লিবিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন মন্ত্রিসভার তালিকা প্রকাশ
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ১২ মার্চ ২০২১, ১৮:২৭
লিবিয়ার পার্লামেন্টে অনুমোদিত অন্তর্বর্তীকালীন মন্ত্রিসভার সদস্যদের নাম প্রকাশিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার পার্লামেন্ট দেশটির জাতীয় ঐক্যের সরকারের মন্ত্রিসভার তালিকা প্রকাশ করে।
এর আগে ৪ মার্চ অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী আবদুল হামিদ আল-দাবিবাহ পার্লামেন্টে অনুমোদনের জন্য তার মন্ত্রিসভার প্রস্তাবিত এক তালিকা পেশ করেন। আল-দাবিবাহর প্রস্তাবিত মন্ত্রিসভার তালিকা অনুমোদনে আলোচনার জন্য সোমবার লিবিয়ার উপকূলীয় সিরত শহরে মিলিত হয় পার্লামেন্ট সদস্যরা। দুই দিনের আলোচনার পর বুধবার উপস্থিত ১৩৩ সদস্যের মধ্যে ১৩২ সদস্যের ভোটে এই মন্ত্রিসভা অনুমোদন করা হয়।
লিবিয়ার নতুন জাতীয় ঐক্যের সরকারে দেশটির ঐতিহাসিক প্রধান তিন অঞ্চল; পশ্চিমের তারাবুলুস, পূর্বের বার্কা ও দক্ষিণের ফেজ্জান থেকে প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে এই মন্ত্রিসভা গঠন করা হয়।
নতুন এই মন্ত্রিসভায় প্রথমবারের মতো লিবিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিচ্ছেন পূর্বাঞ্চলের প্রতিনিধি নাজলা আল-মানকুশ। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থায় ১৫ বছর কাজের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন এই কর্মকর্তা ২০১২ সাল থেকেই যুক্তরাষ্ট্রে বাস করছেন।
অপরদিকে প্রধানমন্ত্রী আবদুল হামিদ আল-দাবিবাহ নতুন মন্ত্রিসভায় একই সাথে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করবেন। লিবিয়ার জাতীয় ঐক্য সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করবেন দক্ষিণাঞ্চলের প্রতিনিধি খালেদ তিজানি মাজেন।
দক্ষিণের খালেদ আল-মাবরুক আবদুল্লাহ নতুন মন্ত্রিসভায় অর্থ মন্ত্রণালয় ও পশ্চিমাঞ্চলের আহমদ মুহাম্মদ আউনকে তেল ও গ্যাস মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
নতুন মন্ত্রিসভায় ৩৩ সদস্যের মধ্যে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ছাড়াও আইন, সংস্কৃতি, নারী ও সমাজ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নারী মন্ত্রী নিয়োগ করা হয়েছে।
জাতিসঙ্ঘের পরিকল্পনার অধীনে, লিবিয়ার প্রধানমন্ত্রীর আগামী ১৯ মার্চ পর্যন্ত তার মন্ত্রিসভাকে অনুমোদন করিয়ে নেয়ার সময় ছিল। অনুমোদনের পর অন্তর্বর্তীকালীন লিবিয়ার জাতীয় ঐক্য সরকারের এই মন্ত্রিসভা ত্রিপোলিভিত্তিক পশ্চিমাঞ্চলের জাতিসঙ্ঘ সমর্থিত ফায়েজ আল-সাররাজের গভর্নমেন্ট অব ন্যাশনাল অ্যাকোর্ড (জিএনএ) সরকার ও তবরুকভিত্তিক পূর্বাঞ্চলীয় যুদ্ধবাজ নেতা জেনারেল খলিফা হাফতারের প্রশাসনের স্থানে প্রতিস্থাপিত হয়েছে।
পার্লামেন্টের অনুমোদনের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের এই মন্ত্রিসভার অধীনেই বছরের শেষে ২৪ ডিসেম্বর নির্ধারিত সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
জ্বালানি তেলসমৃদ্ধ লিবিয়ায় ২০১১ সালে আরব বসন্তের পরিপ্রেক্ষিতে সাধারণ মানুষ চার দশক দেশটি শাসন করা একনায়ক মুয়াম্মার গাদ্দাফির পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করে। গাদ্দাফি সামরিক পন্থায় বিক্ষোভকারীদের দমন করতে চাইলে দেশটিতে গৃহযুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ে। গৃহযুদ্ধের এক পর্যায়ে বিদ্রোহীদের হাতে গাদ্দাফি নিহত হলেও দেশটিতে বিভিন্ন পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ অব্যাহত থাকে। বিবাদমান পক্ষগুলোর মধ্যে সংঘর্ষ থেকে নতুন করে দ্বিতীয় পর্যায়ে ২০১৪ থেকে শুরু হওয়া গৃহযুদ্ধে দেশটি ত্রিপোলিকেন্দ্রীক পশ্চিম ও তবরুককেন্দ্রীক পূর্বাঞ্চলীয় সরকারের মধ্যে বিভক্ত হয়ে পড়ে।
গত বছরের অক্টোবরে জাতিসঙ্ঘ উভয়পক্ষকে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত করে এবং দেশটির সংকট সমাধানে বিবাদমান পক্ষগুলোর মধ্যে রাজনৈতিক সংলাপের সূচনা করে।
গত ৫ ফেব্রুয়ারি দীর্ঘ সংলাপের পর সুইজারল্যান্ডে বিবাদমান পক্ষগুলো দেশটিতে একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠনে সম্মত হয়। বিবাদমান পক্ষগুলো অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে পূর্বাঞ্চলের প্রতিনিধি দেশটির সাবেক কূটনীতিক মোহাম্মদ ইউনুস মানফি এবং প্রধানমন্ত্রী পদে প্রভাবশালী ব্যবসায়ী ও পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রতিনিধি আবদুল হামিদ আল-দাবিবাহকে নির্বাচিত করে।
সূত্র : আলজাজিরা ও ইয়েনি শাফাক
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা