জাতিসঙ্ঘের তত্ত্বাবধানে লিবিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১৭:৪৪
উত্তর আফ্রিকার যুদ্ধবিধস্ত দেশ লিবিয়ার জাতিসঙ্ঘের তত্ত্বাবধানে দেশটির নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনের জন্য নির্বাচিত হয়েছেন গ্রিসে দেশটির রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করা মোহাম্মদ ইউনুস মানফি। পাশাপাশি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন দেশটির প্রভাবশালী ব্যবসায়ী আবদুল হামিদ মোহাম্মদ দাবিবাহ।
শুক্রবার সুইজারল্যান্ডের জেনেভার কাছাকাছি অজ্ঞাত এক স্থানে লিবিয়ার লড়াইরত বিভিন্ন পক্ষের প্রতিনিধিদের মধ্যে বৈঠকে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
লিবিয়ার পাঁচ বছরের বেশি সময় চলা গৃহযুদ্ধ ও বিভক্তির সমাধানের লক্ষ্যে নতুন এই ঐক্যবদ্ধ সরকারের ঘোষণা দেয়া হয়েছে।
বিবাদমান বিভিন্ন পক্ষের মোট ৭৪ সদস্য নিয়ে গঠিত লিবিয়ান পলিটিক্যাল ডায়লগ ফোরামের (এলপিডিএফ) বৈঠকে প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীসহ দেশটির অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রস্তাবিত চারটি ভিন্ন তালিকা উপস্থাপন করা হয়।
প্রথম দফার ভোটে কোনো পক্ষই নির্ধারিত ৫০ ভোট না পাওয়ায় দ্বিতীয় দফায় সর্বোচ্চ ভোট পাওয়া দুইটি তালিকা নিয়ে নির্বাচন হয়।
লিবিয়ায় জাতিসঙ্ঘের ভারপ্রাপ্ত বিশেষ দূত স্টিফানি উইলিয়ামস বৈঠকে তার বক্তৃতায় বলেন, ‘জাতিসঙ্ঘের পক্ষ থেকে এই ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী হতে পেরে আমি আনন্দিত।’
লিবিয়ায় শান্তি প্রতিষ্ঠার চ্যালেঞ্জ শেষ না হওয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনারা যাদের নির্বাচিত করলেন, তাদের কার্যক্রম আমরা পর্যবেক্ষণ করছি যে তারা এই বছরের ২৪ ডিসেম্বর লিবিয়ান জনগণকে গণতান্ত্রিকভাবে লিবিয়ার প্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতৃত্ব গঠনে সাহায্য করতে পারেন কিনা।’
আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারির ভেতর অন্তর্বর্তীকালীন নতুন প্রধানমন্ত্রী দাবিবাহকে মন্ত্রিসভা গঠন করতে হবে এবং তিন সপ্তাহের মধ্যে তা পার্লামেন্টে উত্থাপন করা হবে।
গত বছর বার্লিনে এক সম্মেলনে লিবিয়ার পূর্বাঞ্চলের প্রভাবশালী জেনারেল খলিফা হাফতারের সাথে পশ্চিমাঞ্চলের জাতিসঙ্ঘ সমর্থিত সরকারের যুদ্ধবিরতির পর দেশটিতে শান্তি প্রতিষ্ঠায় জাতিসঙ্ঘের একই কার্যক্রম শুরু করে।
এদিকে তুরস্ক লিবিয়ায় অন্তর্বর্তীকালীন নতুন সরকার গঠনের ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে।
তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘তুরস্ক নতুন দায়িত্বশীলদের বছরের শেষে দেশটিতে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সাহায্য অব্যাহত রাখবে এবং লিবিয়ায় নিরাপত্তা পুনঃপ্রতিষ্ঠায় কাজ করবে।’
২০১১ সালে আরব বসন্তের পরিপ্রেক্ষিতে লিবিয়ায় সাধারণ মানুষ চার দশক দেশটি শাসন করা একনায়ক মুয়াম্মার গাদ্দাফির পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করে। গাদ্দাফি সামরিক পন্থায় বিক্ষোভকারীদের দমন করতে চাইলে দেশটিতে গৃহযুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ে। গৃহযুদ্ধের এক পর্যায়ে বিদ্রোহীদের হাতে গাদ্দাফি নিহত হলেও দেশটিতে বিভিন্ন পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ অব্যাহত থাকে। বিবাদমান পক্ষগুলোর মধ্যে সংঘর্ষ থেকে নতুন করে দ্বিতীয় পর্যায়ে ২০১৪ থেকে শুরু হওয়া গৃহযুদ্ধে দেশটি ত্রিপোলিকেন্দ্রীক পশ্চিম ও তবরুককেন্দ্রীক পূর্বাঞ্চলীয় সরকারের মধ্যে বিভক্ত হয়ে পড়ে।
সূত্র : আলজাজিরা, আনাদোলু এজেন্সি, রয়টার্স
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা