২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

যুক্তরাষ্ট্রে সফল বাংলাদেশী সিলভিয়া

যুক্তরাষ্ট্রে সফল বাংলাদেশী সিলভিয়া -


বাবা মেজর (অব:) ডা: শেখ হাবিবুর রহমান স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত চিকিৎসক। ঝুলিতে রয়েছে তার আরো অনেক অর্জন। দেশের নাম করা ইএনটি বিশেষজ্ঞ এবং হেড-নেক সার্জন। এমন বাবার সন্তানও কম কিসে! বাবার থেকে কোনো অংশে কম নয় শেখ নাদিয়া রহমান সিলভিয়া। ভেঙেছেন আমেরিকার বিখ্যাত ইস্টার্ন মিশিগান ইউনিভার্সিটির ১০০ বছরের রেকর্ড! মূল্যবান অ্যাওয়ার্ডসহ আন্তর্জাতিক পরিসরে একাধিকবার উড়িয়েছেন বাংলাদেশের পতাকা। এ যেন বাবার আদর্শের উজ্জ্বল প্রতিফলন! বলছিলাম বাবার আদর্শকেই ধারণ করে ইতোমধ্যেই সিলভিয়ার অর্জনের ঝালি সম্মানে টইটম্বর। শোনা যাক অসাধারণ মেধাবী বঙ্গকন্যা সিলভিয়ার অর্জন। গত ২৯-৩০ এপ্রিল ছিল যুক্তরাষ্ট্রের নাম করা ইস্টার্ন মিশিগান ইউনিভার্সিটির মালটিকালচারাল গ্র্যাজুয়েশন সিরিমনি এবং অনার্স কলেজের সমাপনী অনুষ্ঠান। এই প্লাটফর্ম থেকেই দেয়া হয় পিট মেয়র অ্যান্ড্রয়েড কেমিস্ট্রি অ্যাওয়ার্ড, যা যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে অনেক সম্মানজনক। সেই সম্মানটির এই মৌসুমের মালিক বাংলাদেশের খুলনার মেয়ে শেখ নাদীয়া সিলভিয়া। বিশ্ববিদ্যালয়টির দুটি আয়োজনে শেখ নাদীয়া রহমান সিলভিয়ার বিগত ৪ বছরের অর্জন তুলে ধরা হয় । বিশ্ববিদ্যালয়টিতে পড়াকালীন সিলভিয়ার অর্জন মোট ২১টি অ্যাওয়ার্ড এবং স্কলারশিপ, যা যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এ পর্যন্ত কেউ অর্জন করতে পারেনি। সিলভিয়াই প্রথম বাংলাদেশী যে কি না মহামূল্যবান এই অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছেন। পরে অর্জন করেছেন আরো তিনটি অ্যাওয়ার্ড। শুধু সেরাই নয়, এর সঙ্গে নানা বিষয়। বিবেচনা করেই দেয়া হয় এমন সম্মান। শেখ নাদীয়া রহমান সিলভিয়া। বায়োকেমিস্ট্রিতে ৪ বছরে (২০১৭-২০২১)। বিএস ডিগ্রি সম্পন্ন করেছেন। পুরো সেশনে সিলভিয়ার একটি রিসার্চ আর্টিক্যাল প্রখ্যাত ‘পাম্বড/চনসবফ' জার্নালে প্রকাশিত হয়। যে থিসিসের মূল্যায়ন ছিল আউটস্ট্যান্ডিং, যা চূড়ান্ত সম্মানের পথকে করেছে সহজ ও প্রাঞ্জল । সব অর্জনের স্বীকৃতিস্বরূপ সিলভিয়াকে দুই দিনের একটি আন্তর্জাতিক প্লাটফর্মে বেস্ট স্টুডেন্ট ক্যাটাগরিতে ৫ মিনিট বক্তব্য দেয়ার সুযোগ হয়। বক্তব্যের সময় মঞ্চের সামনে ওড়ানো হয়। বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা। আর এটা সম্ভব হয়েছে সিলভিয়ার প্রকট ইচ্ছাশক্তি, কঠিন অধ্যবসায় আর বুকভরা আত্মবিশ্বাসের জোরেই। বিশ্ব দেখেছে এক বঙ্গকন্যার চোখ ধাঁধানো পারফরমেন্স। ২০১৭ সালে বাংলাদেশের স্কলাস্টিকা থেকে ওলেভেল এবং এ-লেভেল পাস করেন। এই সময়েও অর্জন করেন দেশের মার্জিত ‘ডেইলি স্টার অ্যাওয়ার্ড’। এসব অর্জন নিয়ে শেখ নাদীয়া সিলভিয়া বলেন, নারী বলে পিছিয়ে থাকার সুযোগ নেই। আমি একজন নারী হিসেবে পরিবারসহ আমার চারপাশ থেকে প্রচুর সাপোর্ট পেয়েছি। তবে আত্মবিশ্বাস থাকলে কোনো কিছুই থেমে থাকে না। বাবার আদর্শকে ধারণ করে বিশ্ব দরবারের এমন একটি অর্জন সত্যিই ভালো লাগার। তিনি আরো বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের মতো একটি দেশের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০০ বছরের রেকর্ড ভাঙা সত্যিই আমার জীবনের মোড় ঘোরানোর টার্নিং পয়েন্ট। এ অর্জন আমার প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশের মানুষকে উৎসর্গ করছি। শেখ নাদীয়া সিলভিয়ার পিতা সাবেক সেনা কর্মকর্তা এবং দেশের নামকরা একজন নাক, কান, গলা বিশেষজ্ঞ। সামাজিক আন্দোলনের অগ্রসর নেতা মেজর (অব:) ডা: শেখ হাবিবুর রহমান দীঘলিয়া উপজেলা সমিতি ঢাকার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। আর মা লায়ন আফরোজা বেগম হ্যাপী। বড় বোন ডা: শেখ সাদীয়া রহমান সিনথিয়া। ছোট দুই ভাই বিআইএসের ইংলিশ মিডিয়ামের ছাত্র। বাংলাদেশের সিলভিয়া শুধু বাংলাদেশই নয়; বাংলার শুকতারা সিলভিয়ার মেধার আলোয় আলোকিত এখন গোটা বিশ্ব। বিশ্ব জেনে গেছে বাংলাদেশের একজন শুকতারার নাম...।


আরো সংবাদ



premium cement