২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

তিউনিসিয়াকে 'সাংবিধানিক শৃঙ্খলায়' ফেরাতে কায়েসের প্রতি জি-সেভেনের আহ্বান

কায়েস সাইদ (ইনসেটে জি-সেভেন লোগো) - ছবি : সংগৃহীত

উন্নত সাত দেশের সংস্থা জি-সেভেন তিউনিসিয়ায় নতুন সরকার প্রধান নিয়োগ এবং দেশকে 'সাংবিধানিক শৃঙ্খলায় ফেরানোর' জন্য আহ্বান জানিয়েছে। সোমবার সংস্থাটির সদস্য দেশগুলোর তিউনিসিয়ায় নিযুক্ত রাষ্ট্রদূতদের এক যুক্ত বিবৃতিতে এই আহ্বান জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, 'আমরা আহ্বান জানাচ্ছি শিগগির সাংবিধানিক শৃঙ্খলা ফেরানোর, যাতে এক নির্বাচিত পার্লামেন্টের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে।'

এতে আরো বলা হয়, 'আমরা জোর দিচ্ছি জরুরিভাবে একজন নতুন সরকার প্রধান নিয়োগ করে কার্যকর সরকার গঠন করার যাতে তিউনিসিয়ায় চলমান অর্থনৈতিক ও চিকিৎসা সংকটের সমাধানে অগ্রসর হওয়া যায়।'

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, প্রধানমন্ত্রীর নিয়োগের মাধ্যমে সবার সমন্বয়ে এক সংলাপের সুযোগ তৈরি হয় যাতে দেশের সাংবিধানিক ও নির্বাচনী সংস্কারের প্রস্তাবে আলোচনা করার যায়।

এর আগে গত ২৫ জুলাই করোনা পরিস্থিতিতে তিউনিসিয়ায় সৃষ্ট দুর্যোগপূর্ণ অবস্থায় জেরে আকস্মিক সরকারবিরোধী বিক্ষোভের পর রাতে প্রেসিডেন্ট কায়েস সাইদ দুই বছর আগে নির্বাচিত পার্লামেন্ট ৩০ দিনের জন্য স্থগিত, প্রধানমন্ত্রী হিশাম মাশিশিকে বরখাস্ত ও দেশের নির্বাহী ক্ষমতা নিজের হাতে নেয়ার ঘোষণা দিয়ে আদেশ জারি করেন।

পরে ২৩ আগস্ট 'রাষ্ট্রের জন্য হুমকি' বিবেচনায় পরবর্তী আদেশ দেয়া না পর্যন্ত পার্লামেন্ট স্থগিত রাখার আদেশ দেন প্রেসিডেন্ট কায়েস সাইদ।

তিউনিসিয়ার রাজনৈতিক দলগুলো এই আদেশকে 'সাংবিধানিক অভ্যুত্থান' বলে অভিযোগ করে আসছে।

২৬ জুলাই দেশটির বৃহত্তম রাজনৈতিক দল আননাহদার প্রধান ও পার্লামেন্ট স্পিকার রশিদ গানুশিসহ দলীয় পার্লামেন্ট সদস্য ও সমর্থকরা রাজধানী তিউনিসে পার্লামেন্টের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন। অপরদিকে প্রেসিডেন্ট কায়েস সাইদের সমর্থকরাও পার্লামেন্টের সামনে জড়ো হন। এই সময় দুই পক্ষের মধ্যে পরস্পরের প্রতি পাথর নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে।

অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে ২৭ আগস্ট পর্যন্ত রাত্রিকালীন কারফিউ জারি করেছিলেন প্রেসিডেন্ট কায়েস সাইদ। একইসাথে তিনজনের বেশি লোককে প্রকাশ্যে জমায়েত হওয়ায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিলো।

এছাড়া বেশ কিছু মন্ত্রী ও সরকারি কর্মকর্তাদের বরখাস্ত করেন কায়েস সাইদ। এছাড়া বিভিন্ন অভিযোগে বেশ কয়েকজন রাজনৈতিক নেতাকে দেশটিতে গৃহবন্দী করা হয়েছে।

তিউনিসিয়ার রাজনৈতিক দলগুলো প্রেসিডেন্ট কাইস সাইদের এসব পদক্ষেপগুলোর মাধ্যমে দেশটিতে স্বৈরাচারী শাসন ফিরে আসার শঙ্কায় আছেন।

২০১১ সালে আরব বসন্তের সূচনাকারী দেশ তিউনিসিয়ায় স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের জেরে ২৪ বছর দেশটি শাসন করা একনায়ক জাইন আল আবেদীন বিন আলী ক্ষমতাচ্যুৎ হন। এর পর থেকেই গত দশ বছর ভঙ্গুর অবস্থা সত্ত্বেও আরব বিশ্বের একমাত্র গণতান্ত্রিক শাসন উত্তর আফ্রিকার দেশটিতে চালু ছিলো।

সূত্র : মিডল ইস্ট আই


আরো সংবাদ



premium cement