০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৩ মাঘ ১৪২৩১, ৬ শাবান ১৪৪৬
`

আমরা কতটা নিরাপদ

-

যেখানে উন্নয়ন, সেখানে কিছুটা অসুবিধা থাকা স্বাভাবিক। কিন্তু যখন সেই সীমা পিঠ দেয়ালে ঠেকে যাওয়া; তখন তা আর স্বস্তিদায়ক থাকে না। সেই অসুবিধার কারণ দূর না করে এর বিস্তারে নিশ্চুপ বসে থাকা হিতে বিপরীত হতে বাধ্য। এরই মধ্যে প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় তালিকাভুক্ত হয়েছে। তবে এত কিছু ছাপিয়ে সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশে হত্যা, ধর্ষণ, সড়ক দুর্ঘটনা, দুর্নীতি, খাদ্যে বিষক্রিয়ার মতো অনৈতিক ও অমানবিক অপরাধ উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে।
ছেলেধরা গুজবে দেশে অনেকে গণপিটুনির শিকার হয়ে নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া দেশে প্রকাশ্যে ছুরি-রামদা দিয়ে কুপিয়ে, রড বা হকিস্টিক দিয়ে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটতে দেখা যাচ্ছে। প্রতিটি ঘটনার নৃশংসতা ও বর্বরতা আগের ঘটনাকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে। মানবতার প্রতি এ যেন চরম উপহাস। অপরাধ বিশেজ্ঞরা বলেছেন, সামাজিক অস্থিরতা, পারিবারিক বন্ধন ছিন্ন হওয়া, অপরাধীদের ছাড় পাওয়া, মাদকাসক্ততা ও অর্থনৈতিক কারণে এসব নারকীয় ও লোমহর্ষক ঘটনা ঘটছে। আমাদের আইনি ব্যবস্থাপনায় দুর্বলতার কারণে এসব ঘটনা ঘটছে কি না, তা খতিয়ে দেখা জরুরি হয়ে পড়েছে। অন্য দিকে এসব ঘটনা যারা ঘটাচ্ছে, তাদের বেশির ভাগ বিচারের মুখোমুখি না হওয়ায় অপরাধীরা বেপরোয়া হয়ে উঠছে। পুলিশ সদর দফতরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৩ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত সারা দেশে খুনের ঘটনা ঘটেছে ১৬ হাজার ৯৭৪টি।
এ দিকে সড়কে মৃত্যুর মিছিল যেন থামছেই না। প্রতিনিয়ত ঝরছে অসংখ্য প্রাণ। বর্তমানে সড়ক দুর্ঘটনায় বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান ১৩তম। এর জন্য দায়ী আমাদের দুর্বল আইনি ব্যবস্থা। গত তিন বছরে সড়ক দুর্ঘটনায় সারা দেশে মারা গেছেন ২৫ হাজার ১২০ জন। অর্থাৎ প্রতিদিন গড়ে ২০ জন। এসব দুর্ঘটনার ৯০ ভাগই ঘটছে চালকের বেপরোয়া মনোভাব আর অতিরিক্ত গতির কারণে। হতাহত ব্যক্তিদের মধ্যে বেশির ভাগই শিশু, তরুণ ও কর্মক্ষম ব্যক্তি। এ দুই শ্রেণীকে দেশের ভবিষ্যৎ ও অর্থনীতির মূল শক্তি বিবেচনা করা হয়। সড়ক দুর্ঘটনা এবং এর প্রভাবে ক্ষতির আর্থিক পরিমাণ বছরে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা। এ ছাড়া দেশে শিশু নির্যাতন ও ধর্ষণের ঘটনাও বেড়েছে। বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরামের তথ্যানুযায়ী, গত বছরের তুলনায় চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে দেশে শিশু ধর্ষণ বেড়েছে ৪১ শতাংশ, যা আশঙ্কাজনক। চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে ধর্ষিত হয়েছে ৪৯৬টি শিশু। গত বছরের প্রথম ছয় মাসে এ সংখ্যা ছিল ৩৫১টি। দেশের মানুষ নিরাত্তার জন্য আইনের আশ্রয় নিয়ে থাকেন। কিন্তু সেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অনেক কর্মকর্তা জড়িয়ে পড়ছেন অপরাধে।
দেশে ডেঙ্গু এখনো ভয়াবহরূপে বিরাজমান। একই সাথে দেশে বেশ কিছু দিন ধরে খাদ্যে ভেজাল একটি সাধারণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলফলাদি থেকে শুরু করে নিত্যপ্রয়োজনীয় তরি-তরকারি, শাকসবজি, মাছ, গোশত সব কিছুতে মেশানো হচ্ছে ক্ষতিকর বিষাক্ত রাসায়নিক। এসবের প্রভাবে কিডনি, ফুসফুস, যকৃৎ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। কিডনিতে পাথর ও ক্যান্সারসহ মানুষ বিভিন্ন ধরনের জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে দেশের মানুষ। তাহলে আমরা কিভাবে সুস্থ থাকার
আশা করতে পারি। আর আমাদের শিশুদের ভবিষ্যৎই বা কোথায়
গিয়ে দাঁড়াবে? অথচ উন্নয়ন সূচক অব্যাহত রাখতে হলে সামগ্রিকভাবে সামঞ্জস্য থাকা অতীব জরুরি। কোনো দেশের নাগরিকদের সার্বিক নিরাপত্তার ব্যবস্থা ভঙ্গুর হলে সেই দেশে টেকসই উন্নয়ন আশা করা
যায় না। হ
লেখক : প্রকৌশলী
e-mail : [email protected]

 


আরো সংবাদ



premium cement
সাবেক খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্রের বাড়িতে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ৩ পল্লী উন্নয়ন অ্যাকাডেমি থেকে বাদ গেল শেখ পরিবারের নাম বইমেলায় ৮ ও ১৫ ফেব্রুয়ারি সময় পরিবর্তন হচ্ছে, থাকছে না শিশুপ্রহর রাখাইন স্টেট : ঘুমধুমে স্থলবন্দর করার চিন্তা করছে সরকার ফ্যাসিবাদ উৎখাত করেছে ছাত্ররা আর তাদের সাহস জুগিয়েছেন শিক্ষকরা মশিউর রহমানের নতুন বই ‘টেকসই সমৃদ্ধিতে আল-কুরআনের দর্শন’ পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এপ্রিলে ঢাকা সফর করতে পারেন : তৌহিদ আ’লীগের সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাড়িতে বিক্ষুব্ধ জনতার আগুন প্রবীণ সাংবাদিকদের জন্য মাসিক ভাতা আগামী বছর থেকে : মুহাম্মদ আবদুল্লাহ শেখ হাসিনার ডক্টরেট ডিগ্রি নিয়ে অনুসন্ধান করবে দুদক ছাত্রদের যৌক্তিক অযৌক্তিক দাবি-দাওয়া

সকল