২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

বোমা-মাইনের ফাঁদ পেতে লিবিয়া ছেড়ে পালিয়েছে রাশিয়ার ভাড়াটে সেনারা

রাস্তায় থাকা বোমা - ছবি সংগৃহীত

রাশিয়ার ভাড়াটে সেনারা লিবিয়ার সব স্থানে বোমা-মাইনের ফাঁদ পেতে পালিয়েছে। রাস্তা, বাড়ি এমনকি পুতুলের মধ্যেও বিস্ফোরক বোমা পেতে রেখেছে তারা।

দেশটির স্থানীয় সময় সোমবার ব্রিটেনের দ্যা ইন্ডিপেন্ডেন্ট পত্রিকায় এ খবর প্রকাশ করা হয়েছে।

গত গ্রীষ্মে রাশিয়ার ভাড়াটে সেনারা লিবিয়ার রাজধানী ত্যাগ করে। তারা এ সময় লিবিয়ার রাজধানীর বিভিন্ন বাড়ির উঠানেও বোমা পেতে রেখেছে।

এ বিষয়ে ব্রিটেনের দ্যা ইন্ডিপেন্ডেন্ট পত্রিকা লিবিয়ার মাইন অপসারণ দলের বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে বলেছে, ‘তারা (রাশিয়ার ভাড়াটে সেনারা) টয়লেট, দরজা ও টেডি বিয়ার পুতুলের মধ্যেও বোমা পেতে রেখেছে। তারা এমনভাবে এগুলো পেতে রেখেছে যে ছোঁয়া লাগলেই বিস্ফোরিত হয়।

দ্যা ইন্ডিপেন্ডেন্ট পত্রিকার মতে সবচেয়ে নিকৃষ্ট উপায়ে বোমা পাতার উদাহরণ হলো কোমল পানীয়র (কোকাকোলা, পেপসি) খালি হয়ে যাওয়া স্টিলের ক্যানের মধ্যে বোমা পাতা। কারণ, ছোট ছোট লিবিয়ান বাচ্চারা খেলা করতে গিয়ে এ ক্যানগুলোকে পা দিয়ে চ্যাপ্টা করতে ভালোবাসে।

দ্যা ফ্রি ফিল্ড ফাউন্ডেশন নামের মাইন অপসারণ এজেন্সির প্রধান রাবি আল জাওয়াসি দ্যা ইন্ডিপেন্ডেন্ট পত্রিকাকে বলেন, ‘তারা আমাদেরকে খুব ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করেছে এমনকি আমাদের বাচ্চাদের খেলার ধরনও তারা জানে। তারা জানে আমরা কিভাবে চিন্তা করি।’

ব্রিটিশ এ পত্রিকাটির মতে, ‘রাশিয়ানদের এ বোমা-মাইনের ভয়ে হাজারো লিবিয়ান পরিবার তাদের বাড়ি ফিরতে পারছেন না।’

মাইন অপসারণে বিশেষজ্ঞ দলের এক প্রধান মোহামেদ জ্যালাটেনি বলেন, ‘এটা দেখতে খুবই দুঃখ লাগছে যে বিশ্বের মধ্যে লিবিয়াই সবচেয়ে বেশি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ।’

তিনি বলেন, ‘তারাই এ ধ্বংসযজ্ঞের জন্য দায়ী যারা গৃহযুদ্ধের সময় রাশিয়ানদের সমর্থন পেয়েছে। যদি বাইরে থেকে কোনো সমর্থন না পাওয়া যেত তবে এসব হতো না। আমরা লিবিয়ানরা এখন তাদের কারণে পস্তাচ্ছি।’

ওই দৈনিকটি আরো বলছে, ‘মাইন অপসারণকারীরা কয়েক ধরনের নতুন মাইন পেয়েছে। এ মাইনগুলোর মধ্যে রাশিয়ান স্কাটারিং মাইনও আছে। এ মাইনগুলো ছড়ানো-ছিটানো থাকে। এরা নিজেরাই সক্রিয় হয় এবং এক শ’ ঘণ্টার মধ্যে নিজেরাই বিস্ফোরিত হয়।

মুয়াম্মার গাদ্দাফিকে উচ্ছেদ ও হত্যার মাধ্যমে লিবিয়াতে গৃহযুদ্ধের সূচনা হয় ২০১১ সালে। ২০১৯ সালে যুদ্ধবাজ নেতা খলিফা হাফতার ত্রিপলিভিত্তিক আন্তর্জাতিক স্বীকৃত সরকারের পতন ঘটানোর জন্য সামরিক হামলা শুরু করলে লিবিয়ার গৃহযুদ্ধ চরম আকার ধারণ করে।

এদিকে লিবিয়ার নতুন ঐক্য সরকারের প্রধান দেশটির প্রধানমন্ত্রী আব্দুল হামিদ ডেবিবেহ ২০২১ সালের মার্চে শপথ গ্রহণ করেছেন।

সূত্র : ইয়েনি সাফাক


আরো সংবাদ



premium cement