মৃতকে জীবিত করতে ব্যর্থ হয়ে গণধোলাইয়ের শিকার ভণ্ড ‘নবী’
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ২২ জুলাই ২০১৮, ১০:৩০
নিজেকে নবী বলে দাবি করেন আফ্রিকার দেশ ইথিওপিয়ার নাগরিক আয়েলে।
একদিন দেশটির ওরোমিয়া অঞ্চলের ছোট গালিলি শহরে গিয়ে হাজির হলেন।
সেখানে সম্প্রতি মারা গেছেন এমন এক ব্যক্তির পরিবারের কাছে গিয়ে বিশাল এক গল্প ফাঁদলেন যে তিনি মৃত ব্যক্তিকে প্রাণ দিতে পারেন।
শোকসন্তপ্ত পরিবারকে তিনি শোনালেন সেইন্ট লাযারুসের গল্প।
যার লাশে যিশুখ্রিস্ট প্রাণ ফিরিয়ে দিয়েছিলেন বলে বাইবেলে উল্লেখ রয়েছে।
এই গল্পে শোক সন্তপ্ত পরিবারটির মনে যেন আশার সঞ্চার হল।
গল্পটি তাদের এতই মনে ধরল যে তারা তাদের মৃত আত্মীয় বেলায়ের লাশ কবর থেকে তুলতে রাজি হয়ে গেলেন।
লাশটিকে জ্যান্ত করার জন্য যা করছিলেন আয়েলে তার একটি ভিডিও ইথিওপিয়াতে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে রীতিমতো ভাইরাল হয়ে গেছে।
লাশটি কবর থেকে তোলা হলে আয়েলে ঠিক তার উপর শুয়ে পরেন।
তার অসংখ্যবার চিৎকার করে উন্মাদের মতো বলতে থাকেন, ‘ওঠো, ওঠো’।
কিন্তু তাতে কোনা কাজ হল না।
লাশটি প্রাণ ফিরে পাওয়া তো দূরে থাক, একটি আঙুলও নাড়ল না।
সেসময় কয়েকজন অজ্ঞানও হয়ে গিয়েছিলেন।
মৃতের বাকি স্বজনেরা ভয়াবহ ক্ষেপে গেলেন। অতঃপর শুরু হল ধোলাই।
তিনি নিজেও সম্ভবত অচিরেই লাশ হয়ে যেতেন যদি সময়মত পুলিশ এসে না পৌঁছাত।
যদিও তার অর্থ এই নয় যে তিনি বেঁচে গেলেন।
পুলিশ এসে তার প্রাণ বাঁচালেও তাকে গ্রেফতার করে নিয়ে গেলো।
স্থানীয় পুলিশ কমিশনার বিবিসিকে জানিয়েছেন, ইথিওপিয়াতে লাশকে বিকৃত করা বা তার অপব্যবহার করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
তিনি আরো জানান, আয়েলে আসলে পেশায় একজন স্বাস্থ্যকর্মী এবং তিনি এখনো পুলিশের জিম্মায় রয়েছেন।
আরো পড়ুন :
গোয়ালন্দে ভণ্ড কবিরাজের খপ্পড়ে কিশোর সাইদের মৃত্যু
রাজবাড়ী সংবাদদাতা, ২৯ অক্টোবর ২০১৫
ভণ্ড কবিরাজের খপ্পড়ে পড়ে গত বুধবার রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার সাইদ মণ্ডল (১৬) নামে এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। সাইদ উপজেলার উজানচর ইউনিয়নের শাহা মাতুব্বরপাড়ার হাসেম মণ্ডলের ছেলে। স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত ১০ অক্টোবর সকালের দিকে বাড়ির টিউবওয়েলে হাত-মুখ ধুতে গিয়ে হাত-পা অবশ হয়ে মাটিতে পড়ে গেলে বাড়ির লোকজন ধরাধরি করে তাকে ঘরে তোলে।
ছেলের শরীরে খারাপ বাতাস লেগেছে ভেবে স্থানীয় ফকির কবিরাজদের কাছ থেকে ঝাড়-ফুঁক এবং তেল পড়া, পানি পড়া দিয়ে চিকিৎসা করাতে থাকে সাইদের পরিবার। প্রতিবেশীদের কেউ কেউ সাইদকে হাসপাতালে নেয়ার পরামর্শ দিলেও তার বাবা কারো পরামর্শে কর্ণপাত করেননি।
এভাবে কয়েক দিন যাওয়ার পর অবস্থার অবনতি হলে চর দৌলতদিয়া এলাকার আবদুল খালেক নামে এক কবিরাজের শরণাপন্ন হন তিনি। ওই কবিরাজ সাইদকে কয়েক দিন তার বাড়িতে রেখে কথিত চিকিৎসার পর গত মঙ্গলবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। ওই দিন রাতে বাড়িতে বৈঠক বসিয়ে কথিত জ্বিন হাজির করার মাধ্যমে সাইদকে সুস্থ করার অপচেষ্টা করা হয়। এর খরচ হিসেবে কয়েক হাজার টাকা হাতিয়ে নেয় সে।
এ দিকে অবস্থার আরো অবনতি হলে গত বুধবার সকালের দিকে স্থানীয় কয়েকজন সাইদকে নিয়ে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। খবর পেয়ে সাইদের বাবা ফোন করে ওই লোকদের গালাগাল করে এবং হাসপাতালে নিতে নিষেধ করে। এরপর মাঝ পথ থেকে তিনি গুরুতর অবস্থায় সাইদকে ফরিদপুর টেপাখোলা এলাকার আরেক ফকিরের কাছে নিয়ে যান। কিন্তু অবস্থা বেগতিক দেখে ওই ফকির সাইদকে ফিরিয়ে দেয়। এরপর রাতে সাইদকে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে রাত ১১টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
এ প্রসঙ্গে সাইদের বাবা হাসেম মণ্ডল জানান, হাসপাতালে নিয়ে ইনজেকশন দিলে আমার ছেলে চিরতরে পঙ্গু হয়ে যাবে বলে আমাকে বুঝিয়েছিল ফকির-কবিরাজেরা। এসব ভণ্ড ফকির-কবিরাজের কথা শুনে আমি আমার ছেলেকে হারালাম।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা