২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

লিবিয়ায় হাফতার বাহিনীর বিমান হামলায় নিহত ৪৪

হামলায় বিধ্বস্ত অভিবাসী কেন্দ্র - ছবি : সংগৃহীত

লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলির তাজৌরা এলাকায় একটি অভিবাসী আটক কেন্দ্রে বিমান হামলায় অন্তত ৪৪ জন নিহত হয়েছেন বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। আহত হয়েছেন আরো অন্তত ১৩০ জন। হতাহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে। লিবিয়ায় জাতিসঙ্ঘের মুখপাত্র ঘাসান সালাম এ হামলাকে যুদ্ধাপরাধের সাথে তুলনা করেছেন।

নিহতদের বেশির ভাগ আফ্রিকান অভিবাসনপ্রত্যাশী বলে জানা গেছে। তারা লিবিয়া থেকে সাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপ পৌঁছানোর চেষ্টা করছিলেন।

লিবিয়ার জরুরি বিভাগগুলোর মুখপাত্র ওসামা আলি জানিয়েছেন, অভিবাসী আটক কেন্দ্রটিতে ১২০ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী ছিলেন। বিমান হামলায় এটি সরাসরি আক্রান্ত হয়েছে। নিহতের এ সংখ্যা প্রাথমিকভাবে গণনা করা এবং এটি আরো বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি।
এ হামলার জন্য সাবেক জেনারেল খলিফা হাফতারের নেতৃত্বাধীন স্বঘোষিত লিবিয়ান ন্যাশনাল আর্মিকে (এলএনএ) দায়ী করেছে লিবিয়ার জাতিসঙ্ঘ সমর্থিত জাতীয় ঐকমত্যের সরকার (জিএনএ)। সরকারের প্রধানমন্ত্রী ফায়েজ আল-সেরাজ অভিযোগ করেন, স্ব-নিয়ন্ত্রিত লিবিয়ান ন্যাশনাল আর্মি ওই শিবিরে হামলা চালিয়েছে। তিনি বলেন, এই জঘন্য অপরাধ পূর্বপরিকল্পিত ও নিখুঁত।

বিমান হামলাটি যেখানে হয়েছে সেই তাজৌরা এলাকায় জিএনএ এর অনুগত বাহিনীগুলোর সাথে এলএনএ-এর লড়াই চলছে। বাহিনীটি গত সোমবার ঘোষণা দেয়, প্রচলিত যুদ্ধের সব কৌশল ব্যর্থ হওয়ায় ত্রিপলিতে বিভিন্ন জায়গায় বিমান হামলা চালাবে তারা। যদিও বাহিনীটির একজন মুখপাত্র জানান, তারা ওই অভিবাসী আটক কেন্দ্রে হামলা চালাননি। এলএনএ জানায়, বন্দী শিবিরের কাছেই সরকারের একটি শিবির লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালায় তারা। যার জবাবে পাল্টা শেল ছোড়ে সরকারি বাহিনী। ওই শেলগুলোর একটি দুর্ঘটনাবশত অভিবাসী বন্দী শিবিরে আঘাত করে।

লিবিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা ডা: খালিদ বিন আতিয়া ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বলেন, প্রায় সব জায়গায় মানুষ ছিল। শিবিরটি ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। যেখানে সেখানে মানুষের কান্নাকাটি করতে দেখা গেছে। অনেকেই মানসিক আঘাতে হতবিহবল হয়ে গিয়েছিল। বিচ্ছিন্ন ছিল বিদ্যুৎ সংযোগও। আমরা পুরো এলাকা পরিষ্কারভাবে দেখতে পাচ্ছিলাম না। কিন্তু অ্যাম্বুলেন্স আসার পর যা দেখলাম তা ভয়ঙ্কর ছিল। রক্ত ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল। মানুষের শরীরের টুকরোও পড়ে থাকতে দেখেছি।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে অভিবাসন প্রত্যাশীদের ইউরোপে যাওয়ার প্রধান রুটে পরিণত হয়েছে লিবিয়া। এখানে হাজার হাজার ইউরোপে গমনপ্রত্যাশীকে আটক করে এ ধরনের অভিবাসী আটক কেন্দ্রগুলোতে রাখা হয়েছে। ত্রিপোলিকে কেন্দ্র করে লিবিয়ার প্রতিদ্বন্দ্বী দুই বাহিনীর লড়াই সম্প্রতি এসব আটক কেন্দ্রের এলাকাগুলোতে ছড়িয়ে পড়েছে।

২০১১ সালে দেশটির সাবেক শাসক মুয়াম্মার গাদ্দাফিকে ক্ষমতাচ্যুত করে হত্যার পর থেকে লিবিয়ায় সহিংসতা বিরাজ করছে এবং দেশটি প্রতিদ্বন্দ্বী সরকার ও বাহিনীগুলোর মধ্যে বিভক্ত হয়ে আছে। তবে কোনো কর্তৃপক্ষই লিবিয়ার পুরো নিয়ন্ত্রণ নিতে পারেনি। চরমভাবে অস্থিতিশীল দেশটির নিয়ন্ত্রণ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক এবং সামরিক গোষ্ঠীর হাতে। যাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য দুটি গোষ্ঠীর মধ্যে একটি প্রধানমন্ত্রীর সেরাজের নেতৃত্বাধীন এবং অপরটি জেনারেল হাফতারের নিয়ন্ত্রণাধীন।

গত এপ্রিলে সরকারের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেন জেনারেল হাফতার। চার দশক ধরে লিবিয়ার রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন জেনারেল হাফতার। ১৯৮০-এর দশকে মতবিরোধের জেরে যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাসনের আগ পর্যন্ত গাদ্দাফির মিত্র ছিলেন তিনি। ২০১১ সালের আন্দোলনের পর দেশে ফিরে পূর্বাঞ্চলে নিজের শক্ত ঘাঁটি গড়ে তোলেন তিনি। সমর্থন পান ফ্রান্স, মিসর এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের। গাদ্দাফি সংশ্লিষ্টতা এবং যুক্তরাষ্ট্রের সাথে যোগাযোগ থাকার কারণে তার প্রতি মানুষের মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে।  আলজাজিরা, রয়টার্স ও বিবিসি


আরো সংবাদ



premium cement
‘আইনজীবিকে হত্যা করে ইসকন দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের চেষ্টা করছে’ চিন্ময় দাসের গ্রেফতার নিয়ে আক্রমণাত্মক ভারত ‘ইসকনের ষড়যন্ত্রে পা দেবেন না’ মিরসরাইয়ে আইনজীবী সাইফুলের গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত আইনজীবী সাইফুল হত্যায় সিলেটে ল’ইয়ার্স কাউন্সিলের প্রতিবাদ বরিশালে জুলাই গণহত্যার বিচারের দাবিতে ছাত্রশিবির বিক্ষোভ জাতীয় ঐক্যের সাথে সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার অন্তর্বর্তী সরকারকে শক্ত হাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের আহ্বান তারেক রহমানের সিলেটে হোটেল থেকে লাশ উদ্ধার সাম্প্রদায়িক উস্কানি ছড়াচ্ছে ইসকন : মামুনুল হক ইসলামি আন্দোলনকে নিঃশেষ করতে আ'লীগ ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে : মাসুদ সাঈদী

সকল