পানিতে থই থই রাজধানী
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ২৭ মে ২০২৪, ১৬:৫৪, আপডেট: ২৮ মে ২০২৪, ০২:৫৬
ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে ভোর রাত থেকে বিরতিহীনভাবে রাজধানীতে বৃষ্টি ঝরছে। একটানা বৃষ্টিপাতে পানিতে ভাসছে রাজধানী। বেশির ভাগ সড়কেই হাঁটুপানি। ফুটপাথেও পানি থই থই। কোথাও কোথাও নদীর ঢেউয়ের মতো পরিবেশ। এর মধ্য দিয়ে চলতে গিয়ে পথচারী, যাত্রী সবাইকে ভোগান্তির শিকার হতে হয়েছে। সেইসাথে তৈরি হয়েছে গণপরিবহন সঙ্কট। এই সুযোগে বেড়েছে রিকশা, সিএনজি ভাড়া।
সোমবার (২৭ মে) বৃষ্টিতে রাজধানীর মুগদা, মানিকনগর, মতিঝিল, দৈনিকবাংলা মোড়, মালিবাগ, শান্তিনগর, সায়েদাবাদ, শনির আখড়া, বাড্ডা, গ্রিনরোড, নিউমার্কেট, মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ, মিরপুর, শেওড়াপাড়া, ফার্মগেট-তেজগাঁও-সহ ঢাকার বেশিভাগ এলাকার সংযোগ সড়কসহ বিভিন্ন সড়ক ও অলিগলিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, টানা বৃষ্টির কারণে রাজারবাগ পুলিশ লাইনের সামনের সড়ক, মতিঝিল কলোনি এলাকা, টিটিপাড়া মোড়, আর কে মিশন রোড, পুরান ঢাকার বংশাল, নাজিমুদ্দিন রোড পানির নিচে তলিয়ে গেছে। জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে ধানমন্ডি, মিরপুর ১৩, হাতিরঝিলের কিছু অংশে। আগারগাঁও থেকে জাহাঙ্গীর গেট যেতে নতুন রাস্তায়, খামারবাড়ি থেকে ফার্মগেট, ফার্মগেট-তেজগাঁও ট্রাকস্ট্যান্ডসংলগ্ন এলাকা, কাওরানবাজার, মোহাম্মদপুরের কিছু অংশ, মেরুল বাড্ডা, ডিআইটি প্রজেক্ট এলাকা, গুলশান লেকপাড় এলাকার সংযোগ সড়কের কয়েকটি স্থানে বৃষ্টির পানি জমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।
একদিকে বৃষ্টি, অন্যদিকে জলাবদ্ধতার কারণে রাজধানীর সব সড়কেই সব ধরনের যানবাহনসহ গণপরিবহনের সংখ্যা অনেক কম। বিড়ম্বনায় পড়েছেন রাজধানীতে কাজে বের হওয়া সাধারণ মানুষজন। এছাড়া অনেক এলাকায় জলাবদ্ধতার কারণে ভ্যান দিয়ে সড়ক পারাপার হতে দেখা গেছে রাজধানীবাসীকে।
যাত্রাবাড়ী থেকে রাজধানী মার্কেট হয়ে ইত্তেফাক মোড় এলাকায় আসা নূর মোহাম্মদ নামের একজন বলেন, যে রাস্তা দিয়ে এসেছি তার বেশিরভাগ সড়কেই জলাবদ্ধতা দেখেছি। পথে পথে মানুষের ভোগান্তি। পানির কারণে যানবাহন যাওয়ার পর ঢেউ আঁছড়ে পড়ছে সড়কে, ফুটপাতে। বাস না পেয়ে দ্বিগুণ ভাড়ায় রিকশায় যাত্রায়াত করতে হয়েছে। যেহেতু গণমাধ্যমে চাকরি করি, তাই বৃষ্টি জলাবদ্ধতা হলেও অফিসের কাজে বের হতে হয়।
বাসাবো, মুগদা, মানিকনগর এলাকাস্থ কয়েকটি গলিতে গিয়ে দেখা গেছে, বৃষ্টির পানিতে রাস্তায় হাঁটুপানি। রাস্তার পাশে অনেক দোকান ও বাসাবাড়িতে পানি প্রবেশ করেছে।
স্থানীয়রা জানান, বৃষ্টি হলেই ওই রাস্তায় জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। এ সময় সুবিধাভোগী কিছু রিকশাচালক সেখানে অবস্থান করে এবং পানি পারাপারের জন্য জনপ্রতি ২০ থেকে ৩০ টাকা নেয়।
একই অবস্থা রাজধানীর গ্রিন রোড এলাকাতেও। সেখানে সরেজমিন দেখা গেছে, পান্থপথ মোড় থেকে ফার্মগেট আসার রাস্তা পুরোই পানিতে ডুবে গেছে। এ ছাড়া এইচআর হোম ও এশিয়া প্যাসিফিক ইউনিভার্সিটির সামনে পানি থৈ থৈ করছে। সেখানে কোমর পরিমাণ পানি। তাই সিএনজি অটোরিকশা, প্রাইভেট কার, মাইক্রো বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে রিকশায় চড়ে লোকজনকে পানি পাড়ি দিতে দেখা গেছে।
মুগদা এলাকার অধিবাসী মুসা আল আশ’য়ারী বলেন, বৃষ্টি শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যেই মুগদা এলাকার প্রায় স্থানে পানি জমে যায়। ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা হওয়া সত্ত্বেও প্রায় রাস্তা ভাঙা, জরাজীর্ণ। এককথায় চলাচল অনুপযোগী। তবু বছরের বেশিরভাগ সময় একই রাস্তায় চলে বার বার খোঁড়াখুঁড়ি। হাঁটতে গিয়ে বা যাত্রীসহ রিকশা গর্তে পড়ে আহত হওয়ার ঘটনাও এ এলাকায় অনেক বেশি। পথে পথে মানুষের ভোগান্তির কমতি নেই। জলাবদ্ধতার কারণে ৪০ টাকার রিকশা ভাড়া ১০০ টাকা হয়ে যায়। তিনগুণ ভাড়া দিয়েও পানিতে ভিজতে হয়।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা