২১ নভেম্বর ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ১৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

বাবার চোখের অশ্রু

-

বাবা মানে আদর। বাবা মানে শাসন। বাবা মানে নীরব ভালোবাসা। আমরা কখনো বাবাকে কাঁদতে দেখি না। বাবার চোখে অশ্রু দেখি না। বাবা মানুষটি নিজের প্রতি বড্ড কৃপণ। নিজের প্রতি মিতব্যয়ী। খুবই হিসেবি। পরিবার আর সন্তানদের জন্য তার ভাণ্ডারের কোনো কমতি নেই। সব দিতেও কোনো কার্পণ্য নেই। কম পয়সায় নিজের জন্য জিনিসপত্র নিয়ে আসাটা মনে হয় রব কর্তৃক প্রদত্ত। আবার সামান্য জ্বর সর্দিতে আপনি, আমি যেখানে কাবু। সেখানে শরীরের অস্বাভাবিক জ্বর ও অসুস্থতা নিয়েও তিনি সুস্থতার ভান করে কাজ করে চলেন সবসময়। বিছানায় শুয়েও সন্তানদের সুবিধা-অসুবিধা নিয়ে চিন্তায় তিনি বিভোর। হাজারো ব্যথা-বেদনায়ও তার চোখে অশ্রু আসে না সহজে। যেন তিনি কঠিন কোনো পদার্থের তৈরি লৌহমানব। তাই তো সন্তানের সুখে-দুঃখে বাবার স্থানই সবার উপরে।
বাবার সংজ্ঞাটা অনেকে অনেকভাবেই করতে পারেন। বাবার সংজ্ঞাটা এভাবেও বলা যায়, বাবা হলেন নীরব বয়ে চলা নদী। কখনো জোয়ার, কখনো ভাটার মধ্যে দিন কাটে তার। নীরবে বহমান তার জীবনের প্রতিটি ধাপ। চিরসত্য এই কথাটি যে, পৃথিবীতে যদি সবচেয়ে বেশি ধৈর্যশীল কেউ থাকে তিনি হলেন বাবা। বাবা হলেন একজন নির্ভীক নাবিকের মতো। যে নাবিক শত ঝড়, তুফানের মধ্যেও জাহাজ বাঁচাতে চেষ্টার ত্রুটি রাখেন না। বাবাও তেমন সব বাধা-বিপত্তি থেকে পরিবারকে রক্ষা করতে জীবনের সর্বস্ব দিয়ে চেষ্টা করে যান। তিনিই বাবা যিনি সন্তানের আনন্দের খবরে না হেসে, গম্ভীর গলায় বলেন- আরো ভালো কিছু হতে হবে। পরক্ষণেই আড়ালে গিয়ে সন্তানের সাফল্যে নীরবে চোখের অশ্রু ঝরান। বাবাকে নিয়ে লেখার যোগ্যতা আমি রাখি না। তবে কিছুটা অনুভব করি বাবা বড্ড একঘেয়ে একজন মানুষ। জীবনের সুখের সময়টি সবার সাথে ভাগ করে নিলেও দুঃখের সময়ের ভাগটি কাউকে দিতে অনিচ্ছুক এই মানুষটি।

আর জীবনের সেই ছোট্টবেলায় আমরা যখন হাঁটতে গিয়ে আছাড় খেয়ে ব্যথা পেতাম তখন আমাদের এই বাবা ছিলেন আমাদের জন্য পৃথিবীর সবচেয়ে সেরা ওষুধ। আমরা তখন বাবার হাতের আঙুুল ধরে হেঁটে বেড়াতাম। বাবা একটি একটি করে পৃথিবীর প্রত্যেকটি সৃষ্টিকে চিনাতেন। যখন আমাদের ঘুম পেতো মা আমাদের ঘুম পাড়াতেন। কিন্তু বাবা তো সন্তানকে কোলে না নিয়ে কখনো ঘুমাতে পারতেন না। বাবার বুকে মাথা রেখেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা, বছরের পর বছর আমরা সবাই কাটিয়েছি। শান্তির ঘুম ঘুমিয়েছি। যাকে ছাড়া নিজেদের কল্পনাও করা যায় না। আর তাই বয়সের ভারে যখন বাবার দেহটা আর চলতে পারে না। যখন তিনি ছোট্ট শিশুর মতো হয়ে যান। যখন তিনি খুঁজে বেড়ান সন্তানের কোমল হাত। যখন খুঁজে বেড়ান সন্তানের বুকে মাথা রেখে সন্তানের হাতের পরশে ক্লান্ত দেহে একটু ঘুম। আর সন্তানের হাতটি ধরে চলতে চান জীবনের অন্তিম সময়গুলো। তখন হাতেগোনা কয়েকজন ছাড়া বর্তমান সমাজের সবাই বাবার প্রতি যে অবহেলা আমরা করি, তা সত্যিই সন্তানদের জন্য বড় লজ্জার ও কলঙ্কজনক।
অতএব, আমাদের জীবনের অস্তিত্বের উৎস, সন্তানের সফলতায় নীরব অশ্রু ঝরানো, জীবনের প্রকৃত নায়ক, জীবনযুদ্ধে হার না মানা বীর! সবার বাবার স্থানটি হোক নিজ ঘরে, মনের মসজিদে, পরম ভালোবাসায় হৃদয়ের ছোট্ট কুটিরে। আর বাবার সুযোগ-সুবিধা ও কল্যাণের দিকটি প্রাধান্য পাক সবার আগে। ভালো থাকুক, সুস্থ থাকুক ও নিরাপদ থাকুক সব বাবা-মা। আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে দীর্ঘ ও নেক হায়াত দান করুন। আমীন।


আরো সংবাদ



premium cement
আন্দোলনের মূল স্পিরিট হলো বৈষম্যমুক্ত নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ : কেন্দ্রীয় সভাপতি ১৬ বছরের কম বয়সীদের জন্য সামাজিক মাধ্যম নিষিদ্ধ করবে অস্ট্রেলিয়া ‘জুলাই বিপ্লবে আহতদের চিকিৎসায় অবহেলা বরদাস্ত করা হবে না’ মার্কিন শ্রম প্রতিনিধিদল আসছে শুক্রবার ৬ ঘণ্টা অবরোধের পর মহাখালীর সড়ক ও রেললাইন ছাড়লেন রিকশাচালকরা দেশে ফিরেছেন জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান নওগাঁয় পৃথক স্থান থেকে ২ জনের লাশ উদ্ধার ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি রাসিকের ১৬১ কর্মীর অব্যাহতি, ৩৮ জনকে শোকজ খালাস পেলেন সোহেল-টুকুসহ বিএনপির ২২ নেতাকর্মী পল্লী বিদ্যুতের সঙ্কট নিরসনে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান হেফাজত আমিরের

সকল