২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

ইথিওপিয়ায় এখন দুর্ভিক্ষ চলছে : জাতিসঙ্ঘ কর্মকর্তা

সমীক্ষায় দেখা গেছে যুদ্ধবিধ্বস্ত টিগ্রে অঞ্চলে সাড়ে তিন লাখ মানুষ ‘গুরুতর সংকটের’ মধ্যে বসবাস করছে। - ছবি : এএফপি

ইথিওপিয়ার উত্তরাঞ্চলের পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে দেখার পর জাতিসঙ্ঘের মানবিক ত্রাণ সাহায্য বিষয়ক প্রধান মার্ক লোকক বলেছেন, ওই অঞ্চলে এখন দুর্ভিক্ষ চলছে।

তিনি বলেন, ‘সেখানে পরিস্থিতি আরো খারাপের দিকে যাচ্ছে।’

জাতিসঙ্ঘের সহযোগিতা ও বিভিন্ন সংস্থার উদ্যোগে পরিচালিত ওই সমীক্ষায় দেখা গেছে যুদ্ধবিধ্বস্ত টিগ্রে অঞ্চলে সাড়ে তিন লাখ মানুষ ‘গুরুতর সংকটের’ মধ্যে বসবাস করছে।

ওই অঞ্চলে সরকারি বাহিনী ও বিদ্রোহীদের মধ্যে গত বছরের নভেম্বর মাস থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধের কারণে ১৭ লাখ মানুষ স্থানচ্যুত হয়েছে।

এধরনের বিশ্লেষণকে বলা হয় ইন্টিগ্রেটেড ফেজ ক্লাসিফিকেশন বা আইপিসি। জাতিসঙ্ঘের বিভিন্ন সংস্থা এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা মিলে এই সমীক্ষা প্রতিবেদন তৈরি করে থাকে।

এই আইপিসি পর্যালোচনায় দেখা গেছে টিগ্রে অঞ্চলে খাদ্য সঙ্কট ‘বিপর্যয়কর’ পরিস্থিতিতে চলে গেছে যার ফলে ক্ষুধা ও মৃত্যু বেড়ে গেছে।

এরকম পরিস্থিতিতে জাতিসঙ্ঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি এবং শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ সঙ্কট মোকাবিলায় জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে।

তবে এই বিশ্লেষণের সাথে একমত নয় ইথিওপিয়ার সরকার। তারা বলছে, ওই অঞ্চলে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতির সাথে সাথে তারা সেখানে মানবিক ত্রাণ সাহায্যের কর্মসূচিও বিস্তৃত করছে।

টিগ্রের পশ্চিমে বিচ্ছিন্ন কাফতা হোমেরা অঞ্চলের লোকজন বিবিসিকে বলেছে, তারা দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে।

‘খাওয়ার জন্য আমাদের কিছু নেই,’ টেলিফোনে বিবিসিকে একথা বলেছেন এক ব্যক্তি। তিনি জানান, সাত মাস ধরে চলা যুদ্ধের মধ্যে তাদের ফসল এবং গবাদিপশু লুট হয়ে গেছে।

তিনি জানান, যেসব মিলিশিয়া সরকারি বাহিনীর সাথে যুদ্ধ করছে তাদের কাছ থেকে ত্রাণ-সাহায্য নিতেও তাদেরকে বাধা দেয়া হচ্ছে।

‘যে সামান্য কিছু শস্য আমরা লুকিয়ে রাখতে পেরেছিলাম, সেগুলো খাচ্ছি, কিন্তু এখন আর কিছু নেই,’ বলেন একজন কৃষক।

‘কেউ আমাদের কোনো ত্রাণ-সাহায্য দেয়নি। প্রায় সবাই এখন মৃত্যুর মুখে- ক্ষুধার কারণে আমাদের চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, পরিস্থিতি খুবই মারাত্মক। মৃত্যু আমাদের দরজায় কড়া নাড়ছে। আমাদের প্রত্যেকের মুখে আপনি ক্ষুধা দেখতে পাবেন।’

স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, তারা ত্রাণ-সাহায্য নিয়ে গাড়ি যেতে দেখেছেন, কিন্তু কেউ তাদের ব্যাপারে খোঁজ খবর নেয়ার কথা ভাবেনি।

এর আগে ১৯৮৪ সালে টিগ্রে এবং প্রতিবেশী ওল্লো প্রদেশে খরা ও যুদ্ধের কারণে দুর্ভিক্ষের সৃষ্টি হয়েছিল যাতে ছয় থেকে ১০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছিল বলে ধারণা করা হয়।

সমীক্ষার রিপোর্টে বলা হয়েছে, মে মাস পর্যন্ত ৫৫ লাখ মানুষ খাদ্য সঙ্কটে ভুগেছে এবং সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই পরিস্থিতির আরো অবনতি ঘটবে।

তবে এই রিপোর্টে আনুষ্ঠানিকভাবে দুর্ভিক্ষের কথা ঘোষণা করা হয়নি।

দুর্ভিক্ষ শব্দটি এতোই শক্তিশালী যে খুব সহজেই এটি ব্যবহার করা হয় না। কিছু শর্ত পূরণ করার পাশাপাশি বিভিন্ন সরকার ও আন্তর্জাতিক সংস্থা একমত হওয়ার পরেই কোনো এলাকায় দুর্ভিক্ষ ঘোষণা করা হয়।

এই রিপোর্টে টিগ্রে অঞ্চলের পরিস্থিতিকে দুর্ভিক্ষের বদলে ‘বিপর্যয়কর’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে সতর্ক করে দিয়েছে যে আগামী কয়েক মাসে ওই অঞ্চলে দুর্ভিক্ষ তৈরি হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।

সূত্র : বিবিসি


আরো সংবাদ



premium cement
‘নানা গুজবে’ সেন্টমার্টিনে বিধিনিষেধ বুটেক্স শিক্ষার্থীদের ওপর পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের হামলা না’গঞ্জের পপি হত্যায় স্বামীর মৃত্যুদণ্ড বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রংপুর মহানগর ও জেলা কমিটি গঠিত চট্টগ্রামে অগ্নি দুর্ঘটনার ঝুঁকিতে শতাধিক মার্কেট যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও বৈষম্যের শিকার পল্লবী ডিগ্রি কলেজের উপাধ্যক্ষ মাহবুব কুবির সাথে ইবনে সিনা ট্রাস্টের চুক্তি, ২৫ শাখায় মিলবে সেবা এলাকাবাসীকে চাঁদাবাজি থেকে বিরত থাকতে কায়কোবাদের খোলা চিঠি ধলেশ্বরী নদীর মোল্লারহাট ফেরিঘাট অবৈধ দখলদারের নিয়ন্ত্রণে মোহন মিয়ার মৃত্যুবার্ষিকী আজ ট্রাস্ট ফান্ড বৃত্তি পেলেন ঢাবির ১৫ শিক্ষার্থী

সকল