২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

গ্যাবনে অভ্যুত্থান : আফ্রিকায় ফরাসি স্বার্থে আরেক আঘাত

গ্যাবনে অভ্যুত্থান : আফ্রিকায় ফরাসি স্বার্থে আরেক আঘাত - প্রতীকী ছবি

আফ্রিকার দেশ গ্যাবনে বৃহস্পতিবার যে সামরিক অভ্যুত্থান হয়েছে, তা সাবেক উপনিবেশিক শক্তি ফ্রান্সের স্বার্থের ওপর ভয়াবহ আঘাত হানবে। এমনকি বৃহত্তর অঞ্চলে ফ্রান্সের অর্থনীতি ও সামরিক স্বার্থের ওপরও তা আঘাত হানতে যাচ্ছে। বিশ্লেষকদের বরাত দিয়ে আনাদুলু অ্যাজেন্সি এ তথ্য জানিয়েছে।

গত ২৬ আগস্ট প্রেসিডেন্ট আলী বোঙ্গো অনদিম্বা বিতর্কিত নির্বাচনে জয়ী হওয়ার কথা ঘোষণা করার কয়েক ঘণ্টা পরই সামরিক বাহিনী ক্ষমতা গ্রহণ করে।

নতুন সামরিক নেতা জেনারেল ব্রাইস ক্লাউটায়ার ওলিগুই নগুইমারার আহ্বানে বৃহস্পতিবার গ্যাবনবাসীর ঘুম ভাঙে। এই লোক অবশ্য তাদের কাছে অপরিচিত কেউ নন। তিনি দীর্ঘ দিন এলিট রিপাবলিকান গার্ড ইউনিটের প্রধান ছিলেন।

তেল-সমৃদ্ধ মধ্য আফ্রিকান দেশটিতে বোঙ্গো পরিবারের শাসন চলছিল অর্ধ শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে। আর এর নেপথ্যে ছিল ফ্রান্সের সাথে চরমভাবে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। গ্যাবনের রাজনীতির হালচাল নির্ধারণে এই সম্পর্ক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করত। এমন তথ্যই জানিয়েছেন রুয়ান্ডা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতিবিজ্ঞানের বুকানন ইসমাইল।

তিনি বলেন, গ্যাবন ও ফ্রান্সের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ সহযোগিতামূলক। আলী বোঙ্গোর অধীনে গ্যাবন ছিল আফ্রিকায় ফ্রান্সের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ মিত্র। বোঙ্গো পরিচিত ছিলেন ফরাসি নীতিমালার অনুগত সমর্থক।

তিনি বলেন, এই সম্পর্কের জের ধরেই গ্যাবনের বিষয়াদিতে ফ্রান্স হস্তক্ষেপ করত।

ইসমাইল বলেন, গ্যাবনের অভ্যুত্থান এমন এক সময় ঘটে, যখন গ্যাবন ও পুরো অঞ্চলে ফরাসিবিরোধী ভাবাবেগ তীব্র হয়ে ওঠেছে।

নাইজার এবং আরো কয়েকটি দেশের সাম্প্রতিক ঘটনাবলীর পর বর্তমান পরিস্থিতি 'গ্যাবন এবং এই অঞ্চলে ফ্রান্সের অর্থনীতি ও সামরিক স্বার্থের প্রতি আরো বেশি বিপজ্জনক হয়ে পড়তে যাচ্ছে' বলে ইসমাইল মন্তব্য করেন।

ইসমাইল বলেন, 'গ্যাবন বলো ইসিওডব্লিউএএসের (ইকোনমিক কমিউনিটি অব ওয়েস্ট আফ্রিকান স্টেটস) সদস্য। নাইজার, বুরকিনা ফাসো, মালি ও গিনিতে যা হয়েছে, তা আপনারা দেখেছেন। নিশ্চিতভাবেই বলা যায়, যেকোনো ধরনের ফরাসিবিরোধী বিক্ষোভ হলে ফরাসি কোম্পানিগুলো, বিশেষ করে খনি খাতের প্রতিষ্ঠানগুলো পাততারি গোটাতে বাধ্য হবে।'

অন্তত একটি ফরাসি খনি কোম্পানি, ইরামেট, ইতোমধ্যেই গ্যাবনে কার্যক্রম স্থগিত করার ঘোষণা দিয়েছে।

ইসমাইল বলেন, এটা গ্যাবন ও ফ্রান্স- উভয় দেশের অর্থনীতিকে প্রভাবিত করবে।

ইসমাইল ও অন্য আরো কয়েকজন বিশ্লেষক মনে করেন, বোঙ্গোর দীর্ঘ শাসন এবং ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখা নিয়ে সামরিক ও রাজনৈতিক গ্রুপগুলোর মধ্যে অসন্তুষ্টি দেখা দেয়ায় এই অভ্যুত্থান ঘটেছে।

বুকরিনা ফাসোর ওগাদুগো বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের অধ্যাপক ওসেনি ইলি বলেন, নির্বাচনী কারচুপি এই অভ্যুত্থানে ইন্ধন জুগিয়েছে।

সূত্র : মিডল ইস্ট মনিটর

 


আরো সংবাদ



premium cement