পরিবর্তন
কখন বিকেল হবে। কখন খেলতে যাব মাঠে। চাতক পাখির মতো তাকিয়ে থাকি না ঘড়ির কাঁটায় একটি বিকেলের জন্য। এটিই পরিবর্তন- আবরার নাঈম
- ২১ আগস্ট ২০২২, ০০:০৫
সময় মানুষকে পরিবর্তন করে। কাউকে আংশিক, কাউকে আবার পুরোপুরি। কথা-কাজে, চাল-চলনে, সব কিছুতেই মানুষকে পরিবর্তন করে সময়। একটা সময় মানুষের চাহিদাগুলোও পরিবর্তন হয় সময়ের সাথে সাথে। যেমন একটা শিশু! কৈশোরে পা রেখে তার শৈশবের দিনগুলোর প্রতি ফিরে তাকায়। ভাবতে থাকে তার ফেলে আসা সেই সুখের দিনগুলোর কথা। এভাবেই চলতে থাকে জীবনের গতিধারা।
ছোটবেলা থেকেই ক্রিকেট খেলার প্রতি আসক্ত। সুযোগ পেলেই চলে যেতাম খেলার মাঠে। পড়াশোনার ফাঁকে ফাঁকেও খেলায় লেগে যেতাম মাঝে মধ্যে। মাদরাসায় পড়াশোনা করি। তাই সারাদিন ক্লাস শেষে বিকেলে ছুটি হতো। দুপুর থেকেই অপেক্ষায় থাকতাম কখন আসরের নামাজের সময় হবে! নামাজ শেষ হলেই ছুটে যাব খেলার মাঠে। আগে থেকেই দু’দলের খেলোয়াড়দের সেট করে রাখতাম সময় বাঁচানোর জন্য। আসরের পর থেকেই চলবে পুরোদমে খেলা। একটানা মাগরিব পর্যন্ত। কোনোদিন যদি প্রাতিষ্ঠানিক কোনো কারণে আসরের নামাজ আদায়ে বিলম্ব হতো, তখন চোখে অশ্রু চলে আসার উপক্রম হতো খেলার সময় নষ্ট হচ্ছে বলে। এমনই আসক্তি ছিল খেলাধুলায়।
নামাজ শেষে মাঠে যেতাম। খেলা শুরু হতো। মিশকাত-দাওরা জামাতের বড় ভাইয়েরা মাঠের বাইরে থেকে আমাদের খেলা উপভোগ করতেন। তাদের খেলার জন্য ডাকলে তারা মাথা নেড়ে না-সূচক উত্তর দিতেন। আর বলতেন, উপরের ক্লাসে উঠলে নাকি খেলাধুলা থেকে মন উঠে যায়। খেলতে ইচ্ছে করে না। মোটেও বিশ্বাস হতো না তখন ওদের কথাগুলো। আমি নিশ্চিন্তে বলে দিতাম , আর যাই হোক! আমার ক্ষেত্রে এমনটি হবে না। আমি খেলাধুলা করেই যাব। যে ক্লাসেই পড়ি না কেন!
মিজান থেকে শরহে বেকায়া পর্যন্ত পাঁচ বছর। এ সময়টাতে খুব খেলাধুলা করেছি। মাদরাসায়ও অনেক সময় টুর্নামেন্ট হতো বিপিএল সিস্টেমে। টুর্নামেন্টের যাবতীয় খরচ বহন করত একক ব্যক্তি। কাজেই অবৈধ হওয়ার সুযোগ নেই। শরহে বেকায়া পড়ি তখন। পরীক্ষার বাকি মাত্র কিছু দিন। করোনার কারণে বন্ধ হলো মাদরাসা। বন্ধ হলো খেলাধুলাও। সেই থেকে তিন বছর হলো খেলাধুলা থেকে দূরে। মাঝে মধ্যে সুযোগ পেলে খেলি অবশ্য। তবে নিয়মিত না। দু’-তিন মাসে একবার হয়তো বা।
তখন বড় ভাইদের কথাগুলো অবাস্তব মনে হতো। ভাবতাম এটি কীভাবে সম্ভব? কিন্তু সময়ের সাথে সাথে সব কিছুই পরিবর্তন হয়। এটিই বাস্তব। এখনো দুপুর পেরিয়ে সেই বিকেলগুলো আসে। এখনো সেই মাঠে খেলাধুলা হয়! কিন্তু এখন আর অপেক্ষা করি না! কখন বিকেল হবে। কখন খেলতে যাব মাঠে। চাতক পাখির মতো তাকিয়ে থাকি না ঘড়ির কাঁটায় একটি বিকেলের জন্য। এটিই পরিবর্তন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা