গ্রামবাংলার ঢেঁকি
- আবু জাফর সিদ্দিকী
- ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:০০
আধুনিক প্রযুক্তির ছোঁয়া লেগেছে প্রায় সবখানে। শহর থেকে গ্রামের মানুষের জীবনযাত্রার মান পাল্টে গেছে। মাটির বাড়ির স্থলে উঠেছে ইটের দালান। কুঁড়েঘরের স্থান নিয়েছে পাকা ভবন। মানুষের জীবনযাত্রাকে আরো সহজ করতে তৈরি করা হয়েছে নানা আধুনিক যন্ত্রপাতি, ব্যবহার হচ্ছে নানারকম সব প্রযুক্তি। এসব আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে হারিয়ে যেতে বসেছে একসময়ের গ্রামবাংলার ঐতিহ্য। পাল্টে গেছে গ্রামের চিত্র। এই আধুনিক যন্ত্রপাতি আর প্রযুক্তির আড়ালে চাপা পড়ে গেছে গ্রামের ঐতিহ্যবাহী ঢেঁকি। এখন ঢেঁকির আর দেখাই মেলে না।
‘ধান ভানি রে, ঢেঁকিতে পার দিয়া। ঢেঁকি নাচে আমি নাচি, হেলিয়া দুলিয়া। ধান ভানি রে।’ গ্রামবাংলার তরুণী-নববধূ, কৃষাণীদের কণ্ঠে এ রকম গান এখন আর শোনা যায় না। বিভিন্ন ধরনের যন্ত্র আবিষ্কারের সাথে সাথে সেসব ঐতিহ্য হারিয়ে যাচ্ছে। কালের বিবর্তনে ঢেঁকি এখন শুধু ঐতিহ্যের স্মৃতি বহন করে। দিন দিন ঢেঁকিশিল্প বিলুপ্ত হলেও একে সংরক্ষণের কোনো উদ্যোগ নেই।
আবহমান বাংলায় একসময় ঢেঁকি ছিল গ্রামীণ জনপদে চাল ও চালের গুঁড়া বা আটা তৈরির একমাত্র মাধ্যম। অগ্রহায়ণ-পৌষ মাসে কৃষক ধান কাটার সাথে সাথে কৃষাণীদের ঘরে ধান থেকে নতুন চাল ও চালের গুঁড়া করার ধুম পড়ে যেত। সে চাল দিয়ে পিঠাপুলি, ফিরনি, পায়েস তৈরি করা হতো। গ্রামাঞ্চলে প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই ছিল এই ঢেঁকি। তখন কদরও ছিল। ধান ভানার কলের আবির্ভাবে ঢেঁকি আজ বিলুপ্তপ্রায়। এখন আর গ্রামবাংলায় ঢেঁকিতে ধান ভানার দৃশ্য চোখে পড়ে না। শোনা যায় না ঢেঁকির ধুপধাপ শব্দ।
ঢেঁকির জায়গা দখল করে নিয়েছে বিদ্যুৎচালিত মেশিন। এর মাধ্যমে মানুষ এখন অতি সহজেই অল্প সময়ে ধান থেকে চাল তৈরি হয়। গ্রামে গ্রামে বসেছে চাল তৈরির কল। হাতের কাছে বিভিন্ন যন্ত্র আর প্রযুক্তি সহজলভ্য হওয়ায় ঢেঁকির মতো ঐতিহ্যবাহী অনেক কিছুই এখন হারিয়ে যাচ্ছে। একসময় হয়তো সেসবের দেখা মিলবে কেবল জাদুঘরে। হ
লেখক : সংবাদকর্মী, নাটোর
[email protected]
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা