২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

বিমানে একের পর এক অঘটনের কারণ গাফিলতি নাকি অদক্ষতা

বিমানে একের পর এক অঘটনের কারণ গাফিলতি নাকি অদক্ষতা - ছবি : বিবিসি

বাংলাদেশের শাহজালাল বিমানবন্দরের হ্যাঙ্গারে গত কয়েক মাসে একাধিকবার বিমানের সাথে বিমানে ধাক্কা লেগে ডানা ভাঙার ঘটনা ঘটেছে। বিমান দামি একটি বাহন হওয়ায় এটি রক্ষণাবেক্ষণ খুব সাবধানতার সাথে করা হয়ে থাকে। এর ফলে হ্যাঙ্গারে ধাক্কা লেগে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার মতো ঘটনা সারা বিশ্বে খুব বিরল।

কিন্তু বাংলাদেশে গত তিন মাসের মধ্যে দু’বার হ্যাঙ্গারে একটি বিমানের সাথে আরেকটি বিমানের ধাক্কা লাগার ঘটনা ঘটল। সর্বশেষ ঘটনাটি ঘটে গত রোববার।

সিঙ্গাপুর থেকে বিমানের ৭৮৭ ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজটি রোববার রাতে ঢাকায় আসে। যাত্রী নামিয়ে রাত ৯টার দিকে যখন হ্যাঙ্গারে নেয়া হচ্ছিল, তখন হ্যাঙ্গারে থাকা বোয়িং-৭৩৭ উড়োজাহাজের ডানায় ধাক্কা লাগে। ফলে দু’টি উড়োজাহাজই ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

৭৮৭ উড়োজাহাজের ডান পাশের ডানা আর ৭৩৭ উড়োজাহাজের বাম পাশের ডানা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

অনেকটা একই রকম ঘটনা ঘটেছিল গত ১০ই এপ্রিল। ওই দিনের দুর্ঘটনায়ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল বোয়িং-৭৩৭। এ দিনও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বোয়িং-৭৩৭ হ্যাঙ্গারে নেয়ার সময় সেখানে আগে থেকে থাকা বোয়িং-৭৭৭-এ ধাক্কা লাগে। ফলে বোয়িং-৭৩৭-এর সামনের অংশ আর বোয়িং-৭৭৭ পেছনের অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

এর ফলে, ৭৩৭ উড়োজাহাজের সামনে ওয়েদার রাডার আর ৭৩৭ উড়োজাহাজের ভার্টিক্যাল স্ট্যাবিলাইজার ভেঙে যায়।

এর আগে পহেলা ফেব্রুয়ারি বিমান বাংলাদেশের ড্যাশ-৮ কিউ-৪০০ উড়োজাহাজ আকাশতরীর ফ্লাইটে ওভার পাওয়ার ব্যবহার করেন পাইলট। ফলে আকাশতরীর দু’টি ইঞ্জিন ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

এছাড়া গত ৪ জুন দাঁড়িয়ে থাকা একটি বোয়িং বিমানে ধাক্কা দেয় ইউএস বাংলার এয়ারলাইন্সের একটি গ্রাউন্ড সার্পোট ইকুইপমেন্ট (জিএসই)। সেটাকে পরে মেরামত করতে হয়।

১৬ জুন ৭৮৭ ড্রিমলাইনার যাত্রী নামানোর পর সেটি থেকে বোর্ডিং ব্রিজ না খুলেই পার্কিংয়ের নেয়ার জন্য ধাক্কা দিতে শুরু করে রক্ষণাবেক্ষণ কর্মীরা।

ফেব্রুয়ারিতে মালয়েশিয়া থেকে বাংলাদেশে ফেরার সময় বোয়িং-৭৩৭-এর উইন্ডশিল্ডে ফাটল বা ক্র্যাক দেখতে পান পাইলট।

তিন মাসের মধ্যে দু’বার হ্যাঙ্গারে বিমানের ধাক্কা লেগে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পেছনে বিমান কর্মীদের গাফিলতি ও অবহেলা মূল কারণ হিসেবে দেখতে পেয়েছে বিমান কর্তৃপক্ষ।

বিমান বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক যাহিদ হোসেন জানান, ‘আমরা একটা তদন্ত কমিটি গঠন করেছিলাম। তাদের রিপোর্ট আমরা পেয়েছি, এতে দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের গাফিলতি ছিল।’

তিনি জানান, প্রথম ঘটনাতেও তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর চারজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়, যাদের মধ্যে প্রধান প্রকৌশলীও রয়েছে। রোববারের ঘটনাতেও তিনজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

সূত্র : বিবিসি


আরো সংবাদ



premium cement