২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

সবুজ ধান ক্ষেত

সবুজ ধান ক্ষেত -

শরতের শেষ বিকেল। পরিচিত সেই সুনীল আকাশে ভেসে বেড়ায় ধূসর মেঘ। সারা দিনের বিচরণ শেষে সকালের সেই প্রখর রৌদ্রোজ্বল সূর্যটা পশ্চিম আকাশে। তার সোনালি আলোকচ্ছটায় বড্ড হ্রাস পেয়েছে। আপন গৃহে প্রত্যাবর্তনের প্রস্তুতি নিচ্ছে যেন। ঝিরিঝিরি বাতাস বইছে। শেষ বিকেলের এই হৃদয় জুড়ানো স্নিগ্ধ হাওয়া শরীরে লাগলেও মুহূর্তেই তার শীতলতা পৌঁছে যাচ্ছে হৃদয়ের অভ্যন্তরে। বড় রাস্তা হতে নেমে একটু দূরেই যেন সবুজের সমুদ্র, বিশাল ধানক্ষেত। মৃদু বাতাসের সাথে অল্পবয়স্ক কচি ধানগাছগুলো মনের আনন্দে খেলছে। তরতাজা ধানগাছগুলোর সাথে ক্ষেতের আলের কচি ঘাসগুলোর যেন রয়েছে গভীর মিতালী। প্রায়ই ছুটে যাই এই সবুজ সাগরে হৃদয় জুড়ানোর জন্য। কী অপরূপ সৌন্দর্য। যেন পরম আদরে কাছে টেনে নেয় সবাইকে। আলত করে ছুঁয়ে দেই কচি ধানগুলোকে। কচি সবুজ ধানগাছের শীষগুলো যদিও একটু খশখশে, কিন্তু নরম। যেন লজ্জা পেয়ে নিজেকে গুটিয়ে নেয়। ‘এই যাও আমাকে ধরবে না একদমই।’
সবুজ সুন্দর ধান গাছগুলো যখন বাতাসে দোল খায়, তখন কি যে ভালো লাগে তা প্রকাশ করার মতো নয়। ধনের চারাগুলো পরস্পর পরস্পরের গায়ে লুটিয়ে পরে। বাতাসের প্রকোপ কমলে আবার চলে আসে স্বস্থানে। বাতাসের তালে ধান গাছের এমন ছন্দময় দোলাচল ভীষণভাবে আন্দোলিত করে আমার মনকে। ক্ষেতের আল দিয়ে দু’হাতে দু’দিকের ধান গাছগুলো ছুঁয়ে যখন আমি বিলের মাঝখানে হেঁটে যাই, তখন তো অদ্ভুত শিহরণ জাগে মনে। ঘন সবুজ গালিচার মতো এই মনোমুগ্ধকর ধানক্ষেতের মধ্যে দাঁড়িয়ে আছে একটি কাকতাড়ুয়া। ধানবীজ ক্ষেতে বুননের সময় তাকে দাঁড় করানো হয়েছিল। সে সঙ্গীহীন। সম্পূর্ণ নিঃসঙ্গ।
কারো সাথেই তার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক নেই। তবে বাতাসের সাথে তার গভীর ভাব। শুধু তার সাথেই সে মনের আনন্দে এদিক ওদিক দুলতে থাকে। যেন কথা কয়। আমার ভীষণ ইচ্ছে করে দু’হাত দু’দিকে লম্বা করে ওর পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে। স্বার্থ পিপাসু হিংসাপরায়ণ লোকদের সঙ্গ হতে এই নিঃসঙ্গ কাকতাড়ুয়া জীবনই অধিক উত্তম। কোনো জুট ঝামেলা নেই।নেই কোনো অভিযোগ কিংবা বিচ্ছেদের ভয়। কালো হাঁড়িতে সাদা চুন দিয়ে আঁকা ওর ভয়ঙ্কর মুখাবয়বও এই শান্ত স্নিগ্ধ বিকেলে ভীষণ ভালো লাগে। বারবার যেন সে বুঝিয়ে দেয়। তুমি যেমনই হও ভেঙে পড়ো না। নিজের কাজটা চালিয়ে যাও যথাযথভাবেই। নিঃসঙ্গতা কোনো আহামরি কিছু নয়। এই দেখো কত নিঃসঙ্গতার সাথে আমি পাখি তাড়িয়ে যাচ্ছি। জোছনাহীন অন্ধকার রাতেও আমি ভয় পাই না। তুমিও এমনই হও। মন খারাপ হলেই খেতের আল দিয়ে মস্ত বড় বিলের মধ্যে চলে যেতে ইচ্ছে হয়। যতদূর চোখ যায় শুধু ধান ক্ষেত আর ধান ক্ষেত। তারপর দু’হাত দু’দিকে লম্বা করে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে যাই। আমি নিঃসঙ্গ একজন মানুষ। একাকিত্ব যার পিছু ছাড়ছেই না। কাকতাড়ুয়াই তার সব চেয়ে বড় প্রেরণা।


আরো সংবাদ



premium cement
বাংলাদেশ সীমান্তে অত্যাধুনিক ড্রোন মোতায়েন ভারতের হারের বৃত্তেই ম্যানসিটি কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে হেপাটাইটিস সি প্রতিরোধে ইইউ’র ১০ লাখ ইউরো বরাদ্দ গোলান মালভূমিতে শান্তিরক্ষার দায়িত্ব ৬ মাসের জন্য বাড়ালো জাতিসঙ্ঘ আইএসকে নির্মূল করার এখনই সময় : এরদোয়ান নির্বাচনী সময়ের বিষয়ে সরকারের ‘স্পষ্ট বক্তব্য’ চায় বিএনপির যুগপৎ সঙ্গীরাও রাবিতে ৬ শিক্ষার্থীকে স্থায়ী বহিষ্কার, ৩৩ জনকে শাস্তি প্রকল্পের পুরো কাজ দেখতে ৯ জোনে তদারকি কমিটি সড়ক দুর্ঘটনাকে কাঠামোগত হত্যাকাণ্ড হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে : তথ্য উপদেষ্টা করাচি থেকে জাহাজে আগের চেয়ে বেশি পণ্য এলো আগামী বছর দেশের রাজনীতির জন্য টার্নিং পয়েন্ট : গোলাম পরওয়ার

সকল