অবশেষে জীবন সুন্দর
- রেবেকা আক্তার নোহা
- ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০৫
আজ ভোরের স্নিগ্ধ বাতাসে কিছুটা সময় হাঁটাহাঁটি করে নিজেকে ডুবিয়ে নিলাম ব্যস্ততার মধ্যে। তবু নিজেকে ভালো রাখতে জীবনে এই রকম টুকিটাকি ব্যস্ততা থাকাটা ভীষণ প্রয়োজন। কারণ, ব্যস্ত থাকলে মন খারাপ, বিষণœতা, একাকী অনুভূতি কিছুই ছুঁয়ে যেতে পারে না। আবার কিছুটা সময় বের করে নিজেকে হালকা করতে পারলে ভালোই লাগে। আজ তাই নিজেকে কিছুটা হালকা অনুভব হচ্ছে। অদ্ভুত এক ভালোলাগা কাজ করছে মনের মধ্যে। পুকুরপাড়ে এসে কি যেন কাজ করছিলাম আর সময়টি অনুভব করছিলাম। হঠাৎ শ্বশুরের চিৎকার শোনা যাচ্ছে! কী নিয়ে যেন চেঁচামেচি করে যাচ্ছেন? এর মধ্যেই ঠাস করে একটি চড়ের আওয়াজ শোনা গেল। সাথে সাথে মেয়েটি আমার আম্মু গো, আম্মু গো বলে চিৎকার দিয়ে উঠল। আমার কলিজায় কেউ যেন টান দিয়েছে এমন ব্যথা অনুভব হলো। পুকুরের সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠার মতো শক্তিটুকু যেন হারিয়ে ফেলছিলাম। কোনো রকম উঠে এসে দেখি- মেয়েটি আমার বুকের ওপর হাত রেখে চিৎকার দিয়েই যাচ্ছে! আমার যেন আকাশ ভেঙে মাথায় পড়ার মতো অবস্থা হলো। তার দাদা বলছেন, সে নাকি তার ছোট ভাই, মানে ওর চাচাতো ভাইকে থাপ্পড় মেরেছে। তাই উনিও... উফফ! আল্লাহ তায়ালা মালুম! বাকরুদ্ধ হয়ে গেছিলাম। শুধু তাকিয়েছিলাম তাদের দিকে কোনো কিছু বলার ভাষা জানা ছিল না। তাই চুপ ছিলাম। মেয়েটিকে বুকে জড়িয়ে কান্নায় ভেঙে পড়লাম। উনি বলছেন ও বড়, তাই শাসন করলেন। পরে মেয়েকে জিজ্ঞেস করলাম তুমি কেন ওরে মারছো? ও বলছে- আমার গাড়িটা ওরে দেইনি দেখে ও আমাকে লাথি মারছে। তাই আমি থাপ্পড় দিছি। আম্মু গো দাদা আমারে কত জোরে মারছে। আমার বুকটা ব্যথা করছে। তখন আমি যেন কলিজাটা ছিঁড়ে যাওয়ার মতো যন্ত্রণা অনুভব করলাম।
সত্যি! মেয়েরা যে কতটা অসহায় তা কিছু কিছু মেয়ের জীবন না দেখলে বোঝা যায় না। এরপর মেয়েটিকে নিয়ে ঘুমালাম। হঠাৎ ঘুম থেকে উঠে বসলাম। শরীর তখনো কাঁপছিল। তাড়াতাড়ি পানি পান করলাম। মাথা নাড়া দিয়ে ভাবলাম কি দেখলাম এটি আমি। ও আল্লাহ... এটি কি স্বপ্ন ছিল! এমন একটি স্বপ্ন কেন দেখলাম। আল্লাহ তায়ালা মালুম। তবে বুকটা আমার তখনো কাঁপছিল।
ইস...এভাবেই ঘরের বড় সন্তানরা কি নিখুঁতভাবে অবহেলিত হয়। অথচ সংসারে তাদেরই অবদান সবচেয়ে বেশি থাকে। এমনটি আমি অনেক দেখেছি যে, ঘরের বড় সন্তানের ছেলেমেয়েদের তাদের দাদা-দাদু দেখতেই পারেন না বা তেমন একটা আদর করেন না। কিন্তু ছোট সন্তানের নাতি-নাতনীদের কলিজা কেটে খাওয়ানোর মতো অবস্থা হয় তাদের। আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা তাদেরকে সঠিক বুঝ দান করুক! আমীন।
অতঃপর, সব কিছু ভুলে বিকেলবেলা এককাপ কফি নিয়ে পুকুরপাড়ে বসে নিজেই নিজের সাথে আড্ডা দিলাম। নিজের সাথে নিজে কথা বলার ব্যাপারটি না বড্ড অদ্ভুত! কি আর করা। জীবনের এই খেলাঘরে সবই সম্ভব। জীবনের শান্তি মনে হয় সব এখানেই। তাই আমরা সবাই জীবনকে উপভোগ করি। কারণ, অবশেষে জীবন সুন্দর।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা