২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

চীন আফ্রিকায় দ্বিতীয় সামরিক ঘাঁটি বানাচ্ছে?

চীন আফ্রিকায় দ্বিতীয় সামরিক ঘাঁটি বানাচ্ছে? - ছবি : সংগৃহীত

প্রায় তিন যুগ ধরে প্রতিটি চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বছরের প্রথম বিদেশ সফর হয় আফ্রিকায়। চলতি বছরও এর ব্যতিক্রম হয়নি। চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ইয়ি এবার সফর করছেন মিসর, তিউনেশিয়া, টোগো ও আইভরি কোস্ট। প্রতিটি দেশই উপকূলীয়। মজার ব্যাপার হলো, আফ্রিকায় চীনের পরবর্তী সামরিক ঘাঁটি স্থাপনের সম্ভাব্য যেসব স্থানের নাম আগে আলোচিত হয়েছিল, তার মধ্যে এসব দেশের কোনোটিই নেই। ফলে আফ্রিকায় এবারের সফরের উদ্দেশ্য কী হতে পারে, তা নিয়ে প্রশ্ন জাগতেই পারে। অভ্যন্তরীণ অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের এই সময়ে ক্রমবর্ধমান বহুমেরু এবং দৃঢ়প্রত্যয়ী আফ্রিকায় চীনের দীর্ঘমেয়াদি কৌশল এখনো অস্পষ্ট রয়ে গেছে।

আফ্রিকা মহাদেশে চীনের একটি ঘাঁটি রয়েছে। জিবুতি ২০১৭ সালে তা উদ্বোধন করা হয়। এই স্থাপনার ঘোষিত লক্ষ্য হলো জলদস্যূ প্রতিরোধ এবং নৌচলাচল স্বাধীনতা নিশ্চিত করা। এটি হলো তুলনামূলক কম প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ মোজাম্বিক-দক্ষিণ আফ্রিকা রুটটির নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।

লোহিত সাগরে হাউছিদের বাণিজ্যিক জাহাজে হামলা এবং সোমালিয়া উপকূলে জলদস্যূদের নতুন করে হামলার প্রেক্ষাপটে জিবুতির কৌশলগত গুরুত্ব আবার বেড়ে গেছে।

তবে অনেক বেশি বিদেশী ঘাঁটি থাকায় এবং অনেক বেশি আন্তর্জাতিক অংশীদার থাকায় জিবুতিকে ব্যতিক্রমই বলা যেতে পারে। উল্লেখ্য, জিবুতিতে জাপান ও সৌদি আরবের ঘাঁটিও আছে।

তবে সামরিক ঘাঁটি অনেক সময় নানা সঙ্কটেরও সৃষ্টি করে। নাইজারে মার্কিন সামরিক বাহিনী তাদের বিমান ঘাঁটি বহাল রাখতে হিমশিম খাচ্ছে। গত বছরের এপ্রিলে সেখানে সামরিক অভ্যুত্থানের পর তাদেরকে এখন অন্য কোথাও ঠিকান খুঁজতে হচ্ছে। ব্রিটিশরাও কেনিয়াতে একই অবস্থার মুখে পড়েছিল ২০২১ সালে।

আবার যেসব দেশে সামরিক ঘাঁটি করা হয়, তাদের জন্যও তা সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। রাজনৈতিক নেতা, প্রতিষ্ঠান অনেক সময় স্বাগতিক সরকারের জন্য বড় ধরনের জটিলতার সৃষ্টি করে।

সন্দেহ নেই, চীন এসব বিষয় জানে। ফলে তারা বুঝেশুনেই পদক্ষেপ নেবে।
এমন প্রেক্ষাপটে চীন সম্ভবত আফ্রিকান বন্দরগুলোর যেগুলোতে তাদের বিনিয়োগ আছে, সেগুলোতে বেসামরিক বন্দর অবকাঠামোগুলোকে সম্প্রসারণ করতে এবং দ্বৈত ব্যবহার্য স্থাপনা নির্মাণ করতে পারে। উল্লেখ্য, চীনা বিনিয়োগে আফ্রিকায় ১০০টির মতো বন্দর নির্মাণ হয়েছে কিংবা অর্থ পেয়েছে।

মনে হচ্ছে, চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এবারের সফর মহাদেশে চীনের অব্যাহত উচ্চপর্যায়ের সম্পৃক্ততা কেন্দ্রিক। তবে একইসাথে আফ্রিকায় চীনের নিরাপত্তা স্বার্থ নিয়েও তিনি আলোচনা করবেন। দেশটি তার স্বার্থ অক্ষুণ্ন রাখার চেষ্টা করবে।


আরো সংবাদ



premium cement