ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবি : ঢাকায় পৌঁছেছে ৮ বাংলাদেশীর লাশ
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ০২ মে ২০২৪, ১৬:৩৪
ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপ যাওয়ার পথে নৌকাডুবিতে মারা যাওয়া আট বাংলাদেশীর লাশ দেশে পৌঁছেছে।
বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় লিবিয়া থেকে বিমানযোগে লাশগুলো হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়।
তাদের মধ্যে পাঁচজন মাদারীপুরের ও তিনজন গোপালগঞ্জের। তারা হলেন মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার শেনদিয়া গ্রামের সজল বৈরাগী, কদমবাড়ি উত্তরপাড়া গ্রামের পরিতোষ বিশ্বাসের ছেলে নয়ন বিশ্বাস, সরমঙ্গল গ্রামের মামুন শেখ, তেলিকান্দি গ্রামের কাজী মিজানুরের ছেলে কাজী সজীব, কেশরদিয়া গ্রামের কায়সার এবং গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার বড়দিয়া গ্রামের দাদনের ছেলে রিফাত, ফতেহপট্টি গ্রামের রাসেল ও গয়লাকান্দি গ্রামের মো: পান্নু শেখের ছেলে ইমরুল কায়েস আপন।
এ ঘটনায় একটি মামলাও দায়ের করা হয়েছে।
ব্র্যাকের সহযোগী পরিচালক (মাইগ্রেশন ও ইয়ুথ প্লাটফর্ম) শরিফুল হাসান জানান, ওই নৌকায় থাকা আরো ১১ বাংলাদেশী দেশে ফিরেছেন। তাদের মধ্যে মাদারীপুর রাজৈর উপজেলার দুজন ব্র্যাকের সাথে যোগাযোগ করেন। তাদের অভিযোগ, ওই আট বাংলাদেশীকে হত্যা করা হয়েছে।
এ ঘটনায় মামলা হওয়ায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তদন্তে বিস্তারিত উঠে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন শরিফুল হাসান।
এর আগে, গত ১৪ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ১১টায় লিবিয়ার জোয়ারা উপকূল থেকে নৌকায় করে একটি অভিবাসী দল ইউরোপের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে। ভোর সাড়ে ৪টার দিকে নৌকাটি তিউনিসীয় উপকূলের কাছাকাছি ডুবে যায়।
নৌকাটিতে মোট ৫৩ জনের মধ্যে ৫২ জন যাত্রী এবং একজন চালক ছিলেন।
দুর্ঘটনার পর তাদের মধ্যে ৪৪ জনকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এদের মধ্যে ২৭ জন বাংলাদেশী নাগরিক। বাকিদের মধ্যে পাকিস্তানের আটজন, সিরিয়ার পাঁচজন, মিসরের তিনজন ও নৌকা চালক ছিলেন।
ওই ঘটনায় নৌকায় থাকা নয়জন যাত্রী মারা যান। তাদের মধ্যে আটজন বাংলাদেশী ছিলেন। অপর ব্যক্তি পাকিস্তানের নাগরিক।
পুলিশ জানিয়েছে, এ ঘটনায় গত ১৯ এপ্রিল ঢাকার বিমানবন্দর থানায় একটি মামলা করেন সজল বৈরাগীর বাবা সুনীল বৈরাগী। মামলা দায়ের করার দু’দিন পর দুই আসামিকে গ্রেফতার করা হয়।
মামলার এজাহারে সুনীল বৈরাগী অভিযোগ করেন, তার ছেলে সজল বৈরাগী উন্নত জীবনের আশায় ইতালি যেতে চেয়েছিলেন। সজলের পূর্বপরিচিত যুবরাজ কাজী ও লিবিয়ায় অবস্থানরত মোশারফ কাজী ১৪ লাখ টাকার বিনিময়ে তাকে বৈধ পথে ইতালি পাঠানোর প্রস্তাব দেন। প্রস্তাবে রাজি হয়ে গত ১৭ নভেম্বর যুবরাজ কাজীর গোপালগঞ্জের বাসায় আড়াই লাখ টাকা এবং পাসপোর্ট দেন সজল। ৩০ ডিসেম্বর তাকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নেয়া হয়।
বিমানবন্দরে যাওয়ার পথে সজলের কাছ থেকে আরো পাঁচ লাখ টাকা নেন যুবরাজ কাজী। ৩১ ডিসেম্বর ভোর ৬টায় দুবাই রওনা হন তিনি। এরপর ৮ জানুয়ারি গোপালগঞ্জের বাসায় গিয়ে যুবরাজ কাজীর হাতে আরো সাড়ে ছয় লাখ টাকা দিয়ে আসেন সজলের বাবা সুনীল বৈরাগী। কিন্তু এরপর থেকে ছেলের সাথে যোগাযোগ করতে পারেননি সুনীল।
পরে গণমাধ্যমে তিনি জানতে পারেন, ১৪ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাত সাড়ে ১১টা থেকে ভোর ৪টার মধ্যে লিবিয়া থেকে ইতালি অভিমুখে যাত্রা করা একটি ট্রলারে যে আট বাংলাদেশীর মৃত্যু হয়েছে তার মধ্যে সজল একজন।
তিনি আরো অভিযোগ করেন, উন্নত জীবনের প্রলোভন দেখিয়ে ২০ জনের একটি চক্র মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে অবৈধভাবে বাংলাদেশ থেকে বিদেশে পাচার করে থাকে। নিশ্চিত মৃত্যু জেনেও উত্তাল সাগরে ছোট নৌকায় তুলে দেয় তারা।
সূত্র : ইউএনবি
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা