বেসামরিক শাসনের দাবিতে সুদানের রাস্তায় হাজার হাজার বিক্ষোভকারী
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ২৫ ডিসেম্বর ২০২১, ২২:০৪
সুদানের সামরিক বাহিনীর ‘ব্যারাকে ফিরে যাওয়া’ ও বেসামরিক শাসন প্রতিষ্ঠার দাবিতে আফ্রিকার দেশটির বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ করেছেন হাজার হাজার বিক্ষোভকারী। শনিবার সামরিক ও নিরাপত্তা বাহিনীর কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা সত্ত্বেও সুদানজুড়ে এই বিক্ষোভের আয়োজন করা হয়।
এর আগে বিক্ষোভের আহ্বানের জেরে সুদানে ফোন সংযোগ বিচিছন্ন করা হয় এবং ইন্টারনেট সংযোগ সীমিত করা হয়। এছাড়া রাজধানী খার্তুমসহ বিভিন্ন শহরে সামরিক ও নিরাপত্তা বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করা হয় এবং বিভিন্ন রাস্তা বন্ধ করে দেয়া হয়।
রাজধানী খার্তুমের বিভিন্ন স্থান থেকেই বিক্ষোভকারীরা মিছিল নিয়ে প্রেসিডেন্টের প্রাসাদের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলে নিরাপত্তা বাহিনী টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা চালায়।
অপরদিকে খার্তুম ছাড়াও আতবারা, পোর্ট সুদান, ওয়াদ মাদানি, নিয়ালা ও আল-ওবায়েদসহ বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
খার্তুম থেকে সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার প্রতিনিধি জানান, নিরাপত্তা বাহিনী বিক্ষোভকারীদের রাজধানীর প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে পৌঁছাতে বাধা দিচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘শত শত লোক রাস্তা সম্পূর্ণ বন্ধ থাকার কারণে কেন্দ্রীয় খার্তুমে পৌঁছাতে পারছেন না এবং সর্বত্রই নিরাপত্তা বাহিনী ও পুলিশের বিপুল উপস্থিতি রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা ধারণা করছি দক্ষিণ খার্তুম থেকে বিক্ষোভকারীরা প্রচণ্ড গতিতে আসবে কেননা এটিই একমাত্র এলাকা যা প্রেসিডেন্টের প্রাসাদের অবস্থানের এলাকার সাথে সরাসরি সংযুক্ত।’
এর আগে গত সপ্তাহে সুদানের প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের কাছে এক বিক্ষোভ সমাবেশ কঠোরভাবে উচ্ছেদ করে সামরিক বাহিনী।
রোববারের ওই ঘটনায় তিন বিক্ষোভকারী নিহত ও আরো তিন শ’ জন আহত হয়েছেন।
এদিকে জাতিসঙ্ঘ জানিয়েছে, এই ঘটনায় বেশ কয়েকজন নারী বিক্ষোভকারীকে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের ধর্ষণ করার তথ্য তারা পেয়েছে।
সুদানের সামরিক ও বেসামরিক নেতৃত্বের অংশীদারমূলক অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সভরেইন কাউন্সিলের উভয়পক্ষের মতবিরোধের জেরে প্রধানমন্ত্রী আবদুল্লাহ হামদুকসহ বিপুল বেসামরিক নেতৃত্বকে ২৫ অক্টোবর সামরিক বাহিনী গ্রেফতার করে এবং সামরিক প্রধান জেনারেল আবদুল ফাত্তাহ আল-বুরহান পূর্ণ ক্ষমতা দখল করেন।
সামরিক বাহিনীর এই পদক্ষেপকে 'অভ্যুত্থান' হিসেবে উল্লেখ করে এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সুদানজুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়।
তবে জেনারেল বুরহান তার এই পদক্ষেপকে অভ্যুত্থানের বদলে 'গণতান্ত্রিক উত্তরণকে শোধরানোর' পদক্ষেপ হিসেবে উল্লেখ করছেন।
সামরিক অভ্যুত্থানের জেরে বিশ্বজুড়ে সুদানে সামরিক বাহিনীর নিন্দা জানানো হয়। যুক্তরাষ্ট্র ও বিশ্বব্যাংক দেশটিতে প্রদত্ত সহায়তা স্থগিত করে। এছাড়া আফ্রিকান ইউনিয়ন সুদানের সংস্থাটিতে সদস্য পদ স্থগিত করে।
পরে ২১ নভেম্বর আবদুল্লাহ হামদুকের সাথে ২০২৩ সালের জুলাইয়ে নির্বাচন পর্যন্ত নির্বাহী ক্ষমতা পরিচালনার জন্য মন্ত্রিসভা গঠনে জেনারেল আল-বুরহান চুক্তি করেন।
তবে সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলনরত বিভিন্ন দল এই চুক্তিকে প্রত্যাখ্যান করেছে এবং সম্পূর্ণ বেসামরিক সরকার গঠন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছে।
সূত্র : আলজাজিরা ও টিআরটি ওয়ার্ল্ড
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা