ঢাকায় গাড়ির চেয়ে বাইসাইকেলের গতি বেশি
- ১৩ নভেম্বর ২০১৮, ০০:০০
সম্প্রতি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থীদের করা এক গবেষণা ও বিশ্বব্যাংকের গত বছরের এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, গাড়ির চেয়ে সাইকেলের গতি বেশি।
বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন বলছে, ঢাকায় যানবাহনের গড় গতিবেগ ঘণ্টায় সাত কিলোমিটারেরও কম। আর বুয়েটের শিক্ষার্থীদের গবেষণা অনুযায়ী, ঢাকায় সাইকেলের গড় গতিবেগ ঘণ্টায় ১০ দশমিক ৬৪ কিলোমিটার। ঢাকার ছয়টি প্রধান বাণিজ্যিক এলাকায় অফিসগামী ৩০০ সাইকেল আরোহীর ওপর জরিপ করে এই গতিবেগ পাওয়া গেছে। সাইকেলচালকদের ৩৬ শতাংশ বলছেন, দ্রুত যাওয়া যায় বলে তারা অফিস যাতায়াতে সাইকেল ব্যবহার করছেন। এ ছাড়া আর্থিক, স্বাস্থ্যগত, বাসের অপ্রতুলতা ও নিরাপত্তাও রয়েছে সাইকেল ব্যবহারের পেছনে। গবেষণাটি করেছেন বুয়েটের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের শিক্ষার্থী আহমেদ ইলদেরীম তকী ও শেফা আরাবায়ি শিয়োমা।
আহমেদ ইলদেরীম তকী জানিয়েছেন, আমাদের গবেষণায় সাইকেলের গড় গতিবেগ নির্ধারণ করা হয়েছে পিক আওয়ারে। অফিস যাতায়াতের সময় গাড়ির চেয়েও গতি বেশি থাকে সাইকেলে। গবেষণায় অংশ নেয়া ব্যক্তিদের মধ্যে উচ্চ বেতনে চাকরি করেন এমন সাইকেলচালকও ছিলেন। তারা মূলত সময় বাঁচাতে ও স্বাস্থ্যগত কারণে সাইকেল চালান। আর নিম্ন আয়ের লোকজন সাইকেল চালান টাকা বাঁচাতে।
গবেষণায় দেখা গেছে, অন্য যানবাহনের তুলনায় অফিস যাতায়াতে সাইকেল ব্যবহার করলে বছরে জনপ্রতি গড়ে প্রায় ২৪ হাজার টাকা সাশ্রয় হয়। যারা বেশি আয় করেন ও যাতায়াতের ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহার করেন, তাদের ক্ষেত্রে সাশ্রয় আরো বেশি হবে। যদিও গবেষণায় বাইসাইকেল পার্কিংয়ের সমস্যা উঠে এসেছে। পার্কিং ছাড়াও সাইকেলের জন্য পৃথক লেন না থাকা, অনিরাপদ সড়ক, মোটরযানের মাধ্যমে বায়ু ও শব্দদূষণসহ আরো কিছু সমস্যার কথা জানিয়েছেন সাইকেল ব্যবহারকারীরা।
নগর পরিকল্পনাবিদেরা বলছেন, উন্নত দেশগুলোতে হাঁটাপথ (ফুটপাথ), সাইকেল লেন ও গণপরিবহন চলার মূল রাস্তা তিনটিই সমান গুরুত্ব পায়। কিন্তু আমাদের দেশে পরিবেশবান্ধব ও স্বাস্থ্যসম্মত বাহন সাইকেলের বিষয়টি মাথায় না রেখেই সব রাস্তা বানানো হয়েছে। পরিকল্পিতভাবে এ অবস্থার পরিবর্তন করতে হবে। নতুন যেসব রাস্তা করা হচ্ছে, সেসব রাস্তায় অবশ্যই সাইকেলের জন্য পৃথক লেন রাখতে হবে।