২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

লিবিয়ায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরখাস্ত, ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা

নাজলা আল-মানকুশ - ছবি : রয়টার্স

লিবিয়ায় অন্তর্বর্তীকালীন জাতীয় ঐক্য সরকারের প্রেসিডেন্সিয়াল কাউন্সিল পররাষ্ট্রমন্ত্রী নাজলা আল-মানকুশকে বরখাস্ত করেছে।

শনিবার তিন সদস্যের প্রেসিডেন্সিয়াল কাউন্সিল এক অধ্যাদেশের মাধ্যমে এই বরখাস্তের আদেশ দেয়। কাউন্সিলের সাথে কোনো সম্পর্ক ছাড়াই লিবিয়ার পররাষ্ট্রক্ষেত্রে একচ্ছত্রভাবে পরিচালনার মাধ্যমে 'প্রশাসনিক ব্যবস্থা লঙ্ঘনের' অভিযোগে তাকে বরখাস্ত করা হয়।

একইসাথে দেশের বাইরে সফরেও নাজলা আল-মানকুশের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার কথা অধ্যাদেশে জানানো হয়।

লিবিয়ার প্যানারোমা টিভি চ্যানেলে আল-মানকুশের মুখপাত্র নাজলা ওয়াহবা জানান, প্রেসিডেন্সিয়াল কাউন্সিল একইসাথে আল-মানকুশের বিরুদ্ধে 'প্রশাসনিক ব্যবস্থা লঙ্ঘনের' বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে।

এদিকে রোববার লিবিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মন্ত্রিসভা পররাষ্ট্রমন্ত্রী নাজলা আল-মানকুশকে বরখাস্তের বিষয়ে প্রেসিডেন্সিয়াল কাউন্সিলের অধ্যাদেশ প্রত্যাখ্যান করেছে।

মন্ত্রিসভার পক্ষে এক বিবৃতিতে জানানো হয়, পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বরখাস্ত করার কোনো এখতিয়ার প্রেসিডেন্সিয়াল কাউন্সিলের নেই।

এতে বলা হয়, 'জেনেভায় লিবিয়ান পলিটিক্যাল ডায়লগ ফোরামের ফল অনুসারে, প্রেসিডেন্সিয়াল কাউন্সিলের সীমিত ক্ষমতা থাকবে, নির্বাহী প্রশাসনের কোনো সদস্যকে নিয়োগ বা বরখাস্ত করার কোনো আইনগত অধিকার থাকবে না এবং এই ক্ষমতা স্থায়ীভাবে জাতীয় ঐক্য সরকারের প্রধানমন্ত্রীর হাতেই থাকবে।'

বিবৃতিতে জানানো হয়, লিবিয়ায় স্থিতিশীলতা বিষয়ক সম্মেলন আয়োজন করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বিপুল সাফল্য পেয়েছে এবং লিবিয়ার স্থিতিশীলতার বিষয়ে সহায়তা করা ভ্রাতৃত্ব ও বন্ধুসুলভ দেশগুলোর সাথে ইতিবাচক যোগাযোগ নীতি গ্রহণ করেছে।

মন্ত্রিসভার পক্ষ থেকে নাজলা আল-মানকুশকে তার স্বাভাবিক কাজের সুযোগ দিয়ে দায়িত্ব পালনে সহায়তার জন্য সবাইকে আহ্বান জানানো হয়।

জ্বালানি তেলসমৃদ্ধ লিবিয়ায় ২০১১ সালে আরব বসন্তের পরিপ্রেক্ষিতে সাধারণ মানুষ চার দশক দেশটি শাসন করা একনায়ক মুয়াম্মার গাদ্দাফির পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করে। গাদ্দাফি সামরিক পন্থায় বিক্ষোভকারীদের দমন করতে চাইলে দেশটিতে গৃহযুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ে। গৃহযুদ্ধের এক পর্যায়ে বিদ্রোহীদের হাতে গাদ্দাফি নিহত হলেও দেশটিতে বিভিন্ন পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ অব্যাহত থাকে। বিবাদমান পক্ষগুলোর মধ্যে সংঘর্ষ থেকে নতুন করে দ্বিতীয় পর্যায়ে ২০১৪ থেকে শুরু হওয়া গৃহযুদ্ধে দেশটি ত্রিপোলিকেন্দ্রীক পশ্চিম ও তবরুককেন্দ্রীক পূর্বাঞ্চলীয় সরকারের মধ্যে বিভক্ত হয়ে পড়ে।

গত বছরের অক্টোবরে জাতিসঙ্ঘ উভয়পক্ষকে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত করে এবং দেশটির সংকট সমাধানে বিবাদমান পক্ষগুলোর মধ্যে রাজনৈতিক সংলাপের সূচনা করে।

গত ৫ ফেব্রুয়ারি দীর্ঘ সংলাপের পর সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় বিবাদমান পক্ষগুলো দেশটিতে একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠনে সম্মত হয়। বিবাদমান পক্ষগুলো অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে পূর্বাঞ্চলের প্রতিনিধি দেশটির সাবেক কূটনীতিক মোহাম্মদ ইউনুস মানফি এবং প্রধানমন্ত্রী পদে প্রভাবশালী ব্যবসায়ী ও পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রতিনিধি আবদুল হামিদ আল-দাবিবাহকে নির্বাচিত করে।

পরে লিবিয়ার পার্লামেন্টে আলোচনার পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মন্ত্রিসভা গঠন করা হয়। আগামী ২৪ ডিসেম্বর দেশটিতে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা রয়েছে।

সূত্র : টিআরটি ওয়ার্ল্ড ও আনাদোলু এজেন্সি


আরো সংবাদ



premium cement