০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৩ মাঘ ১৪২৩১, ৬ শাবান ১৪৪৬
`

সড়কে মৃত্যুর মিছিল অসহনীয়

-

সড়কে দুর্ঘটনা প্রতিদিনই ঘটছে। প্রতিদিনই মানুষের মন আক্রান্ত হচ্ছে বিষাদে। দেশের মানুষ এমন মৃত্যু দেখতে চান না। কিন্তু তারা রেহাই পাচ্ছেন না। কয়েক ব্যক্তির অশুভ জোটের কাছে দেশের পরিবহন খাত অসহায় হয়ে পড়েছে।
রাজনীতির ক্ষেত্রে পরস্পরবিরোধী শিবিরের অংশ হলেও চাঁদাবাজির স্বার্থে তারা পরিবহন নিয়ন্ত্রণে ঐক্য গড়ে তুলেছেন নিজেদের মধ্যে। তাদের কারণেই পরিবহন নৈরাজ্যের ইতি ঘটছে না। সড়কে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় সরকার যে আইন করেছে, তা তৈরি হয়েছে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সাথে কথা বলে। এ আইনের বিষয়ে আপত্তি জানাচ্ছে পরিবহন চাঁদাবাজির কুশীলবরা। অদ্ভুত সব দাবি জানাচ্ছেন তারা কর্তৃপক্ষের সাথে বৈঠক করে। নতুন আইনে হালকা লাইসেন্স ব্যবহার করে ভারী গাড়ি চালালে শাস্তির যে বিধান রাখা হয়েছে; তাতে তারা আপত্তি জানাচ্ছেন। তাদের আবদার, যেকোনো ধরনের লাইসেন্স থাকলেই গাড়ি চালানোর অধিকার দিতে হবে। দুর্ঘটনায় গাড়ির যাত্রী ও পথচারীর জীবন গেলেও চালকের জামিনের বিধান থাকতে হবে। অভিযুক্ত হলে শাস্তির পরিমাণ কমাতে হবে। নতুন আইন করা হয়েছে সড়কে নৈরাজ্যকর অবস্থার অবসান ঘটাতে; পরিবহন মালিক, চালক, পথচারী সবাইকে আইনের আওতায় আনতে।
আইনের মূল উদ্দেশ্য থাকে সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রের শৃঙ্খলা নিশ্চিত করা। এ উদ্দেশ্যেই আইন ভঙ্গকারীদের জন্য শাস্তির বিধান রাখা হয়। যেমন ইচ্ছা তেমন চলার স্বাধীনতা দিলে আইনের কোনো প্রয়োজন হয় না। পরিবহন খাতের অশুভ চক্রের হোতারা যথেচ্ছাচারের যে অধিকার দাবি করছে, তা কোনো সভ্য দেশে, সভ্য সমাজে কল্পনা করাও কঠিন। পরিবহন সংশ্লিষ্ট চাঁদাবাজ জোটের কুশীলবদের দাবির কাছে সরকারের নতি স্বীকারের কোনো সুযোগ থাকা উচিত নয়। নিজেদের সভ্য দেশ ও সমাজের অংশ হিসেবে ভাবতে চাইলে পরিবহন খাতে যথেচ্ছতার অধিকার দাবিকারী অশুভ জোটকে পরাস্ত করতে হবে। পরিবহন মালিক, চালক, পথচারী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সবাইকে আইন মানতে হবে।
জাতিসঙ্ঘের সদস্য দেশগুলোর মধ্য যারা অঙ্গীকার করেছে, ২০১১ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনা অর্ধেকে নামিয়ে আনতে কাজ করবে, বাংলাদেশ সেসব দেশের মধ্যে অন্যতম। আমাদের দেশে কী কী কারণে এত বেশি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে, কী কী পদক্ষেপ নিলে দুর্ঘটনার হার কমিয়ে আনা সম্ভব; সেসব বিষয় বহুল আলোচিত। অনেক গবেষণা হয়েছে, বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ আছে। বুয়েটের সড়ক দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের (এআরআই) এক গবেষণা অনুযায়ী, দেশে ৫৩ শতাংশ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে অতিরিক্ত গতিতে গাড়ি চালানোর জন্য। চালকদের বেপরোয়া মনোভাবে দুর্ঘটনা ঘটে ৩৭ শতাংশ। এ ছাড়া ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, ভুয়া লাইসেন্সপ্রাপ্ত চালক ও বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো বন্ধ করা হলে সড়ক দুর্ঘটনা অনেকাংশে কমতে পারে। সড়ক দুর্ঘটনা কমানোর লক্ষ্যে দুর্ঘটনার জন্য দায়ী চালকদের শাস্তি নিশ্চিত করা প্রথম কাজ। ভুয়া ড্রাইভিং লাইসেন্স, হেলপারদের গাড়ি চালানো, ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন চলাচল; এসব বন্ধ করতে হবে। শুধু প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চালককেই যেন লাইসেন্স দেয়া হয়, বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। সরকারকে উপলব্ধি করতে হবে, এটি একটি গুরুতর জাতীয় সমস্যা। সরকারের পাশাপাশি পরিবহন মালিক, শ্রমিক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকেও সচেষ্ট হতে হবে; যাত্রী সাধারণের সচেতনতাও বাড়াতে হবে।
সড়ক নিরাপত্তা নিয়ে এখনই ভাবতে হবে। তা না হলে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির ঘটনা আরো বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই দুর্ঘটনা রোধে হালকা যানবাহনের জন্য আলাদা লেন তৈরি করা যেমন জরুরি, তেমনি সড়ক-মহাসড়ক থেকে ফিটনেসবিহীন যানবাহন তুলে দিতে হবে। সবার আগে দরকার চালকদের নিয়ে ভাবা। লাইসেন্সবিহীন চালকদের হাতে কোনোভাবেই গাড়ি তুলে দেয়া যাবে না। এ ক্ষেত্রে পরিবহন খাতের সবার সর্বাত্মক সহযোগিতা অতীব জরুরি। যানবাহন মালিক-শ্রমিকসহ সংশ্লিষ্ট সবার আন্তরিকতায় সড়কে শৃঙ্খলা ফেরানো সম্ভব বলে আমরা মনে করি।
লেখক : সহসভাপতি, এফবিসিসিআই


আরো সংবাদ



premium cement
গ্যাস ট্যাবলেট খেয়ে মায়ের মৃত্যু, ৩ মেয়ে হাসপাতালে ভর্তি তিউনিসিয়ার অর্থমন্ত্রীকে বরখাস্ত করেছেন প্রেসিডেন্ট নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের কর্মকাণ্ডের বিচারের দাবিতে তাহিরপুরে স্মারকলিপি প্রদান সুনামগঞ্জে বঙ্গবন্ধুর ৫ ম্যুরাল ভাঙচুর নওগাঁ ভটভটি উল্টে নিহত ১ পাকুন্দিয়ায় বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ভেঙে দিলো ছাত্ররা-জনতা রুবাইয়াত ও আলমগীরকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ শেখ হাসিনার বক্তব্যে আবারো উত্তাল ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ভেঙে ফেলা হয়েছে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল বিশৃঙ্খলায় প্রতিবেশী রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ আছে কি না জানার চেষ্টা করব : মেজর হাফিজ নারায়ণগঞ্জে ডিসি-এসপি অফিসের সামনে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ভাঙচুর মহাদেবপুরে হত্যা মামলায় ৫ জনের যাবজ্জীবন

সকল