২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে হোটেলে সেবা দিচ্ছে রোবট

অতিথিদের সেবা দিচ্ছে রোবট - ছবি : ডেইলি সাবাহ/রয়টার্স

করোনাভাইরাস মহামারীতে সারাবিশ্বে পর্যটন ব্যবসা সংকটের মধ্যে রয়েছে। নতুন ও উদ্ধাবনী সমাধানের সাহায্যে এই অবস্থা থেকে রক্ষায় চেষ্টা করছে হোটেলগুলো। প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবেলায় দক্ষিণ আফ্রিকার এমনই এক অতিথিশালা সেবা দানের জন্য নিয়োগ করেছে রোবট কর্মী।

দেশটির জোহানেসবার্গের সমৃদ্ধশালী স্যান্ডটন এলাকায় অবস্থিত হোটেল স্কাইয়ের কর্মীরা মাস্ক পরা ও অতিথিদের সাথে যত দূর সম্ভব নিরাপদ শারীরিক দূরত্ব মেনে চলাসহ করোনাভাইরাস প্রতিরোধে কঠোর প্রোটোকল মেনে চলেন। কিন্তু ওই হোটেলের তিন কর্মী, লেক্সি, মাইকা ও অ্যারিয়েলের করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সতর্কতার কোনো বালাই নেই। কেননা যান্ত্রিক কর্মী হওয়ায় চাইলেও মানুষকে নিঃশ্বাসের মাধ্যমে জীবাণুতে আক্রান্ত করার সুযোগ তাদের নেই।

এই বছর চালু হওয়া হোটেল স্কাই আফ্রিকাতে প্রথম হোটেল যাতে যান্ত্রিক কর্মী নিয়োগ দেয়া হয়েছে। রোবটের মাধ্যমে কাজের এই ধারণা বিশ্বের শোচনীয়তর কর্মহীনতার হারযুক্ত দেশটিতে উত্তেজনা তৈরি করতে পারে।

বৃহস্পতিবার দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসার জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে জানান, দেশটিতে বর্তমান বেকারত্বের হার ৩০ দশমিক আট ভাগ।

হোটেল স্কাইয়ের ম্যানেজিং ডিরেক্টর পল কেলি রয়টার্সকে বলেন, ‘এটি মানুষের বদলি হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে না, বরং জায়গার পরিবর্তন করা হচ্ছে। আমি মনে করি, এটিই ভবিষ্যতের অবস্থা।’

তিনি আরো বলেন, আগামী মাসে কেপটাউনে হোটেলটির একটি শাখা খোলার পরিকল্পনা করছেন তারা।

লেক্সি, মাইকা ও অ্যারিয়েল অতিথিদের রুম সার্ভিস, ভ্রমণের তথ্য দেয়াসহ মার্বেল ফ্লোরের লবি থেকে অতিথিদের কক্ষে তিন শ’ কেজি পর্যন্ত মাল বহন করে নিতে সক্ষম। হোটেলে করোনা সংক্রমণের লক্ষণ নিয়ে কোনো অতিথি আসলে সতর্কতার জন্য হোটেল কর্মীদের বদলে রোবট ব্যবহার করা হয়।

রোবটগুলো সরবরাহ করা সিটিআরএল রোবোটিক্সের সিইও স্টিভ পিন্টো বলেন, রোবট কর্মীরা কাস্টমারের মুখের ভাব স্ক্যান করে নির্ধারণ করতে সক্ষম তারা কতোটা সন্তুষ্ট।

তিনি বলেন, ‘এটি ম্যানেজমেন্টকে বুঝতে সহায়তা করে যে হোটেলের সুযোগ-সুবিধা গ্রাহকরা কিভাবে অনুভব করছেন।’

রোবট কর্মীর সেবা নিয়ে হোটলের গ্রাহকদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রয়া দেখা যায়। হোটেলের একজন অতিথি আর্নেস্ট মালেংগা বলেন, ‘উচ্চ বুদ্ধিসম্পন্ন রোবটও সব সময় আপনি যা চান তা দিতে পারবে না। আমি মনে করি বিশ্ব ক্রমাগতই ডিজিটাল ব্যবস্থায় পরিণত হওয়ার দিকে এগিয়ে চলছে কিন্তু আমরা এখনো এতে অভ্যস্ত নই। মানবিক স্পর্শ এখনো আমার জন্য আলাদা আবেদন তৈরি করে।’

রোবটের আতিথেয়তা নতুন কিছুই নয়। বহু বছর থেকেই জাপানের হোটেলগুলোতে রোবট কর্মীর নিয়োগ চলে আসছে। ২০১৫ সালে টোকিওর হেননা হোটেল বা স্ট্রেঞ্জ হোটেলে প্রথম যান্ত্রিক কর্মী নিয়োগ দেয়া হয়। বর্তমানে করোনাভাইরাস সংক্রমণে মাঝামাঝি আক্রান্ত অতিথিদের সেবার জন্য জাপানের হোটেলগুলোতে রোবট ব্যবহার করা হচ্ছে।

সূত্র : ডেইলি সাবাহ


আরো সংবাদ



premium cement