আফ্রিকায় ধর্ষকদের রক্ষায় আইনি ফাঁকফোকর নিয়ে প্রতিবেদন
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১০:১৮
আন্তর্জাতিক এনজিও ইকুয়ালিটি নাউ-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আফ্রিকার ২৫টি দেশে ধর্ষণের যে সংজ্ঞা দেয়া হয়েছে, তাতে অনেক অপরাধীকে শাস্তি না দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
এতে বলা হয়, এ ধরনের সংকীর্ণ সংজ্ঞায় প্রায়ই অভিযুক্ত ধর্ষকদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত অভিযোগগুলোকে তুলনামূলক কম শাস্তিসহ হাল্কা অপরাধে নামিয়ে আনা হয়।
আফ্রিকার ৪৭টি দেশে ধর্ষণের শিকার নারীদের জন্য আইন প্রণয়ন, বাস্তবায়ন ও ন্যায়বিচার পাওয়ার ক্ষেত্রে ফাঁকফোকর উন্মোচন করে ৪৬ পৃষ্ঠার এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বব্যাপী ৩৫ শতাংশ নারী শারীরিক অথবা যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছেন। আফ্রিকার প্রায় ৩৩ শতাংশ নারী তাদের জীবদ্দশায় যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছেন।
ইথিওপিয়া, সুদান এবং ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক অফ কঙ্গোতে সংঘাতের সময় যৌন সহিংসতার উচ্চ হার নথিভুক্ত করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, সম্প্রদায়গুলোকে অবজ্ঞা করতে, ক্ষমতাহীন করতে এবং মনোবল ভেঙে দিতে, এই দেশগুলোতে ধর্ষণকে যুদ্ধের অস্ত্রের হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছিল।
স্যালি এনকিউব ইকুয়ালিটি নাউ-এ দক্ষিণ আফ্রিকার আঞ্চলিক প্রতিনিধি। তিনি জিম্বাবুয়ের একটি মেসেজিং অ্যাপের মাধ্যমে জানান, ধর্ষণের সংকীর্ণ আইনি সংজ্ঞা দীর্ঘদিন ধরে অনেক দেশে অপরাধীদের দায়মুক্তি দিতে সহায়ক হয়েছে।
এনকিউব বলেন, ‘উদাহরণস্বরূপ, ঘনিষ্ঠ সাথীর সাথে সংঘটিত ধর্ষণ বা তুলনামূলক কম শাস্তির সাথে এই লঙ্ঘনকে অপেক্ষাকৃত কম অপরাধে পরিণত করে যার ফলে অপরাধের শ্রেণিবিন্যাস তৈরি হয় এবং প্রতিটি ব্যক্তির শারীরিক স্বায়ত্তশাসনের নিরঙ্কুশ অধিকার সম্পর্কে এতে বিভ্রান্তিকর সঙ্কেত যায়।’
প্রতিবেদনে আফ্রিকার ২৫টি দেশের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, যেখানে ধর্ষণের আইনি সংজ্ঞা খুব সংকীর্ণ। এর মধ্যে রয়েছে ক্যামেরুন, দক্ষিণ সুদান, চাদ, ইকুয়েটোরিয়াল গিনি, গ্যাবন, গাম্বিয়া, মোজাম্বিক ও মালাউই।
এ বছরের শুরুতে প্রকাশিত পারিবারিক আইনের ফাঁকফোকর সম্পর্কে ইকুয়ালিটি নাউ-এর একটি প্রতিবেদনে দেখা গেছে, মালাউইয়ের প্রথাগত আইন বিবাহিত সম্পর্কে যৌন সম্পর্কের জন্য চিরস্থায়ী সম্মতি অনুমান করে এবং একজন স্ত্রী কেবল তখনই তার স্বামীর সাথে যৌন সম্পর্কে রত হতে অস্বীকার করতে পারে যখন সে অসুস্থ হয় বা আইনত পৃথক হয়ে যায়।
এনকিউব বলেন, আফ্রিকান সরকারগুলোর নিশ্চিত করা উচিত যে ধর্ষণের অপরাধ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের মানদণ্ড পূরণ করে।
সূত্র : ভিওএ