০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৩ মাঘ ১৪২৩১, ৬ শাবান ১৪৪৬
`

সোনালি ব্যাগে সোনালি স্বপ্ন

-

দেশে একসময় মানুষজন চটের ব্যাগ নিয়ে বাজারে যেতেন। কিন্তু আশির দশকে শুরু হয় পলিথিন নামক পলিমারের ব্যবহার। এরপর ধীরে ধীরে দৈনন্দিন জীবনের সব কেনাকাটায় ব্যবহার শুরু হয় পলিথিন। একটা সময় ব্যাপক মাত্রায় পলিথিনের ব্যবহার বেড়ে যায়। তা পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দেখা দেয়। সরকার ২০০২ সালে পলিথিনের ব্যবহার নিষিদ্ধ করে। কিন্তু আইন শুধু কাগজ-কলমে সীমাবদ্ধ রয়ে গেছে এখনো। এরপর অনেক সময় চলে গেছে। পলিথিনের ব্যবহার বেড়েই চলেছে। এখন পলিথিন মানবজীবনের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এরকম ক্রান্তিলগ্নে বাংলাদেশের একজন খ্যাতনামা বিজ্ঞানী ড. মোবারক আহম্মেদ খান পলিথিনের বিকল্প ভাবতে শুরু করেন। তিনি পাট দিয়ে তৈরি করতে চান সেই বিকল্প। এর পর থেকে কাজ শুরু করেন। ২০১৫ সালে পাট থেকে পলিমার ব্যাগ তৈরি করতে সক্ষম হন তিনি। মূলত পাটের সেলুলোজ নামের পলিমার ও অন্যান্য কম্পোজিট উপাদানের সমন্বয়ে তৈরি করা হয় পাটের এ পলিমার ব্যাগ।
২০১৭ সালে বিজেএমসির পৃষ্ঠপোষকতায় সরকারের একটি পাইলট প্রকল্পের অধীনে শুরু হয় উৎপাদন। প্রকল্পটি ‘সোনালি ব্যাগ প্রকল্প’ নামে শুরু করা হয়। বিজেএমসির মতে, পাটের তৈরি এ ব্যাগের বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো পচনশীল বা বায়োডিগ্রেডেবল। যেসব পদার্থ ব্যাকটেরিয়ায় দ্রুত নষ্ট হয়ে বা পচে যায় তাই বায়োডিগ্রেডেবল। এটি সোনালি ব্যাগের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। সোনালি ব্যাগ পরিবেশবান্ধব। পরিবেশের ওপর এর কোনো বিরূপ প্রভাব নেই। আরো গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো এটি পানিতে স্থায়ী, পুনঃপ্রক্রিয়াযোগ্য, সিনথেটিক ফাইবারের তুলনায় কম খরচে উৎপাদন সম্ভব, ক্ষতিকর ধোঁয়ার পরিমাণ কম ও পলিথিন ব্যাগের তুলনায় প্রায় ১ দশমিক ৫ গুণ বেশি প্রসারণযোগ্য। এ ছাড়াও মাটিতে এটি মাত্র ৫-৬ মাসের মধ্যেই পচে যায়। বর্তমান বিশে^ পরিবেশবান্ধব ব্যাগের চাহিদা প্রচুর।
পলিথিনের ব্যবহার মানুষের বাসযোগ্য পৃথিবীকে করছে অবাসযোগ্য। বিপন্ন হচ্ছে সামুদ্রিক প্রাণীকুল, গাছপালা এবং অন্যান্য প্রাণী। ঠিক এ সময়ে পচনশীল ও পরিবেশবান্ধব সোনালি ব্যাগ দেশের জন্য একটি যুগান্তকারী উদ্ভাবন। চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসে বাজারজাত করা হবে এটি। ‘সোনালি ব্যাগ’ প্রকল্পের সমাপনী অনুষ্ঠান ৩১ অক্টোবর। ফলে বাংলাদেশ পরিবেশবান্ধব ব্যাগের যুগে প্রবেশ করতে যাচ্ছে। এটি যেমন পরিবেশ বিপর্যয় রোধ করবে, তেমনি আমাদের উপহার দেবে দূষণমুক্ত একটি নির্মল পরিবেশ। একই সাথে আমরা অর্থনৈতিকভাবেও লাভবান হতে পারব। পাটের তৈরি এই ব্যাগ পাটের চাহিদা বাড়াবে। এতে কৃষক লাভবান হবেন। পাট চাষে আগ্রহ বাড়বে। তা ছাড়া বিদেশী অনেক প্রতিষ্ঠান আগ্রহ দেখিয়েছে সোনালি ব্যাগ উৎপাদনে; যা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে সবার প্রত্যাশা। ‘সোনালি ব্যাগ’ বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় নতুন এক সংযোজন হবে। পলিথিনমুক্ত বাংলাদেশ গঠনে ভূমিকা রাখবে এ ব্যাগ।

লেখক : শিক্ষার্থী,
ইসলামী বিশ^বিদ্যালয়, কুষ্টিয়া


আরো সংবাদ



premium cement
পাকিস্তানের যৌথ নৌ মহড়ায় অংশ নিচ্ছে ইরান গাজায় ইসরাইলি যুদ্ধাপরাধীর তদন্ত শুরু করেছে সুইস কর্তৃপক্ষ ফিলিস্তিনিদের নিয়ে ট্রাম্পের দেয়া প্রস্তাবে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ জাতিসঙ্ঘ মহাসচিবের ছাত্র-জনতার রোষানলের দায় শেখ হাসিনাকেই বহন করতে হবে : খেলাফত মজলিস কুলাউড়ায় উপজাতীয়দের হাতে বাঙালি যুবক খুন : ৭ খাসিয়ার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা শেখ হাসিনার উসকানিমূলক বক্তব্যের কারণে ৩২ নম্বরের বাড়ি ভাঙচুর ছিনতাই প্রতিরোধে ট্রাফিক সার্জেন্টদের দেয়া হচ্ছে ক্ষুদ্র অস্ত্র : ডিএমপি কমিশনার ছয় নতুন মুখ নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার ওয়ানডে দল ঘোষণা ফ্যাসিস্ট সরকার ১৫ বছরে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করে দিয়েছে : টুকু বিএনপির স্বাস্থ্য সংস্কার প্রস্তাবনা হস্তান্তর বঙ্গমাতা হলের নামফলক ভাঙতে গিয়ে দুর্ঘটনায় শিক্ষার্থী আহত

সকল