০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৪ মাঘ ১৪৩১, ৭ শাবান ১৪৪৬
`

অনেক গণমাধ্যমকর্মীর বিরক্তি!

-

দেশের অনেক গণমাধ্যমকর্মীকে খামাখা ইসলামের প্রতি বিরক্ত প্রকাশ করতে দেখা যায়। ইসলাম আর মুসলিম শব্দ শুনলেই তাদের যেন গাত্রদাহ শুরু হয়ে যায়। তারা নিজেদের আধুনিক ভাবতে বেশ আরাম বোধ করেন! ‘স্মার্ট’ বুঝাতে এমন কসরত। মানে স্বঘোষিত স্মার্ট। অথচ দেখা যায, তাদের অনেকের নামই সহি আরবি কায়দায় রাখা। পাসপোর্টে রিলিজিয়ন অপশনে মুসলিম লিখতে কেমন লাগে তা অবশ্য জাননি! অথচ তাদের পেশাদারিত্বে খাটতি কারো দৃষ্টি এড়ায় না। গণমাধ্যমে অনুষ্ঠান পরিচালনা আর সঞ্চালনা করা দেখে স্পষ্ট বোঝা যায়, তাদের জানা শোনায় কত ঘাটতি।
এক টকশোতে একজন ‘বুদ্ধিজীবী’ বললেন, ১৯৯২ সালে সামরিক শাসক এ কাজ করেছেন। অথচ ৯২-তে ছিল নির্বাচিত সরকার। টকশো সঞ্চালক এ কথায় ভুল ধরিয়ে দেয়ার গরজ বোধ করেননি। টিভি চ্যানেলগুলোতে ঈদের সময় অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তির সাক্ষাৎকার নেয়া হয়। এসব সাক্ষাৎকারে পারিবারিক খুঁটিনাটি নানা ধরনের প্রশ্ন করতে দেখা যায়। গত রোজার ঈদে ২০১৮ সালের ‘রাতে বাক্স ভরা নির্বাচনের’ সরকারের এক মন্ত্রীকে প্রশ্ন করা হয়েছিল তার শৈশবে ঈদ কেমন ছিল। তিনি উত্তরে বলেন, আমার বাড়ি চট্টগ্রামে। সেখানে অনেক হিন্দু আছে। আমি ছোট বেলা মসজিদে শিরনি খেয়েছি। মন্দীরে গিয়ে বন্ধুদের সাথে প্রসাদও খেতাম। তখন সঞ্চালককে খুব খুশি খুশি দেখাচ্ছিল। কারণ আর কিছু নয়, মনের কথা শুনলে কার না ভালো লাগে। এ কথার পর ওই মন্ত্রীকে এ বিষয়ে আরো কথা বলার সময় দেয় হয়। এবার কোরবানির ঈদে এরকম কয়েকটি সাক্ষাৎকার দেখলাম। এক সাক্ষাৎকারে একসাথে বিশিষ্ট দুই ব্যবসায়ীকে দেখা গেল। দু’জনই বিজিএমই সাবেক সভাপতি। এর মধ্যে একজন তার পারিবারিক কথা বলতে গিয়ে বললেনÑ আমার নানা একজন কুরআনের হাফেজ ছিলেন। তিনি একটি কলেজের অধ্যক্ষও ছিলেন। প্রাসঙ্গিকভাবে তিনি নামাজের কথা তুললেন। সাথে সাথে সঞ্চালকের মুখ কালো হয়ে গেল। ওই ব্যবসায়ীকে থামিয়ে দিয়ে অন্য কথায় চলে গেলেন সঞ্চালক। এরপর আরেকটি টকশোতে বাবা-ছেলে দু’জনকে দেখা গেল। তারা দু’জনই বিশিষ্টজন। বড় মাপের ব্যবসায়ী। বাবা ছিলেন এফবিসিসিআইর সভাপতি। তাদের রয়েছে শিপিংসহ বহু ব্যবসা। এত বড় খ্যাতিমান ব্যক্তির কাছে তার শৈশবের গুরুত্বপূর্ণ একটি স্মৃতিকথা জানতে চাওয়া হয়। উত্তরে তিনি বলেন, তখনো দেশ স্বাধীন হয়নি। আমি মাত্র চট্টগ্রাম মেরিন একাডেমি থেকে পাস করে বের হয়েছি। আমার প্রথম চাকরি জাহাজে। সেখানে প্রথম অফারটি ছিল পাকিস্তানের করাচি থেকে জাহাজে আমার জেদ্দা যেতে হবে। বেতন কম। তার পরও আমার মন আনন্দে ভরে যায়। কারণ জেদ্দায় গেলে হজ করতে পারব। আমি ঠিকই তখন জাহাজে গিয়ে ওমরাহ হজ করতে সক্ষম হয়েছিলাম। এ স্মৃতি আমার হৃদয়ে স্থায়ীভাবে গেথে আছে। এ ঘটনা মনে হলেই আমার ভালো লাগে। অতিথি যখন এ কথা বলছিলেন, সাথে সাথে সঞ্চালকের মুখে বিরক্তির ভাব ফুটে ওঠে। সঞ্চালক সাথে সাথে প্রসঙ্গটির ইতি টেনে সঞ্চালক অন্য কথায় চলে যান।
ভারত থেকে এক ইসলাম ধর্ম প্রচারককে দেশ ত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে। যিনি এখন মালয়েশিয়াতে রয়েছেন। তার ব্যাপারে একটি পত্রিকা ১৯ আগস্ট প্রতিবেদন ছেপেছে। ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়Ñ ‘বিতর্কিত’ ধর্ম প্রচারক। ক’দিন আগে এইচএসসি আর আলিম পরীক্ষার ফলের খবর টিভিতে সম্প্রচার করা হয়। এক সংবাদ পাঠিকা বললেন অমুক ‘কমিল’ মাদরাসা এবার এ ফল করেছে। অথচ হবে ‘কামিল’, ‘কমিল’ নয়। সংবাদ পাঠকদের পোশাক মোটামুটি শালীনতার মধ্যে রয়েছে।
কিন্তু অনেক সংবাদ পাঠিক টিভি পর্দায় সংক্ষিপ্ত পোশাকে আসতে পছন্দ করেন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করছেন। একটি করপোরেট মিডিয়া গ্রুপের বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানে আমাকে সস্ত্রীক দাওয়াত করা হয়। সেখানে আমার স্ত্রীকে নিয়ে দু’বার গিয়েছিলাম। মিডিয়ার অনেক নারীকর্মীর পোশাক দেখে আমার স্ত্রী ওই অনুষ্ঠানে আর যেতে চান না। আমার স্ত্রী এমন মন্তব্যও করেছেন যেÑ আমাদের থেকে কি তাদের লেখাপড়া বেশি? চেহারাও কি খুব সুন্দর? তাই বলছিলাম, আমাদের দেশ মুসলিমপ্রধান হওয়ার পরও কেন অনেক গণমাধ্যমকর্মীর ইসলামের প্রতি বিরক্তি; তা ভাবলে সত্যিই অবাক হতে হয়।
এমন মানসিকতার কোনো উত্তর খুঁজে পাই না। হ

 


আরো সংবাদ



premium cement