রিমোট কন্ট্রোল সিস্টেম ট্র্রাফিক ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা ফেরাবে
- মাহমুদুল হাসান
- ২৭ নভেম্বর ২০১৮, ০০:০০
রাজধানীর সড়কে ট্র্রাফিক ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা ফেরাতে রিমোট কন্ট্রোল সিস্টেম চালুর উদ্যোগ নিয়েছে। এরই অংশ হিসেবে ১০টির মতো ট্রাফিক ইন্টারসেকশন প্রস্তুত করা হয়েছে। এর মধ্য থেকে ছয়টি ইন্টারসেকশন বুঝে নেয়ার জন্য ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশকে (ডিএমপি) চিঠি দিয়েছে। কিন্তু পথচারী পারাপার ও লাল-সবুজ বাতির সঙ্কেত নিয়ন্ত্রণে সঠিক নির্দেশনা নেই। এ জন্য রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে সিগন্যাল নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব নিতে অনীহা জানাচ্ছে পুলিশ। তবে ত্রুটি-বিচ্যুতি ঠিক করে দিলে এ দায়িত্ব পালন করবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে ‘নির্মল বায়ু ও টেকসই পরিবেশ’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় রাজধানীর প্রতিটি সড়ক ইন্টারসেকশনে ডিজিটাল কাউন্টডাউন টাইমার স্থাপন করছে সিটি করপোরেশন। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এগুলোতেও বিভিন্ন ত্রুটি-বিচ্যুতি ধরা পড়ছে। সব মেরামতের পর নির্ভুল অবস্থায় বোঝে নিতে চায়। এ বিষয়ে পুলিশ ও সিটি করপোরেশনের মধ্যে আলাপ-আলোচনা চলছে। রিমোট কন্ট্রোল ব্যবস্থার মাধ্যমে মূলত সময় ও বাতি নিয়ন্ত্রণ করা হবে। সড়কে গাড়ির চাপ অনুযায়ী দূর থেকে রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে সিগন্যালের সময় ডিজিটাল ডিসপ্লেতে দেখানো হবে। ফলে চালকেরা বোঝতে পারবেন কতক্ষণ সেখানে অপেক্ষা করতে হবে। এ ছাড়া রিমোট কন্ট্রোল ব্যবস্থাতেই সিগন্যালের বাতিগুলো নিয়ন্ত্রণ করা হবে। সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে এমন দাবি করা হলেও পুলিশ বলছে, এ পদ্ধতির মাধ্যমে সময় নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে। কিন্তু বাতি ও পথচারী পারাপারের বিষয়ে কোনো নির্দেশনা নেই। সে কারণে তারা বিষয়টিকে ত্রুটিপূর্ণ বলে অভিহিত করেছে। এগুলো পুরোপুরি সেরে দিলে পুলিশ এর দায়িত্ব নিতে চায়।
রাজধানীজুড়ে দীর্ঘ দিন অকেজো সিগন্যাল বাতিগুলো মেরামত করে যানবাহন চালানোর জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পক্ষ থেকে পুলিশ ও ডিএসসিসিকে নির্দেশনা দেয়া হয়। সংস্থা দু’টি কাজ শুরু করার পর এরই মধ্যে কয়েকটি পয়েন্টে পরীক্ষামূলক স্বয়ংক্রিয় সিগন্যাল বাতিতে যানবাহন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টাও করা হয়। যদিও শেষ পর্যন্ত তা সফল হয়নি। তাই পুরো সিগন্যালিং ব্যবস্থা রিমোটের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এরই মধ্যে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ডিএসসির ছয়টি ইন্টারসেকশন চূড়ান্তভাবে প্রস্তুত করা হয়েছে। এগুলো হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হল ইন্টারসেকশন, কদম চত্বর ইন্টারসেকশন, মৎস্য ভবন ইন্টারসেকশন, কাকরাইল মসজিদ ইন্টারসেকশন, হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল ইন্টারসেকশন ও শাহবাগ ইন্টারসেকশন।
ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার ট্রাফিক (দক্ষিণ) মফিজ উদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, ‘ট্রাফিক সিগন্যালগুলোয় এখনো ত্রুটি রয়েছে। সিগন্যালে কিভাবে সময় নিয়ন্ত্রণ করা হবে, সে বিষয়ে স্পষ্ট নির্দেশনা নেই। কখন লাল ও কখন সবুজ বাতি জ্বলবে, আবার কত সময়ের জন্য জ্বলবে এবং কিভাবে পথচারী পারাপার হবে সে বিষয়গুলো এখনো সাজানো হয়নি। আমরা পরীক্ষামূলক কয়েকটি চালু করেছি।
ত্রুটিগুলো মেরামত করে দেয়ার জন্য সিটি করপোরেশনের সাথে যোগাযোগ হচ্ছে। সব ঠিক হলে রিমোটের মাধ্যমে সিগন্যাল বাতিগুলো পরিচালনা করা যাবে। এ প্রসঙ্গে প্রকল্প পরিচালক ও ডিএসসিসির প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমরা ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগকে চিঠি দিয়েছি। যদি কোনো ত্রুটি থাকে, সেগুলো আমাদের নির্দিষ্ট করে জানালে সেরে দিতে পারব। বর্তমানে দুই সিটি করপোরেশনের ৬২টি ট্রাফিক ইন্টারসেকশনের ৮৮টি সিগন্যাল রিমোট কন্ট্রোল ব্যবস্থাপনায় আনার কাজ চলছে।