১৫ ঘণ্টা উড়ে ঢাকায় হংসবলাকা
- আহমেদ ইফতেখার
- ০৪ ডিসেম্বর ২০১৮, ০০:০০
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের বহরে যুক্ত হয়েছে বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তিসংবলিত সম্পূর্ণ নতুন দ্বিতীয় বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজ ‘হংসবলাকা’। ড্রিমলাইনার নামে পরিচিত এই বোয়িং শনিবার রাতে ঢাকায় এসে পৌঁছেছে। যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটল বোয়িং ফ্যাক্টরি থেকে বিমানটি টানা ১৫ ঘণ্টার উড্ডয়ন শেষে বাংলাদেশে পৌঁছেছে। এর আগে গত ২৯ নভেম্বর বিমান নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান বোয়িং কর্তৃপক্ষ সিয়াটলে বিমানের ডিরেক্টর ফ্লাইট অপারেশন ক্যাপ্টেন ফরহাত হাসান জামিলের কাছে নতুন এ বিমানটির মালিকানা হস্তান্তর করে।
বিমান বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ এম মোসাদ্দিক আহমেদ জানিয়েছেন, ড্রিমলাইনার হংসবলাকা ঢাকা থেকে লন্ডন, দাম্মাম ও ব্যাংকক রুটে চলাচল করবে। ১০ ডিসেম্বর থেকে বিমানটি দিয়ে সপ্তাহে ঢাকা-লন্ডন রুটে ছয়টি ফ্লাইট, ঢাকা-দাম্মাম রুটে চারটি ফ্লাইট ও ঢাকা-ব্যাংকক রুটে তিনটি ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে। ৭৮৭-৮ বোয়িংয়ে ২৭১টি আসন রয়েছে। এটি অন্যান্য বিমানের চেয়ে ২০ শতাংশ জ্বালানি সাশ্রয়ী। বিমানটি ঘণ্টায় ৬৫০ মাইল বেগে একটানা ১৬ ঘণ্টা চলতে সক্ষম।
এর যাত্রীরা সর্বোচ্চ ৪৩ হাজার ফুট উঁচুতে ওয়াইফাই সেবা পাবেন। এতে করে যাত্রীরা বিমানে বসেই ইন্টারনেট ব্যবহার করতে এবং বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে তাদের বন্ধুবান্ধব ও পরিবারের সদস্যদের সাথে যোগাযোগ করতে পারবেন।
ড্রিমলাইনার ঘণ্টায় ৬৫০ কিলোমিটার বেগে উড়তে সক্ষম। উড়োজাহাজের শব্দ কমাতে ইঞ্জিনের সাথে শেভরন প্রযুক্তি যুক্ত রয়েছে। বিমানটি নিয়ন্ত্রিত হবে ইলেকট্রিক ফ্লাইট সিস্টেমে। কম্পোজিট ম্যাটেরিয়াল দিয়ে তৈরি হওয়ায় বিমানটি ওজনে হালকা। ভূমি থেকে বিমানটির উচ্চতা ৫৬ ফুট। দু’টি পাখার আয়তন ১৯৭ ফুট। এর মোট ওজন এক লাখ ১৭ হাজার ৬১৭ কিলোগ্রাম, যা ২৯টি হাতির সমান! এর ককপিট থেকে টেল (লেজ) পর্যন্ত ২৩ লাখ যন্ত্রাংশ রয়েছে।
ড্রিমলাইনারে ২৭১টি আসনের মধ্যে ২৪টি বিজনেস ক্লাসের আর ২৪৭টি ইকোনমি ক্লাসের। বিজনেস ক্লাসের আসনগুলো ১৮০ ডিগ্রি পর্যন্ত সম্পূর্ণ ফ্ল্যাটবেড হওয়ায় যাত্রীরা আরামদায়কভাবে বিশ্রাম নিতে পারবেন। দুই পাশের প্রত্যেক আসনের পাশে রয়েছে বড় আকারের জানালা।
ড্রিমলাইনার সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৪৩ হাজার ফুট উঁচু দিয়ে উড়ে যাওয়ার সময়ও ওয়াইফাই সুবিধা পাবেন যাত্রীরা। এ ছাড়া মোবাইল ফোনে রোমিং সুবিধা থাকলে আকাশে উড্ডয়নের সময় কল করতে পারবেন। এ জন্য ২৫টি স্যাটেলাইটের সাথে করা হয়েছে চুক্তি। উড়োজাহাজটি যে স্থানের ওপর দিয়ে যাবে, যাত্রীদের সামনে তখন স্ক্রিনে দেখা যাবে থ্রিডি ম্যাপ। একই সাথে উঠে আসবে সেই স্থানের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি। এর আগে গত ১৯ আগস্ট বিমানের প্রথম ড্রিমলাইনার ‘আকাশবীণা’ ঢাকায় আসে।