অনেক কিছু দেয়ার আছে ভারতের
- মোহাম্মদ শরীফ
- ২৯ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০
আবরার হত্যায় ভারত সফরের পর ফের আলোচনায় এসেছে ভারত-বাংলাদেশ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক নিয়ে। এ পর্যন্ত বাংলাদেশ সবচেয়ে ভালো বন্ধু ভারতকে মনে করে। ভারতও বিভিন্ন সময় উভয়ের সুস্পর্কের কথা বলে। তবে এ বলা আর কাজে পরিচয় অনেক সময়ই দ্বিধায় ফেলে বাংলাদেশকে। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর সফরে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বেশ কিছু সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। এর মধ্যে একটি হলো, ভারতকে ফেনী নদীর পানি দেয়া। ভারত ফেনী নদীর ১ দশমিক ৮২ কিউসেক পানি নিয়ে যাবে ত্রিপুরায়। অথচ তিস্তা নিয়ে টুঁ-শব্দও করেনি ভারত। এ ছাড়া বাংলাদেশের দু’টি নৌবন্দর ব্যবহার করার চুক্তিও স্বাক্ষরিত হয়েছে। এ সফরের সমঝোতা ও চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশের চেয়ে ভারত বেশি লাভবান হবে। তিস্তার পানি, সীমান্ত হত্যা, কাঁটাতারের বেড়া, ভারতে শুল্কমুক্ত পণ্য রফতানি, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন, এনআরসি ধোঁয়াশা সামাধান বাংলাদেশের প্রত্যাশা ছিল। বিষয়গুলো ফের কৌশলগতভাবে এড়িয়ে গেছে ভারত। ভারত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের কথা এড়িয়ে; তাদের ঠাঁই দেয়ার জন্য বাংলাদেশকে ধন্যবাদ দিয়েছে। দিয়েছে রোহিঙ্গাদের অর্থনৈতিক সহায়তার আশ্বাস। ভারত রোহিঙ্গাদের ‘রোহিঙ্গা’ না বলে, বলেছেÑ রাখাইনের বাস্তুচ্যুত জনগণ। রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে ভারতের নীরবতা বাংলাদেশকে খুশি করেনি। এ ছাড়া সীমান্ত হত্যার বিষয়টিও উদ্বেগজনক। ফেলানী হত্যা নিয়ে সারা বিশ্ব আলাচনায় এলেও ভারত সীমান্ত হত্যা কমায়নি। প্রতিদিন বাংলাদেশী সীমান্তবর্তী মানুষ মারা যাচ্ছেন ভারতীয় বাহিনী বিএসএফের হাতে। ভারত এমন আচরণ কেবল শাসক মনোভাব থেকেই করছে। এমন হত্যার মতো অমানবিক কাজ ভারতের উপনিবেশ চেহারার কথা মনে করিয়ে দেয়। এটি ভারতের কৌশলগত নীতি বলা যায়। এর মাধ্যমে ভারত বাংলাদেশকে চাপে রাখতে চায় তা সহজেই অনুমেয়। তবে বন্ধুরাষ্ট্রের মধ্যে এ আচরণ কাম্য নয়। যেটা আজ পর্যন্ত কখনো করেনি বাংলাদেশ। আসাম ও ত্রিপুরা রাজ্যের এনআরসির কথা তুলে বাংলাদেশকে শঙ্কিত করে তুলেছে ভারত। এনআরসি-বহির্ভূত ভারতীয় জনগণকে বাংলাদেশে পাঠানোর হুমকিও দিয়েছেন ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বাংলাদেশের জনগণ প্রত্যাশা করে, উভয় দেশের সম্পর্ক তৈরি হবে সমতার ভিত্তিতে। স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশ বন্ধুদেশ ভারতকে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেছে। বাংলাদেশ ভারতের এখন একটি বড় বাজার। ভারতের পেঁয়াজ রফতানি বন্ধের ঝাঁজে এখনো জ্বলছে বাংলাদেশীরা। বিশ্বায়নের যুগে একটি দেশকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা বোকামি বৈ কিছু নয়। ভারত-নেপাল দ্বন্দ্ব এর বড় উদাহরণ। আশা করি, ভারত বাংলাদেশের প্রত্যাশাগুলো নিয়ে ভাববে। বাংলাদেশের প্রত্যাশা পূরণের মাধ্যমে সুদৃঢ় করবে দুই দেশের বন্ধুত্ব।
লেখক : শিক্ষার্থী, ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ, কুমিল্লা
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা