২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

যে লেকের সৌন্দর্যে মেতে থাকেন পর্যটকরা

যে লেকের সৌন্দর্যে মেতে থাকেন পর্যটকরা -


পাহাড়, লেক, ঝরনা, সুড়ঙ্গপথ সবই আছে। আছে গাছগাছালি ঘেরা চমৎকার প্রাকৃতিক পরিবেশে লেকের নীলাভ জলে কায়াকিং করার অপূর্ব সুযোগ। বোটে করে লতাপাতায় ঘেরা দু’টি পাহাড়ের মধ্যবর্তী সুড়ঙ্গপথের প্রকৃতির শোভা দেখার সুযোগ যা কোনো পর্যটকই হাতছাড়া করতে চাইবেন না। আছে রাতে ক্যাম্পিং করে থাকার সুযোগ। আছে রোদ্দুর ওঠা অতুলনীয় সুন্দর একটি সকাল প্রকৃতির সাথে, পাখপাখালির কিচিরমিচির, লতাদের কানকথা, পাতাদের ঝুমঝুমির মধ্যে কাটানোর সুযোগ। আছে এই বিস্তীর্ণ লেকের পাশে বসে রাতে গান-আড্ডা শেষে বারবিকিউ খাওয়ার ডবল অপরচুনিটি। আছে সুউচ্চ পাহাড়ের কোলে বসে প্রকৃতির অপার মুগ্ধতা দেখার সুযোগ। আছে ঝরনার পানিতে ভিজে আনন্দ উপভোগ করার সুযোগ। আছে বোটে করে গাছগাছালি ঘেরা ছোট ছোট দ্বীপবিশিষ্ট বিস্তীর্ণ লেকের নীলাভ জলে পা ডুবিয়ে ঘুরে বেড়ানোর সুযোগ।

আচ্ছা বলুন তো! আপনি এত্তগুলো সুযোগ আর কোনো পর্যটন স্পটে পাবেন? আমার ধারণা পাবেন না। কারণ চতুর্মুখী এমন স্পট খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। এখন ভাবছেন এই সুন্দর স্পটটি কোথায় আর কিভাবে ঘুরতে আসবেন এই স্পটে? তাহলে আপনাকে বলি, আপনি দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে যেকোনো গাড়িতে করে চলে আসতে পারেন এখানে। সে জন্য আপনাকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ঠাকুরদীঘি এলাকায় নামতে হবে। নেমেই দেখবেন স্পটের নাম লেখা সাইনবোর্ড। তো সিএনজি নিয়ে স্পটের একদম গেট পর্যন্ত চলে যেতে পারেন অথবা আপনি যদি হাঁটতে পছন্দ করেন তাহলে ১০ মিনিট হাঁটলেই পৌঁছে যাবেন স্পটের গেটে।

আপনাদেরকে তো স্পটটির নামই বললাম না এখনো! আচ্ছা বলেই দিই- স্পটটি হলো বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম কৃত্রিম মহামায়া লেক। যার অবস্থান মীরসরাইয়ের ঠাকুরদীঘি বাজার সংলগ্ন এলাকায়।
তো কথায় ফেরা যাক... গেটে আসার আগে আপনি পেয়ে যাবেন রেলপথ। আপনার ভাগ্য ভালো হলে রেল আসার সুন্দর দৃশ্যও দেখতে পাবেন। এরপর রেলপথ পেরিয়ে গেটে এলে একটি টিকিট কাউন্টার দেখতে পাবেন। সেখান থেকে টিকিট নিতে হবে ভেতরে প্রবেশ করার জন্য। প্রতিটি টিকিটের মূল্য ৩০ টাকা। এরপর গেটে থাকা অন্য একজন লোকের কাছে টিকিটটি জমা দিয়েই আপনি প্রবেশ করতে পারবেন আপনার বহুল কাক্সিক্ষত এই অপরূপ সুন্দর পর্যটনকেন্দ্রে। প্রবেশ করার পর খানিকটা হাঁটতে হবে আপনাকে। সে সময় রাস্তার দু’পাশে আপনাকে স্বাগত জানাবে ঝাউগাছের সারি, অভিবাদন জানাবে হরেক রকমের ফুলের দল। হাঁটা শেষ এখন আপনি পৌঁছে গেলেন লেকের সামনে। চারপাশে একবার চোখ বুলিয়ে নিন। আপনার বামে পাহাড়, ডানে পাহাড় কিছুটা দূরে সামনে বিশাল লেক, লেকে সারি সারি নৌকা, বোট, কায়াকিং বোট সাজানো দেখতে পাবেন। এবার আপনার পছন্দ আপনি কীসে করে ঘুরবেন! নৌকায়? বোটে? নাকি দু’-তিনজন মিলে কায়াকিং করে ঘুরে দেখবেন লেকের সৌন্দর্য!

আপনি চাইলে মহামায়াতে ক্যাম্পিংও করতে পারবেন তবে সে জন্য আপনাকে দু’-তিন দিন আগে ক্যাম্পিং করার বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে কনফার্ম করতে হবে। সব মিলিয়ে আপনি যদি মহামায়া লেকে ঘুরতে আসেন তাহলে জিতে যাবেন।
মহামায়া লেক প্রায় সারা বছরই পর্যটকদের পদচারণায় মুখর থাকে। বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষা সফর, পুনর্মিলনী, ঈদ ট্যুর ইত্যাদি এখানে সারা বছরই চলে। সব বয়সের মানুষের বিচরণ দেখা যায় এই পর্যটন স্পটে। আপনিও আসতে পারেন, দেখে যেতে পারেন মহামায়া লেক আর আপনি যদি একবার ঘুরে যান তাহলে সত্যিই মহামায়া লেকের মায়ায় পড়ে যাবেন।


আরো সংবাদ



premium cement