রামপুরায় নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৪:১৩, আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৪:১৪
রাজধানীর রামপুরায় আবারো নিরাপদ সড়কের দাবিতে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে রামপুরা ব্রিজের ওপর কিছু শিক্ষার্থী অবস্থান নিয়ে এ কর্মসূচি পালন করেন। এসময় নিরাপদ সড়কের দাবিতে লেখা বিভিন্ন ধরনের পোস্টার প্রদর্শন করেন তারা।
রামপুরা এলাকায় শিক্ষার্থীদের কর্মসূচির সমন্বয়কারী খিলগাঁও মডেল কলেজের শিক্ষার্থী সোহাগী সামিয়া বলেন, ‘নিরাপদ সড়কের দাবিতে আমরা এর আগে ১১ দফা দাবি দিয়েছিলাম তার কোনটাই বাস্তবায়ন হয়নি। আজকে আমাদের এই কর্মসূচির মাধ্যমে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের যে শিক্ষার্থী মারা গেছে সেটারও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমরা পরিকল্পনা নিয়েছি শুধু রামপুরাতেই কর্মসূচি না করে ঢাকা শহরের বিভিন্ন থানায় থানায় নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলন কর্মসূচি পালন করবো। সেক্ষেত্রে আগামী শুক্রবার আবারো মধ্য বাড্ডা এলাকায় এই ধরনের কর্মসূচি পালন করবো আমরা।’
এদিকে, বিক্ষোভে অবস্থান নেয়া সরকারি বাংলা কলেজের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলন চলমান রয়েছে। সারা দেশে বিভিন্ন সময় কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। তারপরেও কোনভাবে সড়কে মৃত্যুর মিছিল কমছে না। যার ফলে আমাদের কর্মসূচি চলমান রয়েছে। আজ আমরা নিরাপদ সড়কের দাবিতে বিভিন্ন পোস্টার লিখে সচেতন করার চেষ্টা করেছি। আমাদের দাবিগুলো তুলে ধরেছি।’
নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আগের ১১ দফা দাবি
১. সড়কে নির্মম কাঠামোগত হত্যার শিকার নাঈম ও মাঈনউদ্দিনের হত্যার বিচার করতে হবে। তাঁদের পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। গুলিস্তান ও রামপুরা ব্রীজ সংলগ্ন এলাকায় পথচারী পারাপারের জন্য ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ করতে হবে।
২. সারা দেশে সকল গণপরিবহনে শিক্ষার্থীদের হাফ পাস সরকারি প্রজ্ঞাপন দিয়ে নিশ্চিত করতে হবে। হাফ পাসের জন্য কোনো সময় বা দিন নির্ধারণ করে দেওয়া যাবে না। বর্ধিত বাস ভাড়া প্রত্যাহার করতে হবে। সকল রুটে বিআরটিসির বাসের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে।
৩. গণপরিবহনে ছাত্র-ছাত্রী এবং নারীদের অবাধ যাত্রা ও সৌজন্যমূলক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
৪. ফিটনেস ও লাইসেন্সবিহীন গাড়ি এবং লাইসেন্সবিহীন চালককে নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। গাড়ি ও ড্রাইভিং লাইসেন্স নিয়ে বিআরটিএর দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।
৫. সকল রাস্তায় ট্রাফিক লাইট, জেব্রা ক্রসিং নিশ্চিত করাসহ জনবহুল রাস্তায় ট্রাফিক পুলিশের সংখ্যা বাড়াতে হবে। ট্রাফিক পুলিশের ঘুষ দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।
৬. বাসগুলোর মধ্যে বেপরোয়া প্রতিযোগিতা বন্ধে এক রুটে এক বাস এবং দৈনিক আয় সকল পরিবহন মালিকের মধ্যে তাঁদের অংশ অনুয়ায়ী সমানভাবে বণ্টন করার নিয়ম চালু করতে হবে।
৭. শ্রমিকদের নিয়োগপত্র-পরিচয়পত্র নিশ্চিত করতে হবে। চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করতে হবে। চুক্তিভিত্তিতে বাস দেওয়ার বদলে টিকেট ও কাউন্টারের ভিত্তিতে গোটা পরিবহন ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে হবে। শ্রমিকদের জন্য বিশ্রামাগার ও টয়লেটের ব্যবস্থা করতে হবে।
৮. গাড়ি চালকের কর্মঘণ্টা একনাগাড়ে ৬ ঘণ্টার বেশি হওয়া যাবে না। প্রতিটি বাসে ২ জন চালক ও ২ জন সহকারী রাখতে হবে। পর্যাপ্ত বাস টার্মিনাল নির্মাণ করতে হবে। পরিবহন শ্রমিকদের যথাযথ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।
৯. যাত্রী-পরিবহন শ্রমিক ও সরকারের প্রতিনিধিদের মতামত নিয়ে সড়ক পরিবহন আইন সংস্কার করতে হবে এবং এর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে।
১০. ট্রাক, ময়লার গাড়িসহ অন্যান্য ভারী যানবাহন চলাচলের জন্য রাত ১২টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত সময় নির্ধারিত করে দিতে হবে।
১১. মাদকাসক্তি নিরসনে গোটা সমাজ জুড়ে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। চালক-সহকারীদের জন্য নিয়মিত ডোপ টেস্টের ও কাউন্সিলিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা