অবসরে দিয়াবাড়ি
- আহমেদ ইফতেখার
- ১৬ অক্টোবর ২০১৮, ০০:০০
দু’চোখে যেদিকে তাকাবেন চার দিকেই দেখা মিলবে শরতের শুভ্র কাশফুল। ইটকাঠের এই নগরীর বুকে এমন কাশফুলের দেখা পেলে কার না ভালো লাগে! রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের উত্তরা তৃতীয় পর্যায়ের সম্প্রসারিত প্রকল্পের অংশ এই দিয়াবাড়ি। গতকাল সরেজমিন ঘুরে দেখা যায় রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পরিবার-পরিজন নিয়ে অনেকেই আসছেন এই কাশবনে। কেউ বসে গল্প করছেন। কেউবা ফুলের সাথে ছবি তুলছেন। দুপুরের খরতাপ কমতেই লোকসমাগমে জমজমাট হয়ে ওঠে উত্তরার দিয়াবাড়ি এলাকা।
উত্তরা ১৫ নম্বর সেক্টরে এই প্রকল্পে বালুমাটি ফেলে সমতল করায় বিশাল মাঠের মতো খোলা জায়গাটি এখন শরতের শুভ্র কাশফুলে অন্যরকম রূপ ধারণ করেছে। কাশবনের ভেতর দিয়ে পথ। নগরের যান্ত্রিক পরিবেশ থেকে একটু প্রকৃতির সান্নিধ্যে আসা নগরবাসীর কাছে এখন অন্যরকম ভালো লাগার জায়গা হয়ে উঠেছে দিয়াবাড়ি। বিকেলে পুরো এলাকা গ্রামীণ মেলায় রূপ নেয়। এক দিকে ঘুরছে নাগরদোলা। অন্য দিকে রকমারি খাবারের পসরা। সারি সারি ফুচকা চটপটির দোকান। বটতলা থেকে কিছুটা সামনে ৩ নম্বর সেতু। সেতুর দুই পাশে লেকের পাড়ে গড়ে উঠেছে বোট হাউজ। বাঁশ ও কাঠের কাঠামো দিয়ে বানানো হয়েছে বসার জায়গা। সারি দিয়ে বাঁধা প্যাডেল বোট (পায়ে চালিত নৌকা)। ঘণ্টা ভিত্তিতে ভাড়া করে ঘোরার সুযোগ আছে।
দিয়াবাড়ির রাস্তার ভেতরের দিকটা বেশ নিরিবিলি। একটু পরপর নীরবতা ভেঙে উড়ে যায় উড়োজাহাজ। ঢাকায় এত কাছ থেকে উড়োজাহাজের ওড়াউড়ি আর কোথাও দেখতে পাবেন না।
মিরপুর থেকে সপরিবারে ঘুরতে এসেছিলেন আমিনুল হাকিম। তিনি জানালেন, ছোটবেলায় গ্রামের বাড়িতে নদীর ধারে কাশফুলের শোভা দেখেছি। ব্যস্ততার কারণে সন্তানদের গ্রামে নিয়ে যাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। তাই দিয়াবাড়িতে এসেছি কাশফুল দেখাতে। এত কাশফুল দেখে মনটা ভালো হয়ে গেছে সবার।
আহসান উল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একটি দল এসেছিল। তাদের একজন রবিন। তিনি জানালেন, কয়েক দিন ধরেই বন্ধুদের কাছে দিয়াবাড়ির গল্প শুনছিলাম ও পরিচিতদের ফেসবুকে কাশফুলের ছবি দেখে আর লোভ সামলাতে পারিনি। তাই বন্ধুরা মিলে চলে এসেছি। অনেক ভালো লাগছে।
কিভাবে যাবেন : ঢাকার যেকোনো প্রান্ত থেকে উত্তরা রুটের যেকোনো গাড়িতে উঠে হাউজ বিল্ডিং নামতে হবে। এরপর ‘জনপথ’ ধরে মাসকট প্লাজার কিছুটা সামনে থেকে লেগুনা ছাড়ে। লেগুনা নামিয়ে দেবে একেবারে দিয়াবাড়ির বটতলায়। ভাড়া ২০-৩০ টাকা। লেগুনায় উঠতে না চাইলে নিতে পারেন রিকশা বা অটোরিকশা। অথবা মিরপুর বেড়িবাঁধ হয়ে আবদুল্লাহপুর রুটের গাড়িতে পঞ্চবটী নেমে যেতে পারবেন দিয়াবাড়িতে।