ষ করলে এর বাস্তব চিত্র দেখা যায়। মেলার গেট দিয়ে বের হওয়া বেশির ভাগ মানুষ পণ্য কিনে ব্যাগ ভর্তি করে ফিরছেন। আগেভাগে পছন্দের পণ্য কিনে নিচ্ছেন তারা। রাজধানীর বেশির ভাগ কর্মজীবী মানুষ ব্যস্ততার কারণে সপ্তাহের অন্য দিনগুলোয় মেলায় যেতে পারেন না। মেলা শুরু হওয়ার পর পরই ছুটির দিনে হাজির হয়েছেন হাজার হাজার ক্রেতা ও দর্শনার্থী।
মেলার মাঠে নতুন নতুন পণ্যের পসরা সাজিয়েছে দেশী-বিদেশী প্রতিষ্ঠানগুলো। নানা কারুকাজে সাজানো হয়েছে স্টল ও প্যাভিলিয়নগুলো। সুন্দর ছিমছাম পরিবেশ উপভোগ করছেন দর্শনার্থীরা। মেলায় পণ্যের মূল্য নিয়ে কথা হলো মিরপুর থেকে আসা এক গৃহিণীর সাথে। তার মতে, ক্রেতাদের নাগালের মধ্যেই আছে পণ্যের দাম।
মগবাজারের বাসিন্দা বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা সুমাইয়া রহমান বলেন, যানজটের এই নগরী ঢাকায় বেড়ানোর জায়গা খুবই কম। এ কারণে মেলায় একটু ঘুরে দেখতে এসেছি। আজ শুধু দেখতে এসেছি। কেনাকাটা করব মেলার শেষ দিকে। মেলার মধ্যে শিশুপার্কগুলোয় বিনোদনের সুযোগ পাচ্ছে ছেলেমেয়েরা। সেখানে বেশ ভিড় দেখা গেল। বিভিন্ন প্যাভিলিয়নেও নানা বিনোদনের আয়োজন রাখা হয়েছে। পাশাপাশি এক স্থানে নানা পণ্য যাচাই করে কেনার সুযোগ থাকে। এ ছাড়া মেলায় বিভিন্ন পণ্যে ব্যাপক ছাড় থেকে। ফলে ক্রেতাদের অনেকেই এ মেলা থেকেই কেনাকাটা করার পরিকল্পনা করে থাকেন।
শুক্রবার ছিল মেলার তৃতীয় দিন। এ দিনও কিছু স্টল ও প্যাভিলিয়নে পণ্যের পসরা সাজাতে দেখা যায়। আবার সাজানো স্টলগুলোয় পণ্য বিক্রি করতে ব্যস্ত ছিলেন বিক্রয়কর্মীরা। মেলায় অংশ নেয়া নারী উদ্যোক্তা রুবিনা ইসরাত বলেন, পাটের নানা পণ্য তৈরি হয় আমাদেরর কারখানায়। এসব পণ্যের বেশির ভাগই রফতানি করি। এসব পণ্য বিক্রির জন্য ক্রেতার খোঁজে মেলায় এসেছি। আশা করছি, মেলায় এবার বেশ কেনাবেচা হবে। একই সাথে দেশী পাইকারি ক্রেতাও পাবেন, পাশাপাশি বিদেশী ক্রেতাদের আকর্ষণ করতে পারবো। সবকিছু মিলিয়ে
অন্য বছরের চেয়ে এবার মেলা আরো বেশি জমবে বলে মনে করছেন স্টল ও প্যাভিলিয়ন মালিকেরা। শীতের তীব্রতা নেই। মেলায় ঘুরে বেড়ানোর মতো উপযুক্ত পরিবেশ রয়েছে। এবার শুরুতেই ভিড় হচ্ছে ক্রেতাদের। মেলার আয়োজক প্রতিষ্ঠান রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দিন যত গড়াবে, বাণিজ্যমেলায় ক্রেতা ও দর্শনার্থীর সমাগম বাড়ার পাশাপাশি বিকিকিনিও বাড়বে। সে প্রত্যাশায় রয়েছেন ব্যবসয়ীরা।