বন্যপ্রাণী আইন কঠোর করায় উগান্ডায় হাতিরা ফিরছে
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ২৬ এপ্রিল ২০২৩, ১৩:১০
বন্যপ্রাণী শিকারিদের হাত থেকে উগান্ডার ন্যাশনাল পার্ক রক্ষায় কাজ করেন মার্গারেট কাসুম্বা৷ কাজটা খুব বিপজ্জনক৷ তিনি বলেন, ‘'মাঝেমধ্যে আমাদের এমনসব শিকারির সাথে লড়তে হয় যাদের কাছে আমাদের মতোই অস্ত্র থাকে৷ সশস্ত্র বন্যপ্রাণী শিকারি৷ অনেকসময় প্রাণী শিকার করতে তারা অস্ত্র নিয়ে আসে৷ আমাদেরও অস্ত্র রাখতে হয় এবং তাদের সাথে লড়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে হয়৷'
রেঞ্জারদের কঠোর পরিশ্রমের কারণে উগান্ডায় হাতির সংখ্যা বেড়ে এখন ৫ হাজার পর্যন্ত হয়েছে৷ তবে যুদ্ধ এখনো শেষ হয়নি৷
২০১৯ সালে কর্তৃপক্ষ রেকর্ড পরিমাণ হাতির দাঁত উদ্ধার করেছিল। ওজনে যা ৩ টনের বেশি ছিল৷ দাঁতের এই পরিমাণ থেকে ধারণা করা যায়, শিকারিদের হাতে সাড়ে ৩০০রও বেশি হাতি মারা পড়েছে৷
কাসুম্বা জানান, 'প্রতিবছর গড়ে আমরা প্রায় ৪০০ জনের বিচার করি৷ বন্যপ্রাণী পাচার, শিকার, অবৈধভাবে বনে প্রবেশসহ নানা অপরাধে এসব বিচার হয়ে থাকে৷'
ন্যাশনাল পার্কগুলোর মধ্যে নিয়মিত সশস্ত্র টহল দেয়ার মাধ্যমে শিকারিদের সবসময় চাপে রাখতে হয়৷
উগান্ডার একটি বড় লক্ষ্য আছে: বনে সাদা গন্ডার ফিরিয়ে আনতে চায় দেশটি৷ ৪০ বছর আগে শিকারিদের কারণে তারা হারিয়ে গিয়েছিল৷
বর্তমানে উগান্ডার একমাত্র জিওয়া অভয়ারণ্যে সাদা গন্ডার আছে৷ ৩৩টি গন্ডারকে সারাক্ষণ পাহারা দিয়ে রাখেন রেঞ্জাররা৷
মার্গারেট কাসুম্বা বলেন, ‘আমরা আমাদের বাহিনীর সদস্যসংখ্যা বাড়িয়েছি, আরো বাড়াচ্ছি৷ নতুন কয়েকজন এখন প্রশিক্ষণ নিচ্ছে৷ শিগগিরই তা শেষ হবে৷ এরপর তারা দলে যোগ দিয়ে বন্যপ্রাণী রক্ষায় কাজ শুরু করবে৷ অপরাধ ধরার কৌশলও আমরা উন্নত করেছি৷ অপরাধ শনাক্ত করতে আমাদের তদন্ত বিভাগকে আধুনিক যন্ত্রপাতি দেয়া হয়েছে৷'
তিনি বলছেন, শিকারিদের ধরে বিচার করাও গুরুত্বপূর্ণ৷ ২০১৯ সালে সরকার বন্যপ্রাণী শিকার ও বেচাকেনার অপরাধের শাস্তি বাড়িয়েছে৷ ‘নতুন আইনের কারণে আমাদের শক্তিবৃদ্ধি হয়েছে৷ কারণ অপরাধীরা এখন জানেন, অপরাধ করে ধরা পড়লে তাদের কী ধরনের শাস্তি পেতে হবে।'
উগান্ডায় বন্যপ্রাণী শিকার, পাচার ও এসব প্রাণীদের দিয়ে তৈরি পণ্য বিক্রির শাস্তি দিতে বিশেষ আদালত গঠন করা হয়েছে৷ অপরাধের শাস্তিও এখন অনেক বেশি৷
সম্প্রতি হাতির দাঁতের এক ব্যবসায়ীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে৷
কাসুম্বা বলেন, ‘আমার কাছে এটা বড় অর্জন, কারণ আমরা সবাই এটা চেয়েছিলাম৷ বন্যপ্রাণী সংক্রান্ত অপরাধের জন্য আমাদের একটি আদালত আছে৷ এটা আমার কাছে অনেক বড় অর্জন৷ আগে হত্যা, রাষ্ট্রদ্রোহিতার মতো মামলার সাথে আমাদের লড়তে হত৷ রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলার সাথে বন্যপ্রাণী সংক্রান্ত মামলার কথা আপনি ভাবতে পারেন? কোন শুনানিতে বেশি গুরুত্ব দেয়া হবে বলে আপনার মনে হয়?'
সাম্প্রতিক সময়ে হাতির সংখ্যা বেড়েছে৷ এছাড়া বিপন্নপ্রায় পাহাড়ি গরিলার সংখ্যাও কিছুটা বেড়েছে৷
মার্গারেট কাসুম্বা এখন আশা করছেন সাদা গন্ডাররাও শিগগিরই বনে ফিরবে৷
২০১৯ সালে উগান্ডায় বন্যপ্রাণী রক্ষার আইন কঠোর করা হয়৷ এ কারণে দেশটিতে হাতির সংখ্যা বেড়েছে৷ এবার সাদা গন্ডারদেরও বনে ফিরিয়ে নেয়ার চেষ্টা চলছে৷ প্রায় ৪০ বছর আগে শিকারিদের কারণে তারা হারিয়ে গিয়েছিল৷
সূত্র : ডয়চে ভেলে
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা