ঢাকায় সড়ক দুর্ঘটনা বেশি ঘটছে বিমানবন্দর সড়কে
- আহমেদ ইফতেখার
- ২৩ অক্টোবর ২০১৮, ০০:০০
ঢাকা মহানগরের মধ্যে বিমানবন্দর সড়কে দুর্ঘটনায় সবচেয়ে বেশি লোক মারা যাচ্ছে। ঢাকার বিমানবন্দর থানাসহ ছয়টি থানার তথ্য বলছে, বিমানবন্দর সড়কে বিগত তিন বছর ৯ মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন ১৬১ জন। আহত হয়েছেন ২৬ জন।
বিমানবন্দর সড়কের পর ঢাকার পল্টন মোড় থেকে বিজয় সরণি মোড় পর্যন্ত ভিআইপি সড়কে বিগত তিন বছর চার মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন ১১৭ জন। এ ছাড়া গত তিন বছর ৯ মাসে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সায়েদাবাদ জনপথ মোড় থেকে রফিকুল স্কুল অ্যান্ড কলেজ মোড় পর্যন্ত এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৭৬ জন।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সড়ক দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউট (এআরআই) ঢাকার বিগত এক বছর নয় মাসের সড়ক দুর্ঘটনার তথ্য বিশ্লেষণ করে বলছে, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ঢাকায় ২২৪টি সড়ক দুর্ঘটনা হয়েছে। এই সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন ২১৫ জন। এর মধ্যে পথচারী নিহত হয়েছেন ৮৫ জন। অর্থাৎ শতকরা হিসাবে সড়ক দুর্ঘটনায় পথচারী নিহত হওয়ার সংখ্যা ৩৯ ভাগ। ২০১৭ সালে ঢাকায় সড়ক দুর্ঘটনা হয়েছে ২৬৭টি। মারা গেছেন ২৮০ জন। এর মধ্যে পথচারী ১৩০ জন। অর্থাৎ নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ৪৬ ভাগ পথচারী।
বুয়েটের সড়ক দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ঢাকার রাস্তাগুলো পরিকল্পিতভাবে তৈরি করা হয়নি। বেশির ভাগ সড়কে আবার সংযোগ সড়ক আছে। আবার গণপরিবহন সুশৃঙ্খল নয়। যাত্রী তোলার জন্য পর্যাপ্ত বাসস্টপেজ নেই। চালকেরা বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালাচ্ছেন। সড়কগুলো পথচারীবান্ধব নয়। যত্রতত্র পথচারী পার হচ্ছেন। এসব কারণে ঢাকায় সড়ক দুর্ঘটনা হচ্ছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মীর রেজাউল করিম বলেন, ‘সড়ক দুর্ঘটনার জন্য যাত্রীদেরও দোষ কোনো অংশে কম নয়। রাস্তার মাঝখানে নামার জন্য চলন্ত বাসের চালকদের ওপর চাপ প্রয়োগ করেন। যত্রতত্র নামাতে বাধ্য করেন। ঢাকার বিমানবন্দর সড়কেও আমরা সেটা দেখেছি। সড়ক দুর্ঘটনা রোধে আমাদের যাত্রীদের সচেতন হতে হবে।’
দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক কাজী মো: শাহীন মাহফুজ বলেন, গাড়িচাপায়, গাড়ির ধাক্কায় বেশির ভাগ পথচারী নিহত হচ্ছেন। ঢাকার সড়কবিভাজক দিয়ে লোকে যাতে পার হতে না পারেন, সে জন্য বিভাজকগুলোয় কোনো ফাঁক রাখা যাবে না। পর্যাপ্ত পরিমাণ ফুটওভার ব্রিজ তৈরি করতে হবে। পথচারী সচেতন হয়ে যদি যত্রতত্র না পার হন, তাহলে ঢাকায় সড়ক দুর্ঘটনা অনেক কমে আসবে। চালকেরা রাস্তায় যাতে বেপরোয়া গাড়ি চালাতে না পারেন, তা নিশ্চিত করতে হবে। হ