২১ নভেম্বর ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ১৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

একাকিত্ব যখন ভুতুড়ে

-

আষাঢ় মাস। একটি থিম প্রলয়ের মাস। গুড়ুম গুড়ুম প্রতিধ্বনি লেগেই থাকে লহমার আকাশে বাতাসে। বজ্রপাতের ভাণ্ডারে ভয় জমা রাখে প্রকৃতি। কখনো কখনো উড়িয়ে নেয় জীব সরঞ্জাম, লালন-পালন আর ঐশ্বর্যের প্রীতি। ঊর্ধ্ব লেভেলের বর্ষাতে শরীরে ঝাঁকুনি আসে, বুকের তালারাম খুলে পড়তে চায়। আষাঢ় মাস অন্ধকার প্রতিচ্ছবির মাস। আর অন্ধকার মানেই যে ভয়ের, ভৌতিকতার বরসাজ এ ভাবনাটি কোন হৃদয়ে অটুট না আছে? সব মনেই ভীতির পুঁজি জমা থাকে। প্রকাশের ক্ষেত্রে বিভিন্নতা থাকে নানা স্থিতি, বয়স, অভিজ্ঞতা, আর ভাবের ভিত্তিরসে।
ভয় হচ্ছে মনের সঞ্চিত চিন্তারেখার প্রতিফলন। আমরা যে বিষয়কে যেভাবে কল্পনা দিয়ে সাজাই, সে বিষয় সেভাবেই আমাদের অন্তর্ঘরে বসত করে। আষাঢ়ের মেঘলার ঘনত্ব আর বৃষ্টির কুয়াশাচ্ছন্ন টইটম্বুরতা আমাদের নিয়ে যায় কখনো কখনো ভৌতিক মনভাবনায়। আমরা হয়ে উঠি উতলাপ্রস্থ। বৃষ্টি দিনে আষাঢ়ের ভূতছায়ায় একাকী হয়ে পড়া সব সময়ই ভুতুড়ে মায়াঘোর।
আমাদের সংসারে আমরা তিনজন বর্তমান। আব্বা, আম্মা আর আমি। আমি ছাড়া ওনাদের দু’জনেরই বেড়ানোর খুব শখ। বিশেষ করে মেয়েদের বাড়ি। তো সে সময় আমি হয়ে পড়ি একাকী। যদিও যৌথ ঘরানার বাড়ি আমাদের। তবে আমাদের ঘরখানি প্রান্তঘেঁষা। তার ওপর ঘরের পূর্বদিকে হরেক রকমের গাছগাছড়ার মিশ্রণে একটি জঙ্গল ভাবাপন্নাবস্থা। জঙ্গল অন্ধকার ঘনীভূত করে। আর অন্ধকার ভুতুড়ে অবস্থার মহীয়সী। বৃষ্টি ঋতুর দিনগুলো ব্যতীত পিতা, মাতার বেড়াতে যাওয়ার অন্য ঋতুর দিনগুলোতেও আমার একই ভুতানুভূতির সম্মুখীন হতে হয়।

ওই সময়ের দিনগুলো একরকম দৈর্ঘ্য প্রস্থ বিবেচনায় বছরের সাধারণ দিনগুলোর মিলচরিত্রের মতো কেটে গেলেও রাত্রির ঘনঘটা ভুতুড়ে পরিস্থিতিকে আমন্ত্রণ জানায় নিরোধভাবে। সন্ধ্যার পরাসনে কোলাহল মুখরতার স্তর ক্রমেই নিচে নামতে থাকে। সেই মাত্রায় মনের গহীনে একাকিত্বের ভর বাড়তে থাকে। রাত গভীর হতে চলে। ভয় বিক্রিয়া ততই জটলা পাকাতে থাকে। তার ওপর বৃষ্টির টুংটাং শব্দ বৈচিত্র্য দুনিয়ার টান হতে আরো, আরো অসীম একাকিত্বের ঘোর অন্তরাবদ্ধ করতে থাকে। তখন প্রতিক্ষণীয় চরিত্র ভুলে বসে মন। মনে তখন ভয়ের উৎপত্তি ঘটে সারাংশ ভাবনাজুড়ে। জানালার পর্দা বাতাসে নড়ে উঠলে, মনে হয় দৈব শক্তির কেউ একজন যেন নাড়াচ্ছে! বসে থাকলে মনে হয় কেউ যেন আমারই পাশে বসে আছে! আমার দিকে অপলক তাকিয়ে রয়েছে! মনে হয় এই বুঝি খাটের নিচ থেকে কেউ একজন বেরিয়ে আসবে! হাঁটতে গেলে মনে হয় কেউ একজন আমার পিছু নিয়েছে! এই বুঝি গলা চেপে ধরল বলে! ঘুমাতে গেলে ঘুম আসতে চায় না, ভয়ের ভয়াম্বরতায়। কে যেন শরীরের ওপর চেপে বসে! নানা শঙ্কিতযোগে রাত নেমে আসে দিনের বরাতে। এই সিলসিলা চলতে থাকে পর্বে পর্বে আব্বা, আম্মার বেড়ানোর সমাপ্তি অবধি।


আরো সংবাদ



premium cement
সেনাকুঞ্জে জামায়াতের আমির অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ : প্রধান উপদেষ্টা মালয়েশিয়ায় পেট্রোল স্টেশনে প্রবাসীদের নতুন কাজের অনুমতি শিগগিরই দলে ফিরছেন সাকিব! পুলিশের ৫৪ কর্মকর্তাকে বদলি ইসরাইলের কাছে অস্ত্র বিক্রি বন্ধের প্রচেষ্টা আটকে দিল মার্কিন সিনেট আন্দোলনের মূল স্পিরিট হলো বৈষম্যমুক্ত নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ : কেন্দ্রীয় সভাপতি ১৬ বছরের কম বয়সীদের জন্য সামাজিক মাধ্যম নিষিদ্ধ করবে অস্ট্রেলিয়া ‘জুলাই বিপ্লবে আহতদের চিকিৎসায় অবহেলা বরদাস্ত করা হবে না’ মার্কিন শ্রম প্রতিনিধিদল আসছে শুক্রবার ৬ ঘণ্টা অবরোধের পর মহাখালীর সড়ক ও রেললাইন ছাড়লেন রিকশাচালকরা

সকল