২১ নভেম্বর ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ১৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

শরতের কাশবনে

-

ঋতুর পালাক্রমে বৃষ্টিময় বর্ষার শেষে প্রকৃতিতে নেমে আসে শরৎ। শরতের জয়গানে হেসে ওঠে প্রকৃতি। নেচে ওঠে নদীর দু’কূল। শরতের শুভ্রতা ছাপিয়ে অনুপম রূপে সেজে ওঠে মাঠ-ঘাট। আশ্বিনের সোনালি ধান। পানি শুকানো জলাধার। সুবিস্তৃত চরাচর। হৃদয়ে দোলা দিয়ে যায় তখন শরতকালের প্রভাতের আবহ। শরতের এই স্বচ্ছ আয়োজনে শেফালির মতো হেসে ওঠে মন।
স্বচ্ছ স্ফটিক কাচের মতো নির্মল আকাশ। নীলে নীলাক্ত হয়ে ওঠে ধবল মেঘের ভেলার তাড়ায়। দুধালো জোছনার মতো ঝিকঝিক করে শরতের কাশগুলো। রৌদ্রস্নাত চিকচিক করে ওঠে কখনো। দুধেল সাদা কুয়াশায় মন টানে এখনো। হাতছানি দিয়ে টানে যেন মেঘমুক্ত আকাশের সুনীল রূপ। হৃদয় ব্যাকুল করা শিউলির ঘ্রাণ। মন উদাস করা বকুলের হাসি। শুভ্র জোছনায় প্লাবিত রাতের মতো কাশফুলের নাচন।
অজস্র স্মৃতির তোড়া মেলে আছে মহাদেবের চর। যেখানে বসে সবুজ প্রকৃতির সাথে মিশে যেতাম। শরতের স্নিগ্ধরূপ উদ্বেলিত করে তুলত মন। উচ্ছ্বাসিত করত হৃদয়। শরৎ ভালোবাসার আনন্দে এখনো উদ্বিগ্ন হয়ে উঠি। রূপসী বাংলার বিমোহিত শরতের কাশবন দেখে ডাহুকের মতো গলায় ধরি গান। কখনো আবৃত্তি করে ফেলি মহাকবি কালিদাসে শরত বন্দনার কবিতাংশ- ‘প্রিয়তমা আমার! ওই চেয়ে দেখো, নববধূর ন্যায় সুসজ্জিত শরতকাল সমাগম।’ 
প্রকৃতির নির্মল ভালোবাসা আর শরতপ্রেম ছেড়ে আজ শহুরে জীবন নিয়ে পড়ে আছি। যান্ত্রিক আওয়াজে বিষিয়ে তোলে মন। গাঁয়ের রূপময় কাশবন কোথায় পাবো! আমি নীমিলিত চোখে চেয়ে থাকি গাঁয়ের পথে। পথের দু’ধারে খোলা প্রান্তরে ফুটে থাকত কাশফুলের হিন্দোল। আজো মন পড়ে থাকে গাঁয়ে। সবুজের টানে। শরতের মায়ায়। আসুক সেই সময়; সাথে আসুক অপরূপ সাজে সজ্জিত শরতকাল। হেসে ওঠুক কাশবন।


আরো সংবাদ



premium cement