০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৩ মাঘ ১৪২৩১, ৬ শাবান ১৪৪৬
`

দুষ্টের দমন, শিষ্টের পালনে ‘মা’ দুর্গা

-

বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব। আকাশে সাদা মেঘের আনাগোনা, শিউলি ফুলের সুভাস, প্রকৃতির হিমেল হাওয়া ধারণ করেছে এক উৎসবমুখর আমেজ। হিন্দুদের কাছে দুর্গোৎসব হচ্ছে সব ধরনের অশুভ-অসত্যকে পরাভূত করে সত্য ও ন্যায়ের বাতাবরণ প্রতিষ্ঠার শুভ সময়। দশভুজা দুর্গতিনাশিনী দেবীদুর্গা দুষ্টের দমন আর শিষ্টের পালনে ধরণীতে আবির্ভূত হন। ‘মা’ দুর্গা তার সন্তানদের দান করেন ঐশ্বর্য। ‘মা’ সাহায্য করেন জ্ঞান ও প্রজ্ঞায় বিকশিত হতে। শ্রী শ্রী চণ্ডীতে বলা হয়েছেÑ ‘যা দেবী সর্বভূতেষু শক্তিরূপেণ সংস্থিতা/নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমো নমঃ॥’ এর অর্থ হলো- যে দেবী সর্বভূতে বিশ^ চরাচরের শক্তি ও শান্তিরূপে বিরাজ করেন, সেই দেবীকে নমস্কার করি। একসময় দেবতাদের স্বর্গরাজ্য অসুরেরা অধিকার করে নেন। তখন দেবতাদের সম্মিলিত শক্তি থেকে দেবীদুর্গার আবির্ভাব ঘটে। দেবীদুর্গা অসুরদের বিনাশ করেন। দেবতারা ফিরে পান তাদের স্বর্গরাজ্য। অশুভ শক্তিকে বিনাশ করার জন্যই ‘মা’ আনন্দময়ী দেবীদুর্গার আগমন। অশুভ শক্তির উত্থানকে বিনাশ করে তিনি সব দুঃখ, দুর্গতি, ভয় নাশ করেন। অন্যায়ের বিনাশ ঘটিয়ে সজ্জনদের প্রতিপালনের অঙ্গীকার নিয়ে মানুষের মধ্যে নৈতিক আদর্শ জাগ্রত করতেই দেবীর আগমন ঘটে থাকে। যেখানে শুভ, শান্তি, ঐক্য আর কল্যাণের পরাজয় হয় সেখানেই ঘটে অসুরের আবির্ভাব। তখনই সম্মিলিত শক্তি ছাড়া অসুরের বিনাশ করা অসম্ভব! লোভ-লালসা, অহঙ্কারসহ সব ধরনের মন্দ কাজ এক একটি অসুর। তাই আমাদের হৃদয়ে অশুভ শক্তির ছায়া দূর করতে হবে। নিজের ভেতরকার এমনসব অসুরসহ চার পাশের অসুরদের সম্মিলিতভাবে দমন করতে হবে।
ধর্ম উৎসব মানুষে মানুষে প্রীতি, প্রেম, সহিষ্ণুতা, ঐক্য ও শান্তির ডাক দিয়ে যায়। তা সত্ত্বেও হানাহানি, লোভ-লালসা, অনৈক্য, অসহিষ্ণুতা ও নিষ্ক্রিয়তা আজ চার পাশে বিরাজমান। সত্যের রক্ষাকর্তা ও দুষ্টের বিনাশকারিণী হিসেবে ‘মা’ আসেন শান্তির বারতা নিয়ে। এ পূজা আমাদের জাতিসত্তায় মনষ্যত্বের জাগরণ, মানবকল্যাণ তথা বিশ^ কল্যাণের পূজা। বর্তমান বাস্তবতায় কল্যাণের নামে অকল্যাণ, ধর্মের নামে অধর্ম, স্বার্থপরতা, হিংসা-বিদ্বেষ, পরশ্রীকাতরতা, পঙ্কিলতা দূর করা সবচেয়ে বেশি দরকার। শুধু মুখে নয় কর্মের মাধ্যমে সত্যিকারের প্রেম, ভালোবাসা, মানবতা, ভক্তি, সম্প্রীতি বেশি জরুরি। যতই আমাদের মধ্যে দেবী ‘মা’র মাতৃভক্তির বিকাশ হবে; ততই আমরা পবিত্র হবো। উন্নতির দিকে এগিয়ে যাব। এতে নারীরা যথার্থ মর্যাদা ও সম্মান পাবেন। সমাজ সমতার ভিত্তিতে এগিয়ে যাবে। দেবীদুর্গা মানুষের চিত্ত থেকে যাবতীয় দীনতা ও কলুষতা দূরীভূত করে শুভ ও ন্যায়ের উদাত্ত আহ্বান জানান সবাইকে। মায়ের আগনের মধ্য দিয়ে আমাদের মধ্যে সম্প্রীতির বন্ধন আরো দৃঢ় হোক এবং ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হোক। বাংলাদেশসহ বিশে^র সব দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অটুট থাকুক, শুভ শক্তির জয় হোকÑ এটিই কাম্য। হ
লেখক : সাবেক শিক্ষার্থী, জবি

 


আরো সংবাদ



premium cement
দু’দিন বন্ধ থাকার পর বেনাপোল দিয়ে ফল আমদানি শুরু গল টেস্টের প্রথম দিন অস্ট্রেলিয়ার নিয়ন্ত্রণে অমুসলিম শিক্ষার্থীদের সাথে ইবি ছাত্রশিবিরের মতবিনিময় কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের কার্যালয়কে ‘পাবলিক টয়লেট’ ঘোষণা গাজা নিয়ে ট্রাম্পের বক্তব্যের বিরোধিতা চীনের চৌদ্দগ্রামে শিবির নেতা হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে সমাবেশ বাংলাদেশকে হাসিনা তার পৈত্রিক সম্পত্তিতে পরিণত করেছিল : মাওলানা শাহজাহান ১৬ বছর ইসলামী শিক্ষা-সংস্কৃতিকে কোনঠাসা করে রাখা হয়েছিল : শামসুল ইসলাম সুন্দরগঞ্জে স্কুলছাত্রের লাশ উদ্ধার, আটক ২ সাবেক মন্ত্রী তাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ মির্জাপুরে ছিনতাই হওয়া ট্রাকসহ ১২ হাজার লিটার সয়াবিন উদ্ধার

সকল