২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

কোথাও আশ্রয় না পেয়ে গাছের ডালেই সন্তান জন্ম!

বন্যার কারণে কোনো আশ্রয় না পেয়ে গাছের ডালে বসেই সন্তান জন্ম দিয়েছেন এমিলিয়া - সংগৃহীত

চারদিকে পানি থইথই করছে। মানুষ নিজের আশ্রয়স্থল খুঁজে নিতে ছুটছে চারদিকে। তখন গর্ভবতী এমিলিয়া খোঁজ করছিলেন একটি নিরাপদ আশ্রয়স্থল। দুই বছরের শিশু সন্তান আর অনাগত সন্তানকে কোথায় প্রসব করবেন? এমন অসহায়ত্বের শেষ পর্যায়ে এসেও মেলেনি কোনো আশ্রয়স্থল। গাছের ডালই হয় তার সর্বশেষ আশ্রয়স্থল। আর সেখানেই তিনি জন্ম দিয়েছেন তার দ্বিতীয় সন্তানের। আফ্রিকান নারী এমিলিয়া জানালেন তার সেই অসহায়ত্বের কথা।

গত মার্চ মাসে আইডাই নামক ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চলে। ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী বন্যা দেখা দেয় আফ্রিকার অন্যান্য দেশগুলোর মতো মোজাম্বিকেও। তলিয়ে যেতে থাকে মানুষের ঘর-বাড়ি, ক্ষেত-খামার। এমন ভয়াবহ অবস্থায় এমিলিয়া নামের এই গর্ভবতী নারী তার দুই বছরের শিশুকে নিয়ে খোঁজ করতে থাকেন নিরাপদ একটি আশ্রয়স্থল। যেখানে নিরাপদে নিজের অনাগত সন্তানকে পৃথিীর আলোতে আনতে পারেন।

নিজের বাসস্থান হারিয়ে, চারদিকে বন্যার পানি থাকায় তিনি কোথাও বের হতে পারছিলেন না ছোট্ট শিশু সন্তানকে নিয়ে। এমন অবস্থায় শিশু সন্তানকে নিয়ে একটি আম গাছে আশ্রয় নেন গর্ভবতী এমিলিয়া। সন্তান নিয়ে গাছের ডালে আশ্রয় নেয়ার কিছুক্ষণ পরেই শুরু হয় তার প্রসব বেদনা।

পাশে এই সময় দুই বছরের শিশু সন্তান ছাড়া সাহায্য করার মতো আশেপাশে ছিল না কোনো মানুষ। তীব্র যন্ত্রণায় ছটফট করতে করতে একসময় গাছের ডালেই ফুটফুটে এক কন্যা শিশুর জন্ম দেন এমিলিয়া। মা ও মেয়ে দুইজনই সুস্থ্য থাকায় চোখেমুখে আনন্দের ঝিলিক খেলে যায় এমিলিয়ার।

কিন্তু অনিশ্চয়তার শেষ যেন তখনও হয়নি। গাছের ডালে আশ্রয় পেলেও সাথে ছিল না কোনো খাবার। তাই নবজাতক সন্তানকে নিয়ে কোনো খাবার খাওয়া হয়নি দুইদিন। বাধ্য হয়ে অনাহারে দুইদিন নবজাতক ও দুই বছরের শিশু সন্তানকে নিয়ে গাছের ডালেই অবস্থান করেন তিনি। পরে খবর পেয়ে তাদের সেখান থেকে উদ্ধার করেন প্রতিবেশীরা।

সম্প্রতি ইউনিসেফের সাথে এক সাক্ষাৎকারে সন্তান প্রসবের সেই ভয়ঙ্কর ঘটনা বর্ণনা করেন এমিলিয়া। সাক্ষৎকারে তিনি বলেন,‘বন্যার পানি হঠাৎ করেই আমার বাড়িতে প্রবেশ করে। আশ্রয়ের জন্য গাছে ওঠা ছাড়া আমার আর কোনো উপায় ছিল না। শিশু সন্তানকে নিয়ে আমি সম্পূর্ণ একা ছিলাম। কিন্তু গাছে ওঠার পরই আমার প্রসব ব্যথা শুরু হয়। চারপাশে আমাকে সাহায্যের জন্য ছিল না কোনো মানুষ।’

তিনি আরো বলেন,‘গাছের মাথাতেই আমার মেয়ে সারার জন্ম হয়। আর এরপর কোনো উপায় না পেয়ে ছেলেকে নিয়ে গাছের ডালেই বসেছিলাম।’

বন্যার কারণে এখনো নিজেদের বাড়িঘরে ফিরতে পারছে না মানুষ। বর্তমানে এমিলিয়া তার শিশুদের নিয়ে ডোম্বরি নামে একটি উন্নত আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছেন।

উল্লেখ্য, আইডাই ঘূর্ণিঝড় ও বন্যার কারণে সম্প্রতি দক্ষিণ আফ্রিকায় সাত শতাধিক মানুষ নিহত হয়। তাছাড়া এই দুর্যোগে ৫০ হাজারেরও বেশি বসতবাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে। সূত্র : বিবিসি।


আরো সংবাদ



premium cement
আইনজীবী হত্যায় উত্তাল চট্টগ্রাম জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে : ড. ইউনূস বাংলাদেশের রাজনৈতিক নেতৃত্বকে বিভক্ত না হতে মাহাথিরের আহ্বান ইসরাইল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর তিন মাস পার হলেই সব ঋণ খেলাপি মিয়ানমারের জেনারেল মিন অংয়ের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা চাইলেন আইসিসির প্রসিকিউটর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় খালাস পেলেন খালেদা জিয়া কিছু মানুষ জাতিকে বিভাজনের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন : ফখরুল আইনজীবীর হত্যাকারী ‘বঙ্গবন্ধু সৈনিক’ শুভ কান্তি দাস কে? এশিয়া ডেমোক্র্যাসি অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস অ্যাওয়ার্ড পেল অধিকার চিন্ময় ইস্যুতে ভারতের বিবৃতি দেয়া অনধিকার চর্চা : উপদেষ্টা নাহিদ

সকল