০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৩ মাঘ ১৪২৩১, ৬ শাবান ১৪৪৬
`

মিষ্টিপানির বিকল্প উৎস

-

পৃথিবী ও বায়ুমণ্ডলে পানির পরিমাণ প্রায় ৩৩৮ দশমিক ১৭ মিলিয়ন কিউবিক মাইল। তবে এর বেশির ভাগই মানুষের ব্যবহার-অযোগ্য। এর কারণ মোট পানির প্রায় ৯৭ শতাংশই লোনা। বাকি তিন শতাংশ মিষ্টিপানি। আবার মিষ্টিপানির ৯৭ শতাংশ হিমবাহ ও বরফ আকারে গ্রিনল্যান্ড, সাইবেরিয়া ও হিমালয়ে জমা আছে। শুধু তিন শতাংশ মিষ্টিপানি নদীনালা, খালবিল ও বৃষ্টিরূপে প্রকৃতিতে রয়েছে।
আমরা দৈনিন্দন জীবনে নানা কাজে মিষ্টিপানি ব্যবহার করে থাকি। এ জন্য প্রতিদিন ব্যাপক হারে ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবহার করি; যা ভূগর্ভস্থ পানির ফল্গুধারাকে নিচে নামিয়ে দিচ্ছে। ভূগর্ভস্থ পানির অতিরিক্ত উত্তোলন আমাদের এক নতুন সঙ্কটের মুখোমুখি করেছে। বাংলাদেশে প্রতি বছর ৩ মিটার করে পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে।
২০০৬-১২ সালে রাজশাহী অঞ্চলে পানির স্তর নিচে নেমে গেছে প্রায় ৭৫ ফুট। তা ছাড়া শহর অঞ্চলগুলোতে জলাশয়গুলো ভরাট করে নানা ধরনের স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে। নতুন নতুন রাস্তাঘাট নির্মাণ করা হচ্ছে। ফলে বৃষ্টির সময় পানি জমে রাস্তাঘাট তলিয়ে যাচ্ছে। এভাবে নানা কনক্রিটের স্থাপনার কারণে বৃষ্টির পানি মাটিতে পৌঁছাতে পারে না। আগে দেখা যেত বৃষ্টির পানি মাটির মাধ্যমে ভূগর্ভে চলে যেত। বর্তমানে তা না হওয়ায় পানি ভূগর্ভে পৌঁছাতে পারছে না। এতে করে ক্রমাগত ভূগর্ভের পানির স্তর নিচের দিকে নেমে যাচ্ছে। আর দিন দিন মিষ্টিপানির সঙ্কট দেখা দিচ্ছে।
দেশের দক্ষিণাঞ্চলে ধীরে ধীরে লবণাক্ত পানির পরিমাণ বাড়ছে। বিশেষত আইলার পর থেকে পিরোজপুর, বাগেরহাট, পাইকগাছা, সাতক্ষীরা অঞ্চলগুলোতে লবণাক্ততার মাত্রা বেড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে আমাদের এখন থেকেই সচেতন হওয়া প্রয়োজন। পানির অপচয় থেকে বিরত থাকা উচিত। পাশাপাশি অবিবেচকের মতো জলাশয় ভরাট করা থেকে বিরত থাকতে হবে। যে পরিমাণ পানি আমরা ভূগর্ভ থেকে উত্তোলন করি, সে পরিমাণ পানি যেন ভূগর্ভে ফেরত যায়; সে দিকে লক্ষ রাখতে হবে। সেচসাশ্রয়ী ফসল উৎপাদন করতে হবে। দেখা যায় মিষ্টিপানির বেশির ভাগ অংশই আমরা খরচ করে ফেলি সেচের উদ্দেশ্যে।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হলো মিষ্টিপানির বিকল্প উৎসের সন্ধান করা। বৃষ্টির পানি মিষ্টিপানির একটি ভালো উৎস। এর বহুমাত্রিক উপকারিতাও রয়েছে। বৃষ্টির পানি হজমশক্তি বাড়ায়, এটি অনেক রোগের জন্য অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের কাজ করে। বৃষ্টির পানি চুল সুন্দর করে। এ ছাড়া ব্যাকটেরিয়া নাশক হিসেবে কাজ করে। তাই আমাদের বেশি করে বৃষ্টির পানি ব্যবহারের দিকে নজর দেয়া উচিত।
বৃষ্টির পানি সংরক্ষণে বিভিন্ন পদ্ধতি রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি হলো বাড়ির ছাদে পাইপ সংযুক্ত করে তার মাধ্যমে বৃষ্টির পানি কোনো জলাধারে সংরক্ষণ করা। বৃষ্টির পানি ব্যবহারের আর একটি সুবিধা হলো, এর ফলে পাম্পিং খরচ অনেক কমে যায়। বিদ্যুৎ সাশ্রয় হয়। বৃষ্টির পানি বহুলাংশে আমাদের মিষ্টিপানির চাহিদা পূরণ করতে পারে। ১০০০ বর্গফুট ছাদে ১ ইঞ্চি পরিমাণ বৃষ্টিপাত হলে প্রায় ৬০০ গ্যালন পানি জমা হয়। তাই বর্তমানে পানি সঙ্কটের পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের বৃষ্টির পানির পূর্ণ সদ্ব্যবহারের প্রতি মনোযোগী হতে হবে। হ
লেখক : শিক্ষার্থী, পটুয়াখালী বিজ্ঞান
ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়


আরো সংবাদ



premium cement
৩ পল্লী উন্নয়ন অ্যাকাডেমি থেকে বাদ গেল শেখ পরিবারের নাম বইমেলায় ৮ ও ১৫ ফেব্রুয়ারি সময় পরিবর্তন হচ্ছে, থাকছে না শিশুপ্রহর রাখাইন স্টেট : ঘুমধুমে স্থলবন্দর করার চিন্তা করছে সরকার ফ্যাসিবাদ উৎখাত করেছে ছাত্ররা আর তাদের সাহস জুগিয়েছেন শিক্ষকরা মশিউর রহমানের নতুন বই ‘টেকসই সমৃদ্ধিতে আল-কুরআনের দর্শন’ পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এপ্রিলে ঢাকা সফর করতে পারেন : তৌহিদ আ’লীগের সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাড়িতে বিক্ষুব্ধ জনতার আগুন প্রবীণ সাংবাদিকদের জন্য মাসিক ভাতা আগামী বছর থেকে : মুহাম্মদ আবদুল্লাহ শেখ হাসিনার ডক্টরেট ডিগ্রি নিয়ে অনুসন্ধান করবে দুদক ছাত্রদের যৌক্তিক অযৌক্তিক দাবি-দাওয়া মার্কিন নিষেধাজ্ঞা বনাম ইরানের অগ্রযাত্রা

সকল