কারা কেন্টিনের লভ্যাংশের টাকা কারারক্ষীদের দেয়ার নির্দেশ
- মনির হোসেন
- ২৪ জুন ২০২০, ০৯:৫৪, আপডেট: ২৪ জুন ২০২০, ০৯:৫১
কারা কেন্টিনে পণ্য বিক্রির লভ্যাংশের টাকা কারারক্ষীদের মধ্যে বণ্টন করতে নির্দেশনা দিয়েছে কারা অধিদফতর। তবে কারাগারের মুখপাত্র মনজুর হোসেন এমন অফিস আদেশ দেশের কারাগারগুলোতে পাঠানোর কথা অস্বীকার করছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কিশোরগঞ্জ জেলা কারাগারের জেলার নাছির উদ্দিন সম্প্রতি উপস্থিত কারারক্ষীদের রোলকলে কারা অধিদফতরের ডিআইজি প্রিজন্স (হেডকোয়াটার্স) তৌহিদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত একটি চিঠি পড়ে শোনান। ওই চিঠিতে উল্লেখ রয়েছে, ‘কারাগারের কেন্টিন থেকে পণ্য বিক্রির যে লভ্যাংশ পাওয়া যাবে তা প্রত্যেক কারাগারের দায়িত্বরত কারারক্ষীদের মধ্যে বণ্টন করে দেয়া হবে। জেলার নাছির উদ্দিন এমন নির্দেশনা রোলকলে জানানোর পরও অদ্যাবধি কোনো কারারক্ষী কেন্টিনের টাকার লভ্যাংশের ভাগ পাননি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সূত্র জানিয়েছে, গত ৩০ মে কিশোরগঞ্জ কারাগারের জেলার নাছির উদ্দিনের এমন ঘোষণা দেয়ার সময় উপস্থিত ছিলেন সার্জেন্ট লালমিয়া ও সর্বপ্রধান কারারক্ষী আমিনুলসহ ৩৭-৩৮ জন কারারক্ষী। এ সময় জেলার তাদের বলেছেন, এটা ডিআইজি প্রিজন্স তৌহিদুল ইসলামের নির্দেশটি পড়ে শোনানো হলো- বিষয়টির সত্যতা জানতে গতকাল রাতে জেলার নাছির উদ্দিন এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি টেলিফোন ধরেননি।
বর্তমানে কিশোরগঞ্জ কারাগারের ভেতরের কারা কেন্টিন পরিচালনা করছে কারারক্ষী রুবেল আর বাইরের কেন্টিন পরিচালনা করছেন কারারক্ষী রাশেদ। ভেতরের কেন্টিন থেকে প্রতি মাসে চার লাখ টাকা আর বাইরের কেন্টিন থেকে এক লাখ টাকা করে কারাকর্তৃপক্ষের কাছে দেয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে। করোনাভাইরাসের প্রার্দুভাবের কারণে কারারক্ষীদের দুঃসময়ে পাশে থাকার জন্যই কারা কর্তৃপক্ষ এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট কারারক্ষীরা। আর এটি শুধু কিশোরগঞ্জ জেলা কারাগারের কেন্টিন থেকে দেয়া হচ্ছে তা কিন্তু নয়, ঢাকা বিভাগের প্রতিটি কারাগারের কারা কেন্টিন থেকেই লভ্যাংশের টাকা কারারক্ষীদের মধ্যে বিতরণের নির্দেশনা রয়েছে।
কারা অধিদফতরের ডিআইজি প্রিজন্স (হেডকোয়াটার্স) ও অতিরিক্ত দায়িত্ব পাওয়া ঢাকা বিভাগের ডিআইজি প্রিজন্স তৌহিদুল ইসলামের সাথে মঙ্গলবার এ বিষয়ে কথা বলতে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।
তবে কারা অধিদফতরের মুখপাত্র ও সহকারী কারা মহাপরিদর্শক মো: মনজুর হোসেনের সাথে মঙ্গলবার সন্ধ্যার আগে যোগাযোগ করা হলে তিনি নয়া দিগন্তকে বলেন, কারা কেন্টিনের লভ্যাংশের টাকা কারারক্ষীদের মধ্যে দেয়ার লিখিত আদেশ কারা অধিদফতর থেকে কোনো কারাগারে পাঠানো হয়নি। এমনকি মৌখিক নির্দেশনাও।
উল্লেখ্য, সারা দেশে ৬৮ কারাগারের ভেতরে ও বাইরে একটি করে কারা কেন্টিন স্থাপন করা হয়েছে। এই কেন্টিনগুলো কারারক্ষীদের কাছ থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা নিয়ে পরিচালনা করার সুযোগ দেয়া হয়। পর্যায়ক্রমে একেকজন কারারক্ষী তিন মাসের জন্য দায়িত্ব পালন করে থাকেন। তবে বেশির ভাগ কারাগারের কারা ক্যান্টিন থেকেই বাজার মূল্যে দ্বিগুণের বেশি দামে পণ্য বিক্রির অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি কারাগারে বন্দীদের সাথে স্বজনদের সাক্ষাৎ বন্ধ হওয়ায় বাইরের কেন্টিনের বিক্রি কমেছে। তবে ভেতরের কেন্টিন থেকে বিক্রি আগের মতোই রয়েছে বলে জানা গেছে।