চামড়া শিল্পে সরকারি উদ্যোগ জরুরি
- আলী ফজল মোহাম্মদ কাওছার
- ২৭ আগস্ট ২০১৯, ০০:০০
দেশের গুরুত্বপূর্ণ শিল্পের নাম চামড়া শিল্প। এর মাধ্যমে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হয়। কাঁচা ও আধা পাকা চামড়া বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী রফতানি সামগ্রীর একটি। সব সময়ই বিশ্ববাজারে এ দেশের গরু-ছাগলের চামড়ার চাহিদা রয়েছে। শতকরা ৯৫ ভাগ কাঁচা চামড়া ও চর্মজাত পণ্য, প্রধানত আধা পাকা ও পাকা চামড়া, চামড়ার তৈরী পোশাক এবং জুতা হিসেবে বিদেশে রফতানি করা হয়। বেশির ভাগ চামড়া ও চামড়াসামগ্রী রফতানি করা হয় জার্মানি, ইতালি, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস, স্পেন, রাশিয়া, ব্রাজিল, জাপান, চীন, সিঙ্গাপুর ও তাইওয়ানে। এসব রফতানির মূল্য সংযোজনের শতকরা ৮৫ ভাগ স্থানীয় এবং ১৫ ভাগ বিদেশী।
২০০৯ সালে রফতানি হয় ২৮ কোটি ৮৪ লাখ ডলার মূল্যের চামড়া। বিশ্বের চামড়া খাতে রফতানির শতকরা ২ ভাগ হচ্ছে বাংলাদেশের। চর্মজাত সামগ্রী যথাÑ জুতা, স্যান্ডেল, জ্যাকেট, হাত মোজা, ব্যাগ, মানিব্যাগ, ওয়ালেট, বেল্ট প্রভৃতি রফতানি করে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আয় করে। শতকরা ৪০ ভাগ চামড়া সরবরাহ হয় প্রতি বছর কোরবানির পশুর চামড়া থেকে। দৈনন্দিন গোশত সরবরাহে জবাই করা পশুর চামড়া ছাড়াও বিয়ে ও অন্যান্য উৎসবাদি উদযাপন থেকেও উল্লেখযোগ্য পরিমাণ চামড়া সংগৃহীত হয়।
এবারো কোরবানির বেশ কয়েক দিন আগেই কাঁচা চামড়ার দাম নির্ধারণ করে দিয়েছিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। ঢাকায় প্রতি বর্গফুট গরুর কাঁচা চামড়া ৪৫ থেকে ৫০ টাকা এবং ঢাকার বাইরে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। আর খাসির চামড়া ১৮ থেকে ২০ এবং বকরির চামড়ার দাম ১৩ থেকে ১৫ টাকা নির্ধারণ করে দেয় সরকার। তার পরও এবারের কোরবানির ঈদে ভয়াবহ রকমে চামড়ার দরপতন হয়। লাখ টাকা দামে কেনা গরুর চামড়া ৩০০ টাকায় বিক্রির খবরও পাওয়া গেছে। বিভিন্ন স্থানে সরকার নির্ধারিত দামে চামড়া বিক্রি করতে না পেরে মওসুমি ব্যবসায়ীরা চামড়া ফেলে দিতে বাধ্য হন। এ ছাড়া অনেক কোরবানি দাতা চামড়ার উপযুক্ত মূল্য না পেয়ে তা মাটিতে পুঁতে ফেলেছেন। এটি দেশের অর্থনীতিতে কিঞ্চিৎ হলেও প্রভাব ফেলবে। যেসব ব্যবসায়ী চামড়া শিল্প ধ্বংস করতে দুষ্টচক্র গড়ে তুলছেন, তাদের লাগাম ধরতে হবে সরকারের। এ শিল্পকে বাঁচাতে বাজারে কঠোর নজরদারি প্রয়োজন। মওসুমি ব্যবসায়ীদের উপযুক্ত মূল্য পাওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। তা না হলে তারা এ ব্যবসা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবেন। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে এ শিল্প। হ
লেখক : কর্মকর্তা, মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটি, সিলেট।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা