০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৩ মাঘ ১৪২৩১, ৬ শাবান ১৪৪৬
`

‘বাঁশি তো আর আগের মতো বাজে না’

-

আদিকাল থেকে বাঁশি নামক যন্ত্রটি ব্যবহার হয়ে আসছে মানুষের মাঝে। শৈশবে আমরা বাঁশি নিয়ে বহু খেলেছি। বিশেষ করে আষাঢ় মাসে ঘরের পাশ থেকে আমের আঁটি ঘষে তৈরি করা বাঁশি এবং তাল, নারকেল ও কলাপাতার বাঁশি ছিল খুবই সহজলভ্য। বৈশাখী, চৈত্রসংক্রান্তি প্রভৃতি মেলা ও বাজার থেকে আনা বাঁশের, প্লাস্টিকের বা টিনের বাঁশি বাজিয়ে খুবই মজা পেতাম আমরা। আমাদের চারপাশেও প্রতিনিয়ত বাঁশির ব্যবহার চোখে পড়ে। হিন্দু সমাজে বিয়েতে সানাই বাঁশি, সিঙ্গা ফুঁকার প্রচলন রয়েছে।
বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্কাউট ও ক্রীড়া শিক্ষকের বাঁশি, খেলার মাঠে রেফারি, বাসস্ট্যান্ডে স্টাটার, ট্রেনের গার্ড, ট্রাফিক, দাঙ্গা-হাঙ্গামা দমনে পুলিশের বাঁশি একান্ত অপরিহার্য হয়ে পড়ে। স্টিমার, কার্গো জাহাজের চলাচলে সারেং বাঁশি বাজায়। এ ছাড়া শ্রীকৃষ্ণ কীর্তন, বৈষ্ণব পদাবলী, কবিগান, লালনগীতি, বাউলগান, জারি, সারি, পল্লীগীতি, ভাওয়াইয়া যাত্রাপালা গান বাঁশি ছাড়া কল্পনাই করা যায় না। এখন তার স্থান বিদেশী বাদ্যযন্ত্র দখল করে নিয়েছে।
পৌরাণিক যুগের অর্ফিসিয়াসের বাঁশি, জার্মানিরা হ্যামিলনের বাঁশি বাদকের বাঁশির সুরে মুগ্ধ ইঁদুরের দল ও শহরের শিশুদের ডুবিয়ে মারা কাহিনী এখনো চালু আছে মানুষের মাঝে।
পল্লীকবি জসীমউদ্দীনের ‘নকশীকাঁথার মাঠে’ রূপাইর বাঁশির সুর এখনো নাকি গভীর রাতে কান পেতে শোনা যায়।
৬০ দশকে আমার স্কুলজীবনের সহপাঠী পরে (যশোর প্রধান ডাকঘরের কর্মচারী) রইসউদ্দীনের বাঁশির সুরে শ্রোতারা মুগ্ধ হয়েছে। সেই মিষ্টি সুর এখনো কানে বাজে।
চার বছর আগের কথা। আমার ঘনিষ্ঠজন, চূড়ামনকাঠি গ্রামের নূর ইসলাম (৭০) ২০১৫ সালে আমাদের ছেড়ে না-ফেরার দেশে পাড়ি দিয়েছেন। তার যুবক বয়সের একটি গল্প শুনিয়েছিলেন। বাঁশি বাজানো ছিল তার নেশা। বাঁশি ভালো বাজাতে জানতেন।
একদিন বন্ধুর সাথে বাজি ধরেছিলেন। বাঁশির সুরে বউকে যদি ঘরের বার করে না আনতে পারেন তবে জীবনে আর তিনি বাঁশি বাজাবেন না। বাজিতে জিতেছিলেন।
বৈষ্ণবগানের প্রধান উপাদান হলো রাধাকৃষ্ণ। কৃষ্ণের হাতে বাঁশির ব্যবহার সবখানে দেখতে পায়। প্রাচীনকাল থেকে আধুনিক যুগ পর্যন্ত বাঁশি নিয়ে রচিত হয়েছে বহু গান।
মহান আল্লাহ পাক আসমানে ইস্রাফিল আ: নামের ফেরেশতাকে সিঙ্গা ফুঁকার দায়িত্ব দিয়েছেন। আল্লাহ তায়ালার হুকুমে তিনি সিঙ্গায় ফুঁক দিলে একদিন আসমান ও জমিন ফেটে যাবে আর সারা দুনিয়া ধ্বংস হয়ে যাবে।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের গান ও কবিতায় বাঁশি শব্দটি এক অনবদ্য সৃষ্টি।
‘মোর এক হাতে বাঁকা বাঁশের বাঁশরী, আর এক হাতে রণতূর্য’। ‘মধুর বাঁশরী বাজে গোধূলি লগনে’।
আমাদের জাতীয় সঙ্গীতে বাঁশি শব্দটি বারবার এসেছে হৃদয়-মননে।
‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি
চিরদিন তোমার আকাশ তোমার বাতাস
আমার প্রাণে বাজায় বাঁশি।’
বাঁশি আমার খুবই প্রিয়। বিশেষ দুর্বলতা রয়েছে এর প্রতি। হ
লেখক : উন্নয়নকর্মী


আরো সংবাদ



premium cement
বন্ধ কোম্পানির শেয়ার নিয়ে কারসাজি থামাতে উদ্যোগ নেয়া হবে কবে ৩২ নম্বরের বাড়ি ভাঙ্গা নিয়ে যা বলছেন উপদেষ্টা ও অভ্যুত্থান সংশ্লিষ্টরা গাজাকে যুক্তরাষ্ট্রের মালিকানাধীন করার ট্রাম্পের প্রস্তাব যেসব দেশে সমালোচিত টিকটক করাকে কেন্দ্র করে যুবক খুন এমপি-মন্ত্রীর বাড়ি ভেঙে শহীদদের জন্য ভবন নির্মাণের দাবি হান্নানের পুঠিয়ায় যুব মহিলা লীগের সভানেত্রী গ্রেফতার চট্টগ্রামে শেখ মুজিবের ম্যুরাল ভাঙচুর নোবিপ্রবিতে মালেক উকিল হলের নামফলক ভেঙে ‘বিজয় ২৪’ নামকরণ শিক্ষার্থীদের ভোলায় তোফায়েল আহমেদের বাসভবনে আগুন জাবিতে শেখ মুজিবের ম্যুরাল ও গ্রাফিতি ভেঙ্গে দিল শিক্ষার্থীরা কে হচ্ছেন বিপএলের সেরা?

সকল