অন্তর্বর্তীকালীন সময়ের পর সরকারে না থাকার অঙ্গীকার বুরহানের
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ০৮ নভেম্বর ২০২১, ১৪:৩২, আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০২১, ১৪:৩৪
সুদানের সামরিক বাহিনীর প্রধান জেনারেল আবদুল ফাত্তাহ আল-বুরহান জানিয়েছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সময়ের পর তিনি কোনো সরকারে থাকবেন না।
রোববার কাতারভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার সাথে এক সাক্ষাতকারে এই অঙ্গীকার করেন তিনি।
জেনারেল আল-বুরহান বলেন, 'আমরা নিজেদের, সুদানি জনগণের ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে গণতান্ত্রিক পরিবর্তনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা, যথাসময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠান এবং শান্তিপূর্ণ, সাংবিধানিক আদেশের অধীন ও স্থগিত না হওয়া সংবিধানের অংশের অনুসারে কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে বাধা না দেয়ার অঙ্গীকার করছি।'
তিনি বলেন, 'আমরা অঙ্গীকার করছি জাতীয় স্বীকৃতিপ্রাপ্ত বেসামরিক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করার এবং প্রতিজ্ঞা করছি ক্ষমতার হস্তান্তরে বাধা দানকারী যেকোনো হস্তক্ষেপ প্রতিরোধ করার।'
সুদানে সামরিক অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে চলমান বিক্ষোভে হতাহতের জন্য সামরিক বাহিনীর দায় অস্বীকার করেন জেনারেল বুরহান।
তিনি বলেন, 'সুদানের সামরিক বাহিনী কোনো নাগরিককে হত্যা করেনি এবং ঘটনার বিষয়ে তদন্ত কমিটি অনুসন্ধান চালাচ্ছে যে প্রকৃতপক্ষে কী হয়েছিলো।'
গত ২৫ অক্টোবর সুদানে সামরিক অভ্যুত্থানের পর দেশজুরে বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভে সামরিক বাহিনীর সাথে সংঘর্ষে এই পর্যন্ত ১৪ বিক্ষোভকারী নিহত ও তিন শ'র বেশি লোক আহত হয়েছেন সেন্ট্রাল কমিটি অব সুদানিজ ডক্টরস জানায়।
এদিকে সুদানে সামরিক অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে রোববার থেকে দুই দিনের ধর্মঘট শুরু হয়েছে। সাবেক একনায়ক ওমর আল-বশিরের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়া সুদানি পেশাজীবি সংগঠন সুদানিজ প্রফেশনালস অ্যাসোসিয়েশনস এই ধর্মঘটের ডাক দেয়।
ধর্মঘটে বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন হাজার হাজার লোক। বিক্ষোভ দমনে সামরিক ও নিরাপত্তা বাহিনী গ্রেফতারি অভিযান চালাচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করা হয়েছে।
সুদানের সামরিক ও বেসামরিক নেতৃত্বের অংশীদারমূলক অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সভরেইন কাউন্সিলের উভয়পক্ষের মতবিরোধের জেরে প্রধানমন্ত্রী আবদুল্লাহ হামদুকসহ বিপুল বেসামরিক নেতৃত্বকে ২৫ অক্টোবর সামরিক বাহিনী গ্রেফতার করে এবং সামরিক প্রধান জেনারেল আবদুল ফাত্তাহ আল-বুরহান ক্ষমতা দখল করেন।
সামরিক বাহিনীর এই পদক্ষেপকে 'অভ্যুত্থান' হিসেবে উল্লেখ করে এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সুদানজুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়।
তবে জেনারেল বুরহান তার এই পদক্ষেপকে অভ্যুত্থানের বদলে 'গণতান্ত্রিক উত্তরণকে শোধরানোর' পদক্ষেপ হিসেবে উল্লেখ করছেন।
সামরিক অভ্যুত্থানের জেরে বিশ্বজুড়ে সুদানে সামরিক বাহিনীর নিন্দা জানানো হয়। যুক্তরাষ্ট্র ও বিশ্বব্যাংক দেশটিতে প্রদত্ত সহায়তা স্থগিত করে। এছাড়া আফ্রিকান ইউনিয়ন সুদানের সংস্থাটিতে সদস্য পদ স্থগিত করে।
এর আগে সেপ্টেম্বরে সুদানে এক সামরিক অভ্যুত্থানের ব্যর্থ চেষ্টা করা হয়। ২০১৯ সালে সুদানের সাধারণ জনতার বিক্ষোভের জের ধরে সামরিক বাহিনী দেশটির দীর্ঘকালীন শাসক ওমর আল-বশিরকে ক্ষমতাচ্যুত করে।
তখন থেকে সামরিক ও বেসামরিক যৌথ নেতৃত্বের অন্তর্বর্তীকালীন সভরেইন কাউন্সিল সুদানের শাসন পরিচালনা করে আসছিলো। ২০২৩ সালে দেশটির সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা রয়েছে।
সূত্র : আলজাজিরা
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা