মরক্কোতে ইসরাইলি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ঐতিহাসিক সফরে তিন চুক্তি স্বাক্ষর
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ১২ আগস্ট ২০২১, ১৩:৫৪, আপডেট: ১২ আগস্ট ২০২১, ১৪:০১
ইসরাইলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়ায়ির লাপিদের মরক্কোতে ঐতিহাসিক সফরে মরক্কো-ইসরাইল দ্বিপাক্ষিক তিনটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। বুধবার মরক্কোর পররাষ্ট্রমন্ত্রী নাসের বুরিতা ও ইয়ায়ির লাপিদ এই তিন চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
স্বাক্ষরিত চুক্তির মধ্যে মরক্কো-ইসরাইলের মধ্যে বিমান যোগাযোগ এবং দুই দেশের মধ্যে সংস্কৃতি, ক্রীড়া ও তরুণ গোষ্ঠী বিষয়ক ক্ষেত্রে পারস্পারিক সহযোগিতা বিষয়ক চুক্তি রয়েছে।
এছাড়া দুই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পর্যায়ে রাজনৈতিক পরামর্শ বিষয়ক কৌশল প্রতিষ্ঠার বিষয়ে এক সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।
তবে দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মধ্যে রাজনৈতিক পরামর্শের বিষয়ে কি ধরণের কৌশল প্রতিষ্ঠা করা হবে তা স্পষ্ট করা হয়নি।
এর আগে দুই দিনের সফরে বুধবার মরক্কোর রাজধানী রাবাতে যান ইসরাইলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়ায়ির লাপিদ। ২০০৩ সালে দুই দেশের মধ্যে থাকা নিম্ন পর্যায়ের কূটনীতিক সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর ইসরাইলের মন্ত্রী পর্যায়ে এটিই প্রথম মরক্কো সফর।
সফরের শেষদিন বৃহস্পতিবার রাবাতে ইসরাইলি কূটনীতিক লিয়েজন দফতর উদ্বোধনে তিনি উপস্থিত থাকবেন।
এদিকে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে মরক্কোর পররাষ্ট্রমন্ত্রী নাসের বুরিতা ইসরাইলি পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলেন, দুই দেশের অর্থনৈতিক স্বার্থেই এই চুক্তি করা হয়েছে। সাথে সাথে ইসরাইলি পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ফিলিস্তিন-ইসরাইল সংঘাতের মীমাংসায় দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের জন্য কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
ফিলিস্তিনিদের বিষয়ে নাসের বুরিতা উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, ‘বর্তমানে সব পক্ষের বিশ্বাস অর্জন করা জরুরি এবং দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানকে ভিত্তি করে রাজনৈতিক মীমাংসার পথ তৈরির লক্ষ্যে কোনো প্রকার উত্তেজনায় অংশ থেকে দূরে থাকা প্রয়োজন।’
অপরদিকে বুধবার ইসরাইলের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এক বিবৃতিতে বলা হয়, এর মাধ্যমে মরক্কো ও ইসরাইল তার সন্তানদের ‘সংকুচিত হয়ে আসা আশার শক্তি’ সম্পর্কে শিক্ষা দিয়েছে।
বিবৃতিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী লাপিদ বলেন, মরক্কো ও ইসরাইলের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের উন্নতিতে এই চুক্তি উদ্যোগ ও সুযোগের সৃষ্টি করবে।
উত্তর আফ্রিকার বসবাসকারী বিপুল ইহুদি মরক্কোতে বাস করে। দেশটিতে বর্তমানে প্রায় তিন হাজার ইহুদি বাস করছে। অপরদিকে ইসরাইলে বসবাসকারী প্রায় সাত লাখ ইহুদি মরক্কোর বংশদ্ভুত।
মরক্কোতে ইহুদি ঐতিহ্যের দীর্ঘ অবস্থানের জেরে ১৯৯০-এর দশকে দেশটির সাথে ইসরাইলের নিম্ন পর্যায়ের কূটনীতিক সম্পর্ক ছিলো। কিন্তু ২০০০ সালে ফিলিস্তিনে দ্বিতীয় ইন্তেফাদা শুরুর পর ২০০৩ সালে এই কূটনীতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে মরক্কো। সাথে সাথে রাবাতে ইসরাইলি কূটনীতিক লিয়েজন অফিস বন্ধ করে দেয়া হয়।
গত বছর ১৫ সেপ্টেম্বরে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে প্রেসিডেন্টের বাসভবন হোয়াইট হাউজে পারস্য উপসাগরীয় দুই আরব দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইন জায়নবাদী ইসরাইলের সাথে কথিত ‘ইবরাহীমি চুক্তির’ মাধ্যমে স্বাভাবিক কূটনীতিক সম্পর্ক স্থাপন করে। পরে ১০ ডিসেম্বর এই চুক্তিতে যোগ দেয় মরক্কো।
মরক্কোর দক্ষিণে পশ্চিম সাহারা ভূখণ্ডের ওপর দেশটির দাবিকে ট্রাম্পের স্বীকৃতির পর রাবাত ‘ইবরাহীমি চুক্তিতে’ যুক্ত হতে সম্মত হয়।
তবে জানুয়ারিতে দায়িত্ব নেয়ার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নতুন প্রশাসন জানিয়েছে, তারা পূর্বের ট্রাম্প প্রশাসনের পশ্চিম সাহারাকে মরক্কোর ভূখণ্ড হিসেবে স্বীকৃতির বিষয়ে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করবে।
মরক্কো ১৯৭৫ সালে ভূখণ্ডটির ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করলেও জাতিসঙ্ঘ এর স্বীকৃতি দেয়নি।
সূত্র : আলজাজিরা
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা